রবিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ০৮:৫৩:৪০

গোয়েন্দা রিপোর্ট প্রকাশ : যেভাবে জঙ্গিরা হামলা করে উরি সেনা দপ্তরে

গোয়েন্দা রিপোর্ট প্রকাশ : যেভাবে জঙ্গিরা হামলা করে উরি সেনা দপ্তরে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : কাশ্মিরের উরি হামলা তদন্তের প্রাথমিক কাজ শেষ ভারতের জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার (এনআইএ)। যাবতীয় তথ্যসাবুদ জড়ো করেছে। গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, কড়া নিরাপত্তার ঘেরাটোপে থাকা উরির দ্বাদশ ব্রিগেডের সদর দপ্তরের ২টি সেনা চেকপোস্টের মধ্যে যথেষ্ট বোঝাপড়া ছিল না‌!‌ এটা বড়রকম গাফিলতি। এবং তারই ফায়দা তুলেছে সীমানার ওপার থেকে আসা সন্ত্রাসবাদীরা।

উরি ছাড়া সম্ভবত আরও কোথায় বড়রকম নাশকতার ছকও ছিল জঙ্গিদের। মৃত জঙ্গিদের থেকে উদ্ধার হওয়া নকশায় সেরকমই ইঙ্গিত পেয়েছেন গোয়েন্দারা। নকশায় উরির সেনা কার্যালয় ছাড়া ঘর-‌বাড়ি, জল-‌জঙ্গলের খুঁটিনাটি মিলেছে। হামলার আগে উরি সংলগ্ন হাজি পির দরগা হয়ে পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরে পৌঁছায় সশস্ত্র জঙ্গিরা।

জৈশ-‌ই-‌মহম্মদ নয়, ওরা লস্কর-‌ই-‌তৈবার সদস্য বলে প্রমাণ মিলেছে। ১৮ সেপ্টেম্বর ভোরে হামলার আগের ২ রাত জঙ্গিরা সুখদর গ্রামে ছিল বলেও জেনেছেন গোয়েন্দারা। উরির সেনা কার্যালয়ের খুব কাছে ওই গ্রাম থেকে কার্যালয়টি ভালভাবে দেখা যায়। এমনকী সেনাদের গতিবিধির ওপর নজরও রাখা যায়। সেনা কার্যালয়ের প্রধান ফটকের বাইরে কিছু কিছু অংশে পাঁচিলও ছিল না। তাতে জঙ্গিদের পোয়াবারো হয় আরও।

এছাড়া আশপাশের এলাকা ঝোপঝাড়ে ঢাকা। গোয়েন্দাদের অনুমান ওই ঝোপঝাড় পেরিয়ে সেনা সদরের বাইরে কাঁটাতারের বেড়া কেটে রাস্তা তৈরি করেছে জঙ্গিরা। জংলা গাছের আড়ালে কেউ তাদের লক্ষ্যই করেনি!‌ এন আই এ–র এক আধিকারিক জানিয়েছেন, এ ধরনের কড়া প্রহরার এলাকার চৌহদ্দিতে ঝোপঝাড় বাড়তে দেওয়া যায় না, সেটাই নিয়ম। উরিতে তা হয়নি। সেনা কার্যালয়ের ১৫০ ফুট দূরত্বে দু‌টি চেকপোস্ট। পাহারায় থাকা জওয়ানরা একটু সতর্ক হলে ১৮ জন সৈনিককে বেঘোরে মরতে হত না, বলে জানিয়েছেন ওই কর্মকর্তা।

 হামলার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে উরিতে যত ফোন কল হয়েছে, মোবাইল বা ব্রডব্যান্ডে, তার যাবতীয় তথ্য জোগাড় করেছে জম্মু-‌কাশ্মীর পুলিশ। ওই সময় সচল সব ইন্টারনেট ডেটাও পেয়েছে। সে সব এন আই এ গোয়েন্দাদের হাতে তুলে দিয়েছে তারা। এছাড়া হত জঙ্গিদের ডি এন এ-‌র নমুনাও দিয়েছে। হত ৪ জঙ্গিকে সেনা কার্যালয় লাগোয়া একটি গ্রামে কবর দেওয়া হয়েছে। জঙ্গিহানার ২ দিনের মাথায় মঙ্গলবার ঘটনাস্থলে পৌঁছে গিয়েছিলেন এন আই এ গোয়েন্দারা।

প্রাথমিক তদন্ত শেষে তথ্যসাবুদের তালিকা তৈরি করছেন তারা। পাকিস্তান সরকারের কাছে পাঠানো হবে ওই তথ্যসাবুদ। নিহত জঙ্গিদের পরিচয় জানতে চাওয়া হবে। জঙ্গিদের থেকে বাজেয়াপ্ত অস্ত্রশস্ত্র, গুলিগোলা একটি বাক্সে তুলে রাখা হয়েছে। সেগুলো সঙ্গে নিয়ে দিল্লি যাবেন তদন্তকারীরা। উরি হামলার পর ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হয়েছে জঙ্গিদের ব্যবহৃত জিপিএস। তার যাবতীয় তথ্য বের করার চেষ্টা চলছে। - আজকাল
২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এসএস/এসবি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে