 
                                        
                                        
                                       
                                        
                                             
                                                                                    
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : দিল্লির অনুগত সৈনিকের তকমা ঝেড়ে ফেলতে জম্মু–কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি ছাড়তে পারেন বিজেপির সঙ্গ। আগামী সপ্তাহে দলের ২৮ বিধায়ক এবং সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ নেতার সঙ্গে বৈঠকে বসবেন মেহবুবা। ওই বৈঠকের পরই এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন তিনি।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে যে বিজেপির সঙ্গ ত্যাগ করলেও রাজ্যপালের কাছে বিধানসভা ভাঙার সুপারিশ করবেন না মুখ্যমন্ত্রী। ফলে কাশ্মীরে দেখা যেতে পারে নতুন রাজনৈতিক সমীকরণ। এমনিতে ৮৭ সদস্যের কাশ্মীর বিধানসভায় বৃহত্তম দল পিডিপি। তাদের হাতে ২৮ জন বিধায়ক। জম্মু–কাশ্মীরে পিডিপি সরকার গড়েছিল ২৫ জন বিজেপি বিধায়কের সমর্থনে।
রাজ্য বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজন ৪৪ জন বিধায়কের সমর্থন। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের অনুমান, বিজেপির সঙ্গ ছেড়ে কংগ্রেসের দিকে সমঝোতার হাত বাড়াতে পারেন মেহবুবা। এমন প্রস্তাবে কংগ্রেসের বিশেষ আপত্তি নেই। সম্প্রতি লাদাখ অটোনমাস হিল ডেভেলপমেন্ট কাউন্সিলের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন পিডিপি ও কংগ্রেস উভয়ের সমর্থনে। কিন্তু বিধানসভার ক্ষেত্রে গোল বাধছে সংখ্যায়। কংগ্রেসের হাতে মাত্রই ১২ বিধায়ক থাকায় দু’দল মিলে সংখ্যা দাঁড়াচ্ছে ৪০।
বিজেপি আর ন্যাশনাল কনফারেন্সের বিধায়কদের সংখ্যাও ৪০। বাকি ৭ বিধায়কের মধ্যে থেকে সরকার গড়ার জন্য ৪ বিধায়ক কি পাওয়া যাবে? পিডিপি শিবির আশাবাদী যে সিপিএমের এক ও নির্দল বিধায়কদের সমর্থন তাদের দিকেই থাকবে। কিন্তু অঙ্কটা অত সহজ নয়। যেহেতু ওমর আবদুল্লাকে সঙ্গে নিয়েও বিজেপি বিকল্প সরকার গড়তে পারবে না, তাই তারা চাইবে অস্থিরতা থাকুক। কারণ তার পরিণতিতে কেন্দ্রের পক্ষে রাজ্যে রাষ্ট্রপতির শাসন জারি করার সুবিধা হয়ে যাবে।
সেই সুযোগ মেহবুবা আবার বিজেপিকে দিতে চাইছেন না। তিনি চাইছেন সব কিছু নিশ্চিত করে তবেই এগোতে। বিজেপির ওপর মেহবুবার গোসার কারণ হল যে পিডিপি নেত্রী মনে করছেন কাশ্মীরের বর্তমান সঙ্কটের কারণ হচ্ছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের অনড় মনোভাব। কাশ্মীর সমস্যা সমাধানে রাজনৈতিক প্রয়াসের বদলে মোদি সরকার এখন ব্যস্ত বিচ্ছিন্নতাবাদীদের কাছে কড়া বার্তা পৌঁছাতে। সেই কারণে রাজ্য সরকারের গুরুত্ব অনেকাংশে হ্রাস করে কাশ্মীর উপত্যকায় সেনা নামানো হয়েছে। আর এই সমস্ত কিছুই করা হচ্ছে তার সরকারকে শিখন্ডি হিসেবে দাঁড় করিয়ে।
ফলে দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে বিজেপির সুবিধা হচ্ছে আর কাশ্মীরে পিডিপি বিপাকে পড়ছে। মেহবুবার গায়ে এটে বসছে দিল্লির অনুগত সৈনিকের তকমা। পিডিপির অনেক নেতাই মনে করছেন যে এই অবস্থা চললে কাশ্মীরের রাজনীতিতে দলের ভবিষ্যৎ বলে আর কিছুই অবশিষ্ট থাকবে না। মেহবুবার ওপর চাপ আরও বেড়েছে দলের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য তারিক কার একই অভিযোগে দলের সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করার পর।
তবে মেহবুবার এমন পদক্ষেপের সম্ভাবনায় বিন্দুমাত্র ভাবিত নয় বিজেপি। ওই দলের এক শীর্ষ নেতার মতে কাশ্মীরের বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতারা যে আসলে কাগুজে বাঘ তা এতদিন রাজ্যের মানুষকে বোঝানো সম্ভব হয়নি কেন্দ্র ও রাজ্য উভয় সরকারই নরম নীতি নিয়ে চলার জন্য। তাই মোদি সরকারের সুচিন্তিত সিদ্ধান্ত কাশ্মীর ভারতের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হিসেবে মেনে নিলে তবেই আলোচনা সম্ভব। এই নীতির কোনও বদল হবে না। আর দু’পক্ষই নিজেদের অবস্থানে অনড় থাকলে আগামী সপ্তাহে কাশ্মীরে রাজনৈতিক তৎপরতা তুঙ্গে উঠতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
অন্যদিকে কাশ্মীর নিয়ে পাকিস্তানকে শনিবার একহাত নিয়েছেন ইউনাইটেড কাশ্মীর পিপলস ন্যাশনাল পার্টির আত্মগোপনকারী নেতা শওকত আলি। তার সাফ কথা কাশ্মীর কখনওই পাকিস্তানের অংশ হবে না। কারণ কাশ্মীরের মানুষ গণতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষতার পক্ষে। কাজেই যারা ধর্মের জিগির তুলে কাশ্মীরকে নিজেদের দখলে আনতে চায় তারা কখনওই সফল হবে না।
এসময় মানবাধিকার প্রসঙ্গেও পাকিস্তানকে বিঁধতে ছাড়েননি শওকত আলি। তিনি বলেছেন, ওই দেশ মানবাধিকারের প্রশ্নে গোটা দুনিয়াকে বোকা বানানোর চেষ্টা করছে। একই সঙ্গে আলি ভারত সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছেন কাশ্মীরের গণতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ, জাতীয়তাবাদী শক্তির কথা শুনতে। আজকাল 
১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এসএস/এসবি
 
  
                             
                                    
                 
  
                             
                                    
                 
  
                             
                                    
                 
  
                             
                                    
                