আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতের কর্ণাটক রাজ্যে এক বিজেপি কর্মীকে তথাকথিত গোরক্ষকরা পিটিয়ে এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপিয়ে হহ্যা করে। সেখানকার পুলিশ বলছে বিজেপি-রই সহযোগী উগ্র হিন্দুত্ববাদী বিশ্ব হিন্দু পরিষদ আর বজরং দলের কর্মীরাই এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত।
এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ১৭জনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। তবে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ আর বজরং দল এই ঘটনায় জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছে।
কর্ণাটকের পুলিশ বলছে, উদুপি জেলার বাসিন্দা প্রবীণ পূজারী বলে এক ব্যক্তি গতকাল নিজের একটি ছোট টেম্পোতে করে তিনটি গরু নিয়ে যাচ্ছিলেন।
সেই সময়েই প্রায় বিশ জনা ব্যক্তি পূজারী আর তার এক সঙ্গীকে আক্রমণ করে। তাদের অভিযোগ ছিল যে পূজারী ওই গরুগুলি পাচারের জন্য নিয়ে যাচ্ছিলেন।
তাকে ঘিরে ধরে মারধর শুরু করে তারা। একপর্যায়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয় পূজারীকে। সেখানেই মারা যান তিনি। তার সঙ্গী আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
ঘটনাচক্রে যিনি মারা গেছেন, তিনি হিন্দুত্ববাদী বিজেপি-র কর্মী বলেই জানা যাচ্ছে, আবার যাদের বিরুদ্ধে আক্রমণের অভিযোগ, তারাও বিজেপি-র সহযোগী সংগঠন।
পুলিশ বলছে যে ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তারা ছাড়াও আরো কিছু ব্যক্তি ছিল। এই পলাতকদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।
গত দেড় বছরে একের পর এক কথিত গোরক্ষার নাম করে ভারতে হামলা হয়েই চলেছে। উত্তরপ্রদেশে এক মধ্যবয়স্ক মুসলমান ব্যক্তিকে এই কথিত গোরক্ষকরা পিটিয়ে মেরে ফেলে।
অন্যান্য জায়গাতেও গরু পাচার রোধ অথবা গরুর জবাই রোধ এমনকি গরুর মাংস নিয়ে যাওয়ার মিথ্যা অভিযোগেও হেনস্থা হামলার শিকার হচ্ছেন অনেকে। তবে এবার একজন বিজেপি কর্মীই নিহত হলেন।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কয়েক সপ্তাহ আগে এই তথাকথিত গোরক্ষকদের ৮০%-ই সমাজবিরোধী বলে উল্লেখ করেছেন। সেই মন্তব্যের জন্য উগ্র হিন্দুত্ববাদী নেতারা আবার তাদেরই প্রধানমন্ত্রীর ওপরে চটেছেন।
প্রকাশ্যেই মোদির এই বক্তব্যের সমালোচনা করছেন বিশ্ব হিন্দু পরিষদ নেতা প্রবীণ তোগাড়িয়ার মতো আরো অনেকেই।
প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যের পরেই কেন্দ্রীয় সরকার সব রাজ্যগুলিকে মনে করিয়ে দিয়েছে যে গোরক্ষার নাম করে কেউ যাতে আইন নিজের হাতে তুলে না নিতে পারেন, তার জন্য পুলিশকে কঠোর হতে হবে।-বিবিসি
১৯ আগস্ট, ২০১৬ এমটিনিউজ২৪/জহির/মো:জই