শুক্রবার, ০৭ অক্টোবর, ২০১৬, ১১:২৫:১৫

হামলার মুখে ভ্যান ফেলে পালাল পুলিশ

 হামলার মুখে ভ্যান ফেলে পালাল পুলিশ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: জেসপ সংস্থার কারখানায় দুষ্কৃতীরাজ! চতুর্থীর রাতে ত্রস্ত দমদমের কমলাপুর। এমনকী, দুষ্কৃতীদের তাড়া খেয়ে টহলদারি ভ্যান ফেলে পালালেন খোদ পুলিশকর্মীরাই। তাতেও রক্ষা মেলেনি। জেসপ থেকে যন্ত্রপাতি লুঠের পথ পরিষ্কার করতে ভ্যানে চলল ভাঙচুর। চেষ্টা হল আগুন লাগানোরও। শেষপর্যন্ত অবশ্য স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রতিরোধে ‘মুখরক্ষা’ হয় দমদম থানার। যদিও বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুলিশি হেনস্থার শিকার হয়েছেন তাঁরাই।

রাজ্য সরকার জেসপ কারখানা অধিগ্রহণ করলেও সেখান থেকে যন্ত্রপাতি চুরি হওয়ায় ছেদ পড়েনি। তবে বুধবার রাতে তা অন্য মাত্রায় পৌঁছে যায়। স্থানীয় সূত্রের খবর, রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ দমদম পুরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে, ৮/২ অরবিন্দ সরণির একটি অ্যাপার্টমেন্টের কাছে দাঁড়িয়ে ছিল পুলিশের টহলদারি ভ্যান। আচমকাই জেসপের ভিতর থেকে ২০-২৫ জনের একটি দল ইট ছোড়ে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, রাত ১০টা নাগাদ দুষ্কৃতীদের কারখানার যন্ত্র পাচার করতে দেখে পুলিশ তাড়া করেছিল। সম্ভবত তারই বদলা নিতে মধ্যরাতের হামলা। যার মুখে চারজন পুলিশকর্মী যশোহর রোডের দিকে ছুট লাগান।

একপাশে কারখানা, অন্য দিকে অ্যাপার্টমেন্ট, বসতবাড়ি। তারই মাঝের রাস্তায় শুরু হয় দুষ্কৃতী-তাণ্ডব। যা শুনে ১০-১৫ জন স্থানীয় বাসিন্দা বেরিয়ে এসে দেখেন, পুলিশ-ভ্যানের সামনের কাচ ভাঙা। সেটির তেলের ট্যাঙ্কের পাইপও খুলে ফেলেছে দুষ্কৃতীরা। স্থানীয় বাসিন্দা এক মহিলার কথায়, ‘‘সকলের মুখই কাপড় দিয়ে ঢাকা ছিল।

একজনকে বলতে শুনলাম, গাড়ি জ্বালিয়ে দেব।’’ বিপদ বুঝে বাসিন্দাদের একাংশ পুলিশকর্মীদের খোঁজে যশোহর রোডের দিকে যান। দুষ্কৃতীরা অবশ্য তাঁদের কিছু বলেনি। এক যুবকের কথায়, ‘‘আমরা কিছুটা দূরে গিয়ে দেখি, পুলিশকর্মীরা আগ্নেয়াস্ত্র হাতে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। বললাম, গুলি চালাচ্ছেন না কেন? ওঁরা জানালেন যে গুলি ভ্যানেই পড়ে রয়েছে!’’
পুলিশের অবস্থা বুঝে দুষ্কৃতীদের হটানোর দায়িত্ব নেন স্থানীয় বাসিন্দারাই। তাঁরা তেড়ে গেলে দুষ্কৃতীরা কিছুটা পিছু হটে। স্থানীয় বাসিন্দারা পাশে দাঁড়ানোয় পুলিশের গলাতেও তখন ফিরেছে জোর। দুষ্কৃতীদের উদ্দেশে এক পুলিশকর্মীকে বলতে শোনা যায়, ‘‘গাড়ির যা ক্ষতি করলি, এর
শোধ নেব!’’

এরপর দমদম থানা থেকে পুলিশবাহিনী এসে স্থানীয় বাসিন্দাদেরই হেনস্থা করেন বলে অভিযোগ। এক মহিলার কথায়, ‘‘সাদা পোশাকের এক পুলিশকর্মী আমার এক প্রতিবেশীকে কলার ধরে চড় মারতে গেলে বাধা দিই। তখন রাস্তায় পড়ে আমার পায়েই চোট লেগেছে।’’ যার প্রেক্ষিতে ভ্যানটি সরানোর সময় স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ বাধা দেন।
সকাল ১১টা নাগাদ দমদম থানায় গেলে আইসি পার্থরঞ্জন মণ্ডলকে পাওয়া যায়নি। মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন কেটে দেন। বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত টেক্সট মেসেজেরও জবাব আসেনি। আর ব্যারাকপুর কমিশনারেটের ডিসি (বেলঘরিয়া) ধ্রুবজ্যোতি দে বলেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। স্থানীয় বাসিন্দাদের হেনস্থার বিষয়টিও আমার জানা নেই। তবে জেসপকে ঘিরে দুষ্কৃতীরাজ যে বড় সমস্যা হয়ে উঠেছে, তা জানি। যত দ্রুত সম্ভব সমাধানের চেষ্টা করছি।’’  

উপ-পুরপ্রধান বরুণ নট্টের প্রতিক্রিয়া, ‘‘বুধবার রাতের ঘটনাটা সত্যিই বাড়াবাড়ি হয়েছে। আমরা খুবই চিন্তিত।’’-এবেলা
০৭ অক্টোবর,২০১৬/এমটি নিউজ২৪ ডটকম/এইচএস/কেএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে