শুক্রবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১২:০৯:৪৫

ভারতের ৮ সেনাকে মেরেছে পাকিস্তান, আটক এক! কি বলছে ভারতীয় মিডিয়া?

ভারতের ৮ সেনাকে মেরেছে পাকিস্তান, আটক এক! কি বলছে ভারতীয় মিডিয়া?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : প্রথমে পাকিস্তানের পক্ষ থেকে সরকারিভাবে দাবি করা হয়, সার্জিক্যাল স্ট্রাইক হয়নি। ভারতীয় সেনারা নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে পাক সেনার উপরে হামলা চালানোর চেষ্টা করে। পাক সেনা তা আটকায়।

পাক অধিকৃত কাশ্মীরে গিয়ে একের পরে এক জঙ্গি ঘাঁটি ধ্বংস করে দিয়ে এল শ’দেড়েক ভারতীয় সেনা। তাঁদের বাধা দিতে গিয়ে মারা গিয়েছেন দুই পাক জওয়ান। সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের ধাক্কা সামলাতেই বেশ কিছুটা সময় লেগে গিয়েছিল ইসলামাবাদের। ভারতের কৃতিত্বকে খাটো করতে গিয়ে পাক সেনা এবং সেদেশের সংবাদমাধ্যমের পাল্টা যেসব দাবি খাড়া করেছিল, তার বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করে দিল।

প্রথমে পাকিস্তানের পক্ষ থেকে সরকারিভাবে দাবি করা হয়, সার্জিক্যাল স্ট্রাইক হয়নি। ভারতীয় সেনারা নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে পাক সেনার উপরে হামলা চালানোর চেষ্টা করে। পাক সেনা তা আটকায়। তাতে সেদেশের দুই জওয়ানও শহিদ হন।
এর পরেই পাক সংবাদমাধ্যমের একাংশে দাবি করা হয়, অভিযান চালাতে গিয়ে পাকিস্তানি সেনার হাতে আটজন ভারতীয় জওয়ানের মৃত্যু হয়েছে। একজন ভারতীয় সেনাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পাকিস্তানের জনপ্রিয় সংবাদপত্র ‘দ্য ডন’-এর ওয়েবসাইটেও এই দাবি করা হয়। কিছুক্ষণের মধ্যে তারা অবশ্য এই প্রতিবেদন সরিয়ে নিয়ে একটি সম্পাদিত প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সেখানে বলা হয়, একজন ভারতীয় সেনাকে গ্রেফতার করেছে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী। ভারতীয় সেনা অবশ্য তৎক্ষণাৎ এই দাবি খারিজ করে। বিবৃতি জারি করে ভারতীয় সেনা জানিয়ে দেয়, সার্জিক্যাল অ্যাটাকে একজনও ভারতীয় কম্যান্ডো শহিদ হননি। সবাই নিরাপদে ফিরে এসেছেন। তাছাড়া অভিযানে যাওয়া ভারতীয় কম্যান্ডোদের নির্দেশই দেওয়া ছিল, যে কোনও কম্যান্ডো শহিদ হলে তাঁর দেহ যেন বাকিরা ফিরিয়ে নিয়ে আসেন।

তবে সূত্রের খবর, এই অভিযানে দুই ভারতীয় জওয়ান অল্প আহত হয়েছেন। অন্যান্য কম্যান্ডোরাই ওই দুই আহত কম্যান্ডোকে ফিরিয়ে আনেন। তাঁদের চিকিৎসা চলছে। অন্য একটি ঘটনায় একজন ভারতীয় জওয়ান টহলদারির সময়ে ভুলবশত নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে পাকিস্তানের দিকে চলে গিয়েছিলেন। সেই সময়ে তাঁকে গ্রেফতার করে পাক সেনা। এই ঘটনার কথা সরকারিভাবে পাক সেনাকে জানিয়েওছে ভারত। এর সঙ্গে সার্জিক্যাল অ্যাটাকের কোনও যোগ নেই। ভারতীয় সেনাবাহিনীর বক্তব্য, ভুলবশত দু’দেশের সেনা জওয়ান অথবা সীমান্ত লাগোয়া এলাকার অনেক বাসিন্দাই নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে অন্য দেশের ভূখণ্ডে চলে যান। এক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। তাছাড়া কম্যান্ডোবাহিনীর সঙ্গে থাকা ক্যামেরায় গোটা অভিযানের ছবিও তোলা হয়েছে। কয়েকটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্র উদ্ধৃত করে বলেছে, অভিযান চলাকালীন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং সেনাকর্তারা সরাসরি সেই ছবি দেখে পরিস্থিতির উপরে নজর রাখছিলেন। ফলে পাকিস্তানের দাবি নস্যাৎ করার জন্য ভারতের হাতে পর্যাপ্ত প্রমাণ রয়েছে।

উরি হামলার পরে এমনিতেই পাকিস্তানের মুখ পুড়েছিল। ভারতের সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের পরে নিজের দেশেও চাপে নওয়াজ শরিফ। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে পাকিস্তানের দিক থেকে এই পাল্টা আঘাতের আশঙ্কা করেই পঞ্জাব, গুজরাট, জম্মু-কাশ্মীরে নিয়ন্ত্রণরেখা লাগোয়া গ্রামগুলির বাসিন্দাদের অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। পরিস্থিতি পর্যালোচনায় স্বরাষ্ট্র এবং প্রতিরক্ষা দফতরের শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গে আজ আলোচনায় বসবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। পাকিস্তানের দিক থেকে যে কোনও আঘাতের মোকাবিলা করার জন্য প্রস্তুত রয়েছে ভারতীয় সেনা। দেশের ভিতরেও যে কোনও ধরনের নাশকতা আটকাতে বাড়তি সতর্কতা নেওয়া হচ্ছে। এদিন সকাল থেকেই জম্মু-কাশ্মীরের আখনৌর সেক্টরে নিয়ন্ত্রণরেখার ওপার থেকে ভারতীয় সেনাবাহিনীকে লক্ষ্য করে গুলি চালাতে শুরু করেছে পাক সেনা। -এবেলা।
৩০ সেপ্টেম্বর, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে