ঠাকুরগাঁও : বাগান থেকে ফুল তোলার অপমান সহ্য করতে না পারায় আত্মহত্যা করেছে স্কুলছাত্রী আঁখি। ভাষা শহীদদের ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে বাড়ির পাশের বাগান থেকে ফুল ছিঁড়েছিল আঁখি। সেই অপরাধে গালিগালাজ করে বাগানমালিক। সেই অপমান সহ্য করতে না পেরে অবুঝ স্কুলছাত্রী আঁখি অভিমানে আত্মহত্যা করে।
রোববার রাত একটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। আঁখি উপজেলার শিবগঞ্জ মালিগাঁও এলাকার ভগদগাজি স্কুলের ৭ম শ্রেণির ছাত্রী। সে সদর উপজেলার শিবগঞ্জ মালিগাঁও এলাকার কাবুলের মেয়ে।
২১ শে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। আঁখি সকালেই ঘুম থেকে উঠে শহীদ মিনারে ফুল দিতে যাবে। শহর অনেক দূরে ফুল কেনা দুস্কর। কিন্তু শহীদ মিনারে ফুল দিতেই হবে। গ্রাম থেকে শহরের দূরত্ব প্রায় ২০ কিলোমিটার। গ্রামের কোথাও ফুলের দোকানও নেই।
তাই আঁখিসহ চার বান্ধবী শহীদ মিনারে ফুল সংগ্রহের জন্য পাশের বাড়ির নাসিরুল ইসলামের বাগানে ফুল তুলতে যায়। এ ঘটনা বাগানমালিকের স্ত্রী দেখে ফেলে। তাদের সঙ্গে অনেক রাগারাগি করার কারণে আঁখিসহ ৪ বান্ধবী চলে আসে। কিছুক্ষণ পর বাগানমালিক নাসিরুল ইসলাম আঁখির বাসায় গিয়ে তাকে আরো গালিগালাজ শুরু করে।
এরপর রাতে অভিমানে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করে আঁখি। আর কোনোদিন শহীদ মিনারে ভাষা শহীদদের ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাবে না আঁখি। তার আত্মহত্যায় পরিবার ও এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
পারিবারিক ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানাতে ফুল তোলার অপরাধে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করে আঁখি। পরিবারের লোকজন তার সারা শব্দ না পেয়ে দরজা ভেঙে আঁখির ঝুলন্ত লাশ দেখতে পায়। পরে স্থানীয় লোকজন ঠাকুরগাঁও সদর থানা পুলিশকে খবর দিলে তার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়।
আঁখির বাবা কাবুল জানান, মেয়েটি কয়েকটি ফুল তুলেছিল। এ জন্য তাকে এত গালিগালাজ করতে হবে। ফুলের জন্য আঁখি আমাদের ছেড়ে চিরতরে চলে গেল।
বাগানমালিক নাসিরুল ইসলাম জানান, একটি বাগান করতে অনেক খরচ লাগে। মেয়েগুলো না জানিয়ে ফুল তুলেছিল। তাই একটু বকাবকি করেছি। এ কারণে আত্মহত্যা করতে পারে না।
ঠাকুরগাঁও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) আব্দুল মান্নান জানান, পুলিশ লাশ উদ্ধার করেছে। তার আত্মহত্যার কারণ পুলিশ জানতে পারেনি। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি।
২১ ফেব্রুয়ারি,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/প্রতিনিধি/এমআর/এসএম