সিলেট থেকে : অবুঝ দুই সন্তান ফেলে উধাও হয়ে গেছেন মা-বাবা। প্রায় মাসখানেক আগে বাবা উধাও হওয়ার পর মাও চলে গেছেন এক সপ্তাহ আগে। আর অবুঝ দুই সন্তান সামিয়া (৫) ও হানিফ (৪) পেটের দায়ে কদিন ভিক্ষা করার পর এবার আশ্রয় মিলেছে বিয়ানীবাজার থানা পুলিশের কাছে। উপজেলার কুড়ারবাজার ইউনিয়নের আরিজখাঁ টিলায় এ ঘটনা ঘটেছে।
গতকাল তাদের উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন স্থানীয় সমাজসেবা কর্মকর্তা বশিরুল ইসলাম। স্থানীয়রা জানান, দুই অবুঝ সন্তানের পিতা অলিউর রহমান (৩৫) মোট ৬টি বিয়ে করেছে। তন্মধ্যে সামিয়া ও হানিফের মা রিনা বেগম (২৭) তার প্রথম স্ত্রী। ওই স্ত্রীর চেহারা ভালো না, এ অজুহাতে একের পর এক বিয়ে করেছে অলিউর। তবে রিনা বেগম ছাড়া আর কোনো স্ত্রীকে সে বাড়ি আনতে পারেনি।
এ নিয়ে ১ম স্ত্রীর সঙ্গে অলিউর নিয়মিত ঝগড়া করতো। প্রায় মাসখানেক আগে অলিউর রিনাকে বেধড়ক মারধর করে উধাও হয়ে যায়। অভাবের সংসারে তাই সামিয়া-হানিফের ভরণপোষণ দেয়া কঠিন হয়ে পড়ে মায়ের পক্ষে। কোনো উপায়ান্তর না দেখে সপ্তাহখানেক আগে মাও চলে যান অজানার উদ্দেশ্যে। এরপর অলিউরের ভাই-বোনেরা মিলে অবুঝ দুই সন্তানকে ভিক্ষাবৃত্তিতে লাগিয়ে দেন। রিনার বাবার বাড়ি পার্শ্ববর্তী জকিগঞ্জ উপজেলার বীরশ্রী গ্রামে। সেখানেও রিনাকে পাওয়া যায়নি বলে পুলিশ জানায়।
পুলিশ হেফাজতে থাকাবস্থায় সামিয়া জানায়, তার বাবা-মাকে অনেক মারতেন। ঘরে খাবার ফুরালে বাবা তা কিনে আনতেন না। বাবা চলে যাওয়ার পর দাদি, চাচা ও ফুফুরা মিলে আমাদের ভিক্ষায় লাগিয়ে দেন। সে জানায়, আমরা রান্না করতে পারতাম না। তাই ভিক্ষার টাকা দিয়ে খাবার কিনে খেয়েছি।
বিয়ানীবাজার উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মো. বশিরুল ইসলাম জানান, দুপুরের দিকে লোক মারফত খবর পেয়ে পুলিশ নিয়ে গিয়ে দুজনকে উদ্ধার করেছি। আত্মীয়স্বজন কেউ তাদের না নিলে কোনো এতিমখানায় পাঠিয়ে দেয়া হবে। বিয়ানীবাজার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. জুবের আহমদ বলেন, আপাতত ওরা দুজন পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। -এমজমিন
১৯ মার্চ, ২০১৬/এমটি নিউজ২৪/এসবি/এসএস