মুহম্মদ ইকবাল হোসেন, ইসলামাবাদ (পাকিস্তান) থেকে : পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে বাংলাদেশ হাইকমিশনের উদ্যোগে বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪১তম শাহাদতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে চ্যান্সারি ভবন জাতীয় শোক দিবসের পোস্টারে সজ্জিত করা হয় এবং অনুষ্ঠানে যোগদানকারী সকলে কালো ব্যাজ পরিধান করেন।
সকালে চ্যান্সারি প্রাঙ্গণে হাইকমিশনের সকল কর্মকর্তা, কর্মচারী ও ইসলামাবাদে বসবাসকারী বাংলাদেশি নাগরিকদের উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করেন পাকিস্তানে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার তারিক আহসান। বিকেলে বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের শহীদ সদস্যদের বিদেহী আত্মার প্রতি উৎসর্গ করে পবিত্র কোরআন খতম করা হয়। স্থানীয় একটি মাদ্রাসার ১১ জন হাফেজ কোরআন খতম করেন।
দিবসটি পালন উপলক্ষে সন্ধ্যায় এক আলোচনা ও স্মরণ সভা আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন তারিক আহসান ও হাইকমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। পুষ্পার্ঘ্য অর্পণের পর বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের শহীদ সদস্যদের প্রতি সম্মান জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এরপর দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্র মন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী প্রদত্ত বাণী পাঠ করা হয়।
উপস্থিতির একাংশআলোচনা সভায় বক্তারা বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের তুলনাহীন অবদান এবং জীবন ও কর্মের উল্লেখযোগ্য দিক তুলে ধরেন। তাঁরা ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে নৃশংসভাবে হত্যার তীব্র নিন্দা জানিয়ে গভীর শোক প্রকাশ করেন।
তারিক আহসান তাঁর সমাপনী বক্তৃতায় জাতির পিতার স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে বলেন, বঙ্গবন্ধু শুধু বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনেই নেতৃত্ব দেননি, তিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন বাঙালি জাতিকে গণতন্ত্র, সমতা ও অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাসী একটি আধুনিক ও প্রগতিশীল জাতি হিসেবে গড়ে তোলার কাজে। তিনি বলেন, কতিপয় ধর্মান্ধ মানুষ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে দেশে আজ শান্তি ও সম্প্রীতি বিনষ্ট করার চেষ্টা চালাচ্ছে, এসব অপতৎপরতা প্রতিহত করে দেশকে একটি উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলার অগ্রযাত্রায় বঙ্গবন্ধুর আদর্শ আমাদের সাহস ও শক্তি জোগাতে পারে।
ফাতেহা পাঠ ও বিশেষ মোনাজাতআলোচনা শেষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারের শহীদ সদস্যদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে ফাতেহা পাঠ ও বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। সবশেষে, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ অবলম্বনে নির্মিত প্রামাণ্য ভিডিওচিত্র ‘স্বাধীনতা কী করে আমাদের হলো’ প্রদর্শন করা হয়। অনুষ্ঠান শেষে অতিথিদের মাঝে বাংলাদেশি খাবার পরিবেশন করা হয়।
*মুহম্মদ ইকবাল হোসেন, কাউন্সেলর (প্রেস), বাংলাদেশ দূতাবাস, ইসলামাবাদ, পাকিস্তান। -প্রথম আলো
১৬ আগস্ট, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএম