ঠাকুরগাঁও : ইচ্ছে ছিল বিয়ে করে ঘর বাঁধার। এ জন্য প্রেমিক যুগল বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু প্রেমিকের আগের বউ এ বিয়ে মেনে নিতে নারাজ। এ জন্য দুজনে একসঙ্গে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন।
আত্মহত্যার আগে একটি চিরকুট লিখে যান প্রেমিকা আঁখি। চিরকুটে লিখেছেন-
‘এ সমাজের মানুষ আমাদের ভালোবাসার স্বীকৃতি দিল না। ইচ্ছা ছিল দু’জনে সুখের ঘর বাঁধবো। কিন্তু পরিবারের লোকজন আমার ভালোবাসার মানুষটিকে মেনে নিতে পারলো না। তাই দুজনেই সিদ্ধান্ত নিয়েছি এ জীবনে দুজনের মিল না হলেও যেন পরজীবনে মিলন হয়। তাই আমরা আত্মহত্যার পথ বেছে নিলাম। আমাদের এ মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়। মৃত্যুর পরে আমাদের দুজনের কবর যেন এক সঙ্গেই দেয়া হয়। এটাই সবার কাছে অনুরোধ’।
শনিবার রাতে ঠাকুরগাঁও পৌর এলাকার হঠাৎপাড়া মহল্লায় প্রেমিক যুগল বিষপান করে আত্মহত্যা করেন। তারা হলেন পৌর এলাকার আঁকচাডাঙ্গী এলাকার রশিদুল আলমের মেয়ে আঁখি (১৮) ও প্রেমিক সদর উপজেলা নারগুন কহরপাড়া আকিম উদ্দিনের ছেলে নুর নবী আকাশ (২৩)।
জানা গেছে, সদর উপজেলা নারগুন কহরপাড়া এলাকার নুর নবী আকাশ দুই বছর আগে পৌর এলাকার হঠাৎপাড়া মহল্লায় বিয়ে করেন। শ্বশুরবাড়ি নিয়মিত আসা যাওয়ার সুযোগে আকচাডাঙ্গী এলাকার আঁখির সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে তার।
পরে নুর নবী আকাশ প্রেমিকা আঁখিকে বিয়ের জন্য প্রস্তাব দেন। আঁখি প্রস্তাবে রাজি হলে তারা বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন।
গতকাল শনিবার রাতে প্রেমিক যুগল একসঙ্গে মিলিত হয়ে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু নুর নবীর আগের বউ এ বিয়ে মেনে নিতে নারাজ। এ কারণে তারা আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেন। এ সময় আঁখি একটি চিরকুটে আত্মহত্যার কারণ সবার উদ্দেশ্যে লিখে যান।
স্থানীয়রা জানান, শনিবার নুর নবীর শ্বশুরবাড়ি হঠাৎপাড়ায় নুর নবীর বউকে বিয়ের কথা বললে রাজি হননি তিনি। পরে তারা সেখানে বিষপান করেন।
লোকজন তাৎক্ষণিকভাবে তাদের উদ্ধার করে ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আঁখিকে মৃত ঘোষণা করেন। নুর নবী আকাশকে রংপুরে পাঠানো হলে পথিমধ্যে তিনিও মারা যান।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সদর থানার এসআই আমজাদ হোসেন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে দুজনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। পারিবারিকভাবে বিয়ের প্রস্তাব আঁখি ও নুর নবী আকাশের পরিবার মেনে না নেয়ায় আত্মহত্যা করেছে তারা বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু (ইউডি) মামলা হয়েছে বলে জানান তিনি।
২৫ সেপ্টেম্বর,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/প্রতিনিধি/এমআর/এসএম