 
                                        
                                        
                                       
                                        
                                             
                                                                                    
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : দশটি বোর্ড ইতিমধ্যেই হয়ে গিয়েছে। বিমল গুরুংদের আরও কোণঠাসা করতে চারটি নতুন বোর্ড গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করল রাজ্য। ভুজেল, নেওয়ার, খস সম্প্রদায়কেও বোর্ডভুক্ত করার পাশাপাশি পাহাড়ের সংখ্যালঘুদেরও উন্নয়ন বোর্ডের আওতায় আনার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতার শরণাপন্ন হয়েছে গুরুং সম্প্রদায়ও। তারা চায় ওবিসির স্বীকৃতি। বিষয়টি কেন্দ্রীয় সরকারের আওতায়। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, কালীপুজোর পর তিনি আবার পাহাড়ে আসবেন৷ তখন এ নিয়ে কথা হবে।
একই সঙ্গে মমতা এদিন বুঝিয়ে দেন, চার হাজার কোটি টাকা পেয়েও পাঁচ বছরে কিছুই করতে পারেনি মোর্চা। লোকসভা আসন, বিধানসভা আসন, জিটিএ সবই মোর্চার হাতে। কিন্তু যেটুকু কাজ হয়েছে, সবই তিনি করেছেন এই সব নতুন বোর্ডগুলির মধ্য দিয়ে। উন্নয়নের স্বার্থেই তাই পাহাড়ে পরিবর্তন দরকার৷ সামনে পঞ্চায়েত ও পুরভোট। ওই নির্বাচন থেকেই শুরু হোক মোর্চার উৎখাত অভিযান।
তিনি বলেন, “আমাকে পাহাড়ের মেয়ে ভাবুন, বোন ভাবুন৷ আমি বার বার আসি৷ যত দিন বাঁচব আসব৷ কখনও আপনারা আমাদের জেতাননি। কিন্তু বিশ্বাস করি একদিন না একদিন আপনারা আমাদের জেতাবেন৷ সেই দিনটার অপেক্ষায় রইলাম।”
মোর্চাকে বার্তা দিয়ে তাঁর সাফ কথা, “পাহাড়ের সাময়িক সমাধান নয়, স্থায়ী সমাধান দরকার৷ বদল করুন। উন্নয়নই সব সমস্যার সমাধান৷ যত অর্থ লাগবে দেব। পাহাড় না এগোলে বাংলা এগোতে পারবে না।”
বৃহস্পতিবার কালিম্পং মেলা গ্রাউন্ডে লেপচা বোর্ডের পঞ্চম বর্ষপূর্তির অনুষ্ঠানে যোগ দেন মমতা। ক্ষমতায় এসে লেপচাদের দীর্ঘদিনের দাবি তিনি মেনে নিয়েছিলেন। গঠিত হয় লেপচাদের উন্নয়ন পর্ষদ। মমতাকে নিজেদের ভাগ্যদেবী ‘কিংচুম ডরমিট’-এর আসনে বসান উল্লসিত লেপচারা। সেই বোর্ড পাঁচ বছরে চুটিয়ে কাজ করেছে।
এদিন সূচনা হয়ে গেল জলপ্রকল্পের। যখন জিটিএ-র বিরুদ্ধে কাজ না করার অভিযোগ তখন লেপচাদের এই অগ্রগতি পাহাড়ের সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রভাব ফেলে৷ অন্য সম্প্রদায়গুলিও বোর্ডের দাবি তুলতে থাকে৷ জিটিএকে বাদ দিয়েই বিকল্প পথে উন্নয়নের লক্ষ্যেই এরপর একে একে শেরপা, তামাং, রাই, লিম্বু, ভুটিয়া – সহ মোট দশটি সম্প্রদায়ের উন্নয়ন ও সাংস্কৃতিক বোর্ড গড়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
আর এতেই খেপে উঠেছেন মোর্চা নেতারা৷ এই বোর্ডগুলিই পাহাড়ে মোর্চার কর্তৃত্ব আলগা করে দিয়েছে৷ সেটা বুঝেই নতুন করে গোর্খাল্যান্ডের দাবি সামনে এনে ভাবাবেগে সুড়সুড়ি দিচ্ছে গুরুং বাহিনী৷ ঝুলি থেকে বেরিয়ে পড়েছে রাজ্য ভাগের দাবি৷ বনধ করলে সফল হবে না আঁচ করেই শুরু হয়েছে রিলে অনশন। কিন্তু সেই অনশনে স্থানীয় মানুষের কতটা সমর্থন রয়েছে, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে৷ এদিন অনশনকে পাশ কাটিয়েই মেলা গ্রাউন্ড উপচে দিয়ে উৎসবে মাতেন লেপচারা৷ শুক্রবার তামাংরাও একইভাবে বোর্ড গঠনের বর্ষপূর্তি উৎসব করবে।
সমতলে সিপিএম-কংগ্রেসের মতো পাহাড়ে মোর্চায় বড় ভাঙন ধরছে৷ রবিবার মোর্চা ভেঙে একটি বড় অংশ তৃণমূলে যোগ দিতে পারে। মুখ্যমন্ত্রী এদিনের সভায় কারও নাম না করে নরমে গরমে গুরুংদের কড়া বার্তা দেন। তিনি বলেন, দার্জিলিং এলে আমি রাজনৈতিক কথা কম বলি। কিন্তু পুরভোট পঞ্চায়েত ভোট এখানে দীর্ঘদিন হয়নি। ডিসেম্বরে পুরসভাগুলির মেয়াদ শেষ হবে। নির্বাচন কমিশনকে বলব, আপনারা দয়া করে ভোটের প্রক্রিয়া শুরু করুন৷ যে দল জেতে জিতুক, জেতার পর সে যেন কাজ করে।
জিটিএকে চার হাজার কোটি পাঁচ বছরে আমরা দিয়েছি। জিটিএর লোকেরা আমাদের দোস্ত৷ কিন্তু ভাল করে কাজ হয়নি৷ তাই বোর্ডগুলির ভিতর দিয়ে কাজ করছি। এখানে আমাদের দল কোনও ভোটে জেতেনি। কিন্তু পাহাড়ে ভোট এলেই এই চাই ওই চাই শুনি৷ এক বছর এই চলে। বাকি চার বছর কোনও কাজ হয় না। এসব আর চলবে না। কাজ করতে হবে।
এদিনের সভায় উপস্থিত ছিলেন মুখ্যসচিব বাসুদেব বন্দ্যোপাধ্যায়, ডিজি সুরজিৎ করপুরকায়স্থ, ইন্দ্রনীল সেন, বাইচুং ভুটিয়া, শান্তা ছেত্রী, লেপচা বোর্ডের থমসং-সহ বিশিষ্টরা। -সংবাদ প্রতিদিন।
২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএম
 
  
                             
                                    
                 
  
                             
                                    
                 
  
                             
                                    
                 
  
                             
                                    
                