বিচিত্র জগৎ ডেস্ক : হঠাৎ করেই ‘সান্ডা’ নামের একটি প্রাণী নিয়ে হইচই শুরু হয়ে গেছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। এ নিয়ে নেটিজেনরা নানারকম মন্তব্য করছেন। কেউ কেউ ভিডিও ও ছবিসহ পোস্ট করছেন।
আরমান জুয়েল নামের একজন লিখেছেন, ‘যারা আজকে সারাদিন সান্ডা খুঁজতে খুঁজতে মরিয়া কিন্তু সান্ডা চিনতেছেন না।
আপনাদের জন্য দিলাম এই ভিডিও। এটি সৌদিদের অনেক পছন্দের একটি খাবার। দামও ভালো বলা যায়। এটি মরুভূমির প্রাণী।
দেখতে বাংলাদেশের গুঁইসাপের মতো দেখালেও এটির জাত ভিন্নতা রয়েছে। এটি হালাল খাবার এবং মুখরোচক বলেই জানা যায়। যারা খেতে ইচ্ছুক অবশ্যই সৌদি গেলে ব্যবস্থা হবে।’
সান্ডা আসলে কী?
সান্ডা হলো একটি টিকটিকি জাতীয় সরীসৃপ, যার বৈজ্ঞানিক নাম Uromastyx। এটি দেখতে অনেকটা গুইসাপের মতো হলেও এর শরীর তুলনামূলক ছোট এবং এর মোটা। এর খাঁজযুক্ত লেজ আত্মরক্ষার জন্য ব্যবহৃত হয়। এই প্রাণীকে বিভিন্ন নামে ডাকা হয়—‘মাস্টিগুর’, ‘সান্ডা টিকটিকি’, কিংবা ‘কাঁটা লেজযুক্ত টিকটিকি’।
মূলত আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের মরুভূমি অঞ্চলে এই প্রাণীটির আবাস। এটি তৃণভোজী, অর্থাৎ গাছপালা, ফুল ও বীজ খেয়ে জীবনধারণ করে। তবে প্রয়োজন অনুযায়ী পোকামাকড়ও খেতে দেখা যায়।
মধ্যপ্রাচ্যে ‘সান্ডা ’
সাম্প্রতিক সময়ে মধ্যপ্রাচ্যে প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে ‘সান্ডা শিকার’ একটি জনপ্রিয় আলোচ্য বিষয় হয়ে উঠেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওগুলোতে দেখা যাচ্ছে, মরুর বালির মধ্যে প্রবাসীরা দৌড়ে বেড়াচ্ছেন সান্ডা ধরতে। কেউ বলছেন, “ভাই, এই সান্ডা না ধরতে পারলে চাকরি যাবে”, আবার কেউ বলছেন, “কফিল বলেছে, সান্ডা না পেলে ভিসা ক্যানসেল।”
এই ভিডিও ও মিমগুলো বাংলাদেশে পৌঁছেই ভাইরাল হয়ে গেছে। অনেকে মজা করে বলছেন, “বৈধ ভিসার চাবিকাঠি নাকি এখন এক টিকটিকি!” ফলে সান্ডা হয়ে উঠেছে এক অনন্য সাংস্কৃতিক ট্রেন্ডের কেন্দ্রবিন্দু, যা শুধু রম্য নয়, বরং প্রবাসীদের জীবনযাত্রার এক প্রতীকও।
এ ছাড়াও ফেইসবুক জুড়ে এখন আলোচনা, ঠাট্টা আর ইয়ার্কির বিষয় এই সান্ডার বিরিয়ানি। বেশ কয়দিন ধরেই ফেইসবুকের ট্রেন্ড হলো ‘সান্ডা’। এই সামাজিক যোগাযোগে দুই-তিন মিনিট রিলস-এ চোখ রাখলেই অন্তত ৪-৫টি ‘সান্ডা’র কন্টেন্ট-এর দেখা মিলে যাবে।
হাটে বাজারে সান্ডা'র তেল
সান্ডা নিয়ে জনপ্রিয় আরেকটি বিশ্বাস হলো ‘সান্ডা তেল’। আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় ব্যবহৃত এই তেলকে অনেকে যৌ*ন শক্তি বৃদ্ধির উপাদান হিসেবে প্রচার করে থাকেন। যদিও বিজ্ঞানসম্মতভাবে এর কার্যকারিতা প্রমাণিত নয়, তবুও বাজারে এর চাহিদা রয়েছে। বিশেষ করে ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশে কিছু আঞ্চলিক হাটে এই তেল বিক্রি হতে দেখা যায়।