সোমবার, ২৯ আগস্ট, ২০১৬, ০৫:৫৪:৩৪

সমীক্ষা : ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে কত কোটি মানুষের মৃত্যু হবে?

সমীক্ষা : ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে কত কোটি মানুষের মৃত্যু হবে?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ‘চির শত্রু’ প্রতিবেশী ভারত ও পাকিস্তান৷ এই দুই দেশের মধে পারমাণবিক যুদ্ধ বাঁধলে বিশ্বে দুর্ভিক্ষ দেখা দেবে। এতে অন্তত ২০০ কোটি মানুষের মৃত্যু হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে ওয়াকিবহাল মহল৷ তাদের মতে, প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতে পারে একটা মানবসভ্যতাও। সম্প্রতি প্রকাশিত গবেষণামূলক এক প্রতিবেদনে এই শঙ্কার কথা প্রকাশ করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই দুই দেশের মধ্যে সীমিত পর্যায়েও পারমাণবিক অস্ত্রের লড়াই হলে বিশ্বের আবহাওয়ামণ্ডলের ব্যাপক ক্ষতি ও শস্যক্ষেত্র ধ্বংস হবে। পরিণামে খাদ্যপণ্যের বিশ্ববাজারে বহু গুণ খারাপ প্রভাব পড়বে। খাদ্যশৃঙ্খলায় দেখা দেবে বিশৃঙ্খলা।

নোবেল শান্তি পুরস্কারজয়ী ইন্টারন্যাশনাল ফিজিশিয়ানস ফর দ্য প্রিভেনশন অব নিউক্লিয়ার ওয়্যার এবং ফিজিশিয়ানস ফর সোশ্যাল রেসপনসিবিলিটি এই দু’টি সংগঠন এই গবেষণামূলক প্রতিবেদনটি তৈরি করে। এর আগে সংগঠন দু’টি ২০১২ সালের এপ্রিলে প্রকাশিত এক প্রাথমিক প্রতিবেদনে ধারণা দিয়েছিল, এই রকম একটি পারমাণবিক যুদ্ধে ১০০ কোটির বেশি মানুষ মারা যেতে পারে।

গবেষণার দ্বিতীয় সংস্করণে সংগঠন দু’টি বলেছে, দুই দেশের সম্ভাব্য পরমাণু যুদ্ধে চীনের ওপর প্রভাবের বিষয়টি তারা অনেকটাই এড়িয়ে গিয়েছে। তবে বিশ্বের জনবহুলতম এই দেশ মারাত্মক খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার মুখে পড়তে পারে বলে এতে আশঙ্কা করা হয়।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, পরমাণু যুদ্ধের ফলে আবহাওয়ামণ্ডলে যে কার্বন অ্যারোসল কণা ছড়াবে, তাতে সুদূর যুক্তরাষ্ট্রেও এক দশক শস্যকণা ও সয়াবিনের উৎপাদন প্রায় ১০ শতাংশ কমে যাবে। এই কণার প্রভাবে চীনে প্রথম চার বছর গড়ে ২১ শতাংশ ও পরের ছয় বছর আরো ১০ শতাংশ ধানের উৎপাদন কমে যাবে। মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হবে গমের উৎপাদনও।

প্রতিবেদনের লেখক আইরা হেলফান্দ সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘উন্নয়নশীল বিশ্বে ১০০ কোটি মানুষ মারা যাওয়া নিশ্চিতভাবেই মানব ইতিহাসের জন্য এক বিপর্যয়। এর সঙ্গে চীনের আরো ১৩০ কোটি মানুষের জীবন ঝুঁকির মুখে পড়বে। এর যে ফলাফল আমরা পাব তা হলো, স্পষ্টতই একটি সভ্যতা বিলুপ্ত হয়ে যাবে।’

হেলফান্দ আরো বলেন, ১৯৪৭ সালে ভারত-পাকিস্তান বিভক্তির পর থেকে এখনো পর্যন্ত অন্তত তিনবার দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধ হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে পরমাণু অস্ত্রের অধিকারী দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। এমন পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে গবেষণাটি করা হয়েছে।

হেলফান্দের মতে, ‘আধুনিক যুগের পারমাণবিক অস্ত্র ১৯৪৫ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালে জাপানের হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে ফেলা মার্কিন পরমাণু বোমার চেয়ে অনেক শক্তিশালী। ওই বোমায় দুই লক্ষেরর বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।’ সংগঠন দু’টির আর্জি, শান্তি পথ ভুলে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের কথা ভুলে যাক৷ নয়তো একটা কাশ্মীরের জন্য একটা সভ্যতা ধ্বংস হয়ে যাবে!-কলকাতা
২৯ আগস্ট, ২০১৬ এমটিনিউজ২৪/শান্ত/মো:শাই

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে