মোঃ রাসেদুজ্জামান সাজু, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি: দুই বেলা দু মুঠো ভাত খেয়ে জীবন বাচানোর তাগিদে অনেকে অনেক ধরনের পেশার সাথে জড়িত। তেমনি একজনের সাথে দেখা হয়েছে। যিনি ৪৮ বছর ধরে শিলপাটায় ধার বা নকশার কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেছেন।
মোঃ আবু বক্কর ছিদ্দিক । বয়স প্রায় সত্তরের কাছাকাছি । এ বয়সেও প্রতিদিনই তিনি জীবন ও জীবিকার তাগিদে ছুটে বেড়ান জেলার বিভিন্ন উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজার ও পাড়া মহল্লাতে, গ্রামে গ্রামে ঘুরে ঘুরে শিল-পাটা মেরামত বা ধার করানো তার কাজ।
এবং বিভিন্ন প্রকার নকশা আঁকার কাজ করেন। আবু বক্কর ছিদ্দিক ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার গড়েয়ার ইউনিয়নের চকলদি গ্রামে তার বাড়ি।
তথ্য প্রযুক্তির এ যুগেও নিত্য প্রয়োজনীয় শিল-পাটার গুরুত্ব কমেনি উল্লেখ করে কারিগর আবু বক্কর ছিদ্দিক বলেন, মরিচ, হলুদ, পেঁয়াজ ও রসুনসহ বিভিন্ন প্রকার মসলা প্রস্তুতের জন্য প্রতিদিনই গৃহকর্তাদের শিল-পাটা ব্যবহার করতে হয়। তবে আধুনিক যন্ত্রপাতি আবিষ্কারের ফলে শিল-পাটার চাহিদা কিছুটা কমেছে বলে তিনি জানান।
তার সাথে কথা বলে জানা গেছে, এ পেশার সঙ্গে তিনি জড়িয়ে আছেন প্রায় ৪৮ বছর ধরে। ছোটবেলা তার পিতা মারা যান। শিশুকালেই সংসারের হাল ধরতে হয় তাকে। এখন তার ২ ছেলে ২মেয়ে ও স্ত্রী ।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজলোর হাজী পাড়ায় কথা হয় তার সঙ্গে। তিনি জানান, হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান হওয়ায় তার বয়স যখন ১৮, তখন থেকেই এ পেশার মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ শুরু করেন তিনি। একই গ্রামের শিল-পাটার কারিগরের কাছে তিনি এ কাজের শিক্ষা গ্রহণ করেন। তিনি শিল-পাটা মেরামতের পাশাপাশি তাতে বিভিন্ন প্রবাদ কথা ও নকশা আঁকার কাজও করে থাকেন। সরকারি বা কোন ধনী ব্যাক্তিবর্গের সাহায্য পেলে সে তার ব্যবসার প্রসার করতে পারবে বলে আশা করেন তিনি।
এ বিষয়ে হাজীপাড়ার শাহীনুর রহমান মাসুম বলেন, আমরা যখন ছোট তখন থেকেই এই পেশায় ছিদ্দিক চাচা কে দেখে আসছি। তিনি অত্যন্ত পরিশ্রম করে আসছে অথচ তার পারিশ্রমিক খুব কম।
এ কাজ করে দৈনিক সব মিলিয়ে ২৫০ টাকা থেকে ৩৫০ টাকার মত আয় হয়। এতে তার ২ ছেলে ও ২ মেয়ে নিয়ে কোনো মতে সংসার চলাচ্ছেন ।
১০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/প্রতিনিধি/এইচএস/কেএস