 
                                        
                                        
                                       
                                        
                                             
                                                                                    
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : কাশ্মীরের ক্রমবর্ধমান উত্তাপের ফলে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির অর্থনৈতিক পুনর্জাগরণের মূলনীতি। কিন্তু ভারতের জনগণ দাঁতভাঙা জবাব দেয়ার জন্য সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন। তারা বলছেন, পাকিস্তানের মদদই উপত্যকা অঞ্চলে অস্থিরতা সৃষ্টির জন্য দায়ী।
রোববার ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের একটি সেনা ক্যাম্পে জঙ্গি হামলার ঘটনায় দেশ দুটির মধ্যকার উত্তেজনা চরমে উঠেছে। ১৮ ভারতীয় সেনার মৃত্যুর ঘটনায় যুদ্ধের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে গেছে পরমাণু শক্তিধর দেশ দুটি। পঞ্চাশের দশক থেকে তারা মোট চারবার মুখোমুখি যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছে। এবারের জঙ্গি হামলার ঘটনায় পাকিস্তানের হাত রয়েছে বলে অভিযোগ করছে ভারত। বিদ্যমান উত্তপ্ত পরিস্থিতি শুধু অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের প্রতিবন্ধকতাই নয় বরং যে কোনো সময় দেশ দুটিকে ভয়াবহ যুদ্ধের মধ্যে নিমজ্জিত করতে পারে। ‘শুটিং ফর দ্য সেঞ্চুরি : দ্য ইন্ডিয়া-পাকিস্তান কোনানড্রাম’ গ্রন্থের লেখক স্টিফেন পি কোহেন বলেন, ‘এটা হতে পারে এবং উভয় রাষ্ট্রের জন্যই ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনবে এই যুদ্ধ।’
প্রায় সত্তর বছর আগে ব্রিটেন থেকে স্বাধীনতা লাভের পর থেকেই শত্রুতার সম্পর্ক বিরাজ করছে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে। মূলত কাশ্মীর উপত্যকাকে কেন্দ্র করেই এ দ্বন্দ্ব। কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে এখন পর্যন্ত দু’বার যুদ্ধে নেমেছে তারা। তবে ২০১০ সালের পর থেকে কিছুটা স্থিতিশীল হয়ে উঠেছিল উপত্যকা অঞ্চলটি। পর্যটকরা ফিরতে শুরু করেছিলেন। স্থানীয় নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতিও ক্রমেই বাড়ছিল। এ ব্যাপারে জম্মু-কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ বলেন, ‘কয়েক দশকের অস্থিরতা শেষ হয়ে যাচ্ছে বলেই ধরে নিয়েছিল ভারতীয় সরকার।’ নিউইয়র্ক টাইমস বৃহস্পতিবার জানায়, সে ধারণা এখন ভুল মনে হচ্ছে।
গত জুলাইয়ে কাশ্মীরের ২২ বছর বয়সী বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা বুরহান ওয়ানির হত্যাকে কেন্দ্র করে আবার অস্থির হয়ে ওঠে অঞ্চলটি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে সান্ধ্য আইন জারি করা হয়েছে। ভারতীয় সেনাদের সঙ্গে সংঘর্ষে মারা গেছেন কমপক্ষে ৮০ জন। এ পরিস্থিতিতে ১৮ ভারতীয় সেনা হত্যার ঘটনায় যুদ্ধের দামামা বেজে উঠেছে নিয়ন্ত্রণরেখার উভয় পাশে। তবে ইন্টারন্যাশনাল পিসের সিনিয়র অ্যাসোসিয়েট আশলে জে টেলিস বলেন, ‘সংকট নিরসনের রাজনৈতিক প্রজ্ঞা আছে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির।’
তিনি আরও বলেন, পার্লামেন্টের নিুকক্ষে মোদির দলের আধিপত্য আছে। সুতরাং চাইলেই তিনি সাহসী সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। অথবা ১৯৫৪ সালের চুক্তি অনুসারে পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন দিতে পারেন কাশ্মীরকে। তবে কট্টর হিন্দুবাদী সংগঠন আরএসএস এর তীব্র বিরোধিতা করবে। এমনকি মোদিকে চাপে ফেলার ক্ষমতাও আছে সংস্থাটির। সুতরাং কাশ্মীর ইস্যুতে কঠিন পরীক্ষার মুখেই পড়েছেন মোদি।
অন্যদিকে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে যেতে চাচ্ছে ভারতীয় বাহিনী। তবে পাকিস্তানও এ ব্যাপারে শতভাগ যুদ্ধংদেহী!
অন্যদিকে জাতিসংঘের অধিবেশনে পাক প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কাশ্মীর সমস্যার স্থায়ী সমাধান না হলে বিরোধ মেটানো সম্ভব হবে না।’ সার্বিক অবস্থা মিলিয়ে, যুদ্ধ অথবা শান্তি- যাই হোক না কেন সমস্যায় আছেন মোদি।
২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএম