সিলেট থেকে : জঙ্গি আতঙ্ককে সঙ্গী করে ৯ ঘণ্টার যাত্রা শেষে সিলেট বিমানবন্দরে অবতরণ করলো যুক্তরাজ্যের লন্ডন থেকে ছেড়ে আসা বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইট।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বোয়িং-৭৭৭ হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে বাংলাদেশের সিলেটের উদ্দেশে যাত্রা করে লন্ডনের স্থানীয় সময় বুধবার সন্ধ্যা ৬টা ৫৬ মিনিটে।
এক ঘণ্টা পর ফ্লাইটটি যখন জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট অতিক্রম করছিল, তখন লন্ডনের এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল থেকে বিজি-০২২ ফ্লাইটের পাইলটকে জানানো হয়: বিমানে জঙ্গি ও বোমা থাকতে পারে।
এরপরই শুরু হয় পাইলট এবং ক্রুদের স্নায়ুর সঙ্গে যুদ্ধ। জরুরি সংবাদটি পাওয়ার পর ফার্স্ট অফিসার আরিফের সঙ্গে আলোচনা করে কেবিন ক্রু চিফ পার্সার ডলিকে বিষয়টি অবগত করেন ফ্লাইট ক্যাপ্টেন ইসমাইল।
দুই পাইলটের নির্দেশনায় ডলি তার ক্রুদের নির্দেশ দেন ফ্লাইটের সকল যাত্রীকে নীরবে নিবিড় পর্যবেক্ষণ করতে। এর মধ্যে পাইলট ক্যাপ্টেন ইসমাইল এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের মাধ্যমে বিমানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিষয়টি অবগত করেন।
একদিকে ঠাণ্ডা মাথায় পাইলটরা দেশের দিকে এগোতে থাকেন, অন্যদিকে কেবিন ক্রুরা অব্যাহত রাখেন তাদের পর্যবেক্ষণ। সিদ্ধান্ত হয় ১০ ঘণ্টার ফ্লাইটটিকে সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ না করিয়ে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করানো হবে। পরে সিদ্ধান্ত পাল্টে সিলেটেই যায় বিজি-০২২।
জরুরি বার্তা পাঠিয়ে ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবেলায় সব ধরণের প্রস্তুতি রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। অবশেষে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা ২৫ মিনিটে ফ্লাইটটি সিলেটে অবতরণ করে।
তার আগেই সেখানে অবস্থান নেয় র্যাব-পুলিশসহ আইন শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী। প্লেনটি অবতরণের পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ফ্লাইটটিকে ঘিরে ফেলে। যাত্রীদের নামিয়ে র্যাবের ডগ স্কোয়াড দিয়ে তল্লাশি চালানো হয় এয়ারক্রাফটের ভেতরে-বাইরে।
তবে, সন্দেহভাজন কোনো কিছু পাওয়া না যাওয়ায় সিলেট থেকে দুপুর ১টা ৫০ মিনিটে ছেড়ে ২টা ৫ মিনিটে বিমানটি ঢাকায় অবতরণ করে।
সিলেটে বাংলাদেশ বিমানের স্টেশন ম্যানেজার জিল্লুর রহমানের গণমাধ্যমকে জানান, উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য আমরা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে প্রস্তুত ছিলাম। ঢাকায় বিমান সূত্র জানায়, বোয়িং ৭৭৭ ফ্লাইটটি দুপুর ২টা ৫ মিনিটে ঢাকায় পৌঁছেছে।
এমটিনিউজ/এসএস