মোঃ রাসেদুজ্জামান সাজু, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি: বাংলাদেশে সর্ব প্রথম জেলা শহর হিসেবে ঠাকুরগাঁও সদর ১০০ ভাগ তারবিহীন সিসি ক্যামেরার নিয়ন্ত্রণে আসছে। ঠাকুরগাঁও সদরের সম্মানিত নাগরিকদের আরও উন্নততর পুলিশি সেবা প্রদানের পাশাপাশি অসংখ্য আধুনিক সার্ভিস প্রদানের জন্য পরিষ্কার দৃশ্য, সুস্পষ্ট নাইট ভিশন ও সুবিশাল মেমরি স্টোরেজসহ অন্তত ৫৬টি আইপি ক্যামেরার সমন্বয়ে এই তারবিহীন নেটওয়ার্ক শুভ উদ্বোধনের অপেক্ষায়।
ঠাকুরগাঁও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর এই উদ্যেগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন ঠাকুরাঁওয়ের সুশীল সমাজের লোকজন।
শহরের চৌরাস্তার এক দোকানদার জানান, সম্প্রতি জুয়েলার্সের দোকানে বোমা ফাটিয়ে ডাকাতি করে প্রায় অর্ধ কোটি টাকার সোনা লুট করে নিয়ে যায়। কিন্তু পুলিশ এখন পর্যন্ত ডাকাতদের ধরতে পারেনি। শহর যদি সিসি ক্যামেরার আওতায় আসে তাহলে যে কোন ঘটনা সিসি ক্যামেরায় ধরা পড়বে। পরর্বতী ফুটেজ দেখে দোষীদের শনাক্ত করা সম্ভব হবে। তাই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সাধুবাদ জানাই।
শিক্ষাবিদ মনতোষ কুমার দে জানান, সময় যত যাচ্ছে দেশ তথ্য প্রযুক্তিগত দিক থেকে এগিয়ে যাচ্ছে। আমার মতে এই ঠাকুরগাঁও শহরই প্রথম সম্পূর্ণ সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হচ্ছে। এই কারণে যে কেউ অপরাধমূলক কাজ করতে ভয় পাবে। যদিও অপরাধমূলক কাজ সংগঠিত হয় পুলিশ সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখে ওই ব্যক্তিদের সনাক্ত করে তাৎক্ষণিক আইনের আওতায় নিয়ে আসতে পারবে। সরকার পুরো দেশেই যদি এই রকম যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করে তাহলে দেশে অপরাধ কমে আসবে বলে মনে করি।
শহরের ব্যবসায়ী সামশুল হক জানান, ঠাকুরগাঁওয়ে যে পরিমাণ মোটরসাইকেল চুরি হয় কিন্তু এখন পর্যন্ত সরাসরি কাউকে ধরতে পারেনি পুলিশ। যেহেতু শহর এখন সিসি ক্যামেরার আওতায় আসছে সেহেতু মোটরসাইকেলসহ সকল চুরির পরিমাণ কমে যাবে।
সিরাজুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি জানান, সম্প্রতি শহরে রাজনৈতিক সংঘাত বেড়ে গেছে। কোথাও মিছিল মিটিং হলেই সংর্ঘষ বাধে। কিন্তু পুলিশ তাদের চিনতে না পারায় আইনের আওতায় আনতে পারে না। শহর এখন সিসি ক্যামেরার নিয়ন্ত্রণে তাই সংর্ঘষসহ যেকোন অপরাধমূলক কাজ কমে যাবে। ফলে শান্তিতে চলাফেরা করতে পারবে সাধারণ মানুষ।
ঠাকুরগাঁও পুলিশ সুপার ফারহাত আহম্মেদ জানান, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ত্বরান্বিত করার জন্য সরকার গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আশা করি আগের থেকে সকল প্রকার অপরাধ কমে আসবে। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে পুলিশ আসামদের সহজেই সিনাক্ত করতে পারবে। অপরাধী ও সাধারণ মানুষ যখন জানবে শহর সিসি ক্যামেরার আওতায় তখন এমনিতেই অনেক অপরাধ কমে আসবে বলে মনে করছি।
এছাড়াও বড় বড় সভা, সেমিনার, অনুষ্ঠানগুলোকে আমরা অস্থায়ী সিসি ক্যামেরার অওতায় নিয়ে আসতে সফল হয়েছি। এর মধ্যে ২১ ফেব্র“য়ারি শহীদ মিনারে ফুল দেয়া, গড়েয়া ইস্কন মন্দিরের অনুষ্ঠান অস্থায়ী সিসি ক্যামেরার আওতায় এনে সাফল্যর সঙ্গে নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছি। এখন থেকে যে সকল অনুষ্ঠান বা সভা সেমিনার ঝুকিপূর্ণ মনে হবে সেগুলো আমরা সিসি ক্যামেরার আওতায় নিয়ে আসবো।
ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক মূকেশ চন্দ্র বিশ্বাস জানান, সময়ের সঙ্গে সঙ্গেই দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য ইতোমধ্যে অনেকটা সফল। তাই দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতির জন্য বিভিন্ন স্থানে তারবিহীন সিসি ক্যামেরার আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে। ফলে আধুনিক শহর গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। গত দশ বছরে প্রযুক্তির দিক থেকে উত্তরের এই ঠাকুরগাঁও জেলা অনেকটা এগিয়ে রয়েছে। তাই এই উদ্যোগের জন্য সরকার ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি।
২৮ফেব্রুয়ারি,২০১৬/এমটি নিউজ২৪/প্রতিনিধি/এইচএস/কেএস