মঙ্গলবার, ১৮ অক্টোবর, ২০১৬, ০২:০১:৩১

যে কারণে হিলারির জয় চান না পুতিন

যে কারণে হিলারির জয় চান না পুতিন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের রিপাবলিকান দলের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ­াদিমির পুতিনের মধ্যে অনেক বিষয়ে বেশ মিল রয়েছে। যদিও তারা দু’জন কখনও সামনাসামনি হননি।

অনেক বিষয়ে সম্মত হওয়ার মধ্যে অন্যতম প্রসঙ্গ ডেমোক্রেটিক প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিলারি ক্লিনটন। উভয়ই হিলারিকে নিয়ে শঙ্কিত।

কারণ ট্রাম্পের জন্য হোয়াইট হাউস দখলের পথে বাধা হিলারি। আর পুতিনের জন্য পররাষ্ট্রনীতির শঙ্কা। হিলারির জয় নিয়ে পুতিনের এত ভয় কেন- তা নিয়ে এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সিএনএন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সম্প্রতি মার্কিন নির্বাচনে রাশিয়ার নাকগলানোর অভিযোগ তুলেছে যুক্তরাষ্ট্র। প্রমাণস্বরূপ বলা হয়েছে, রাশিয়া হিলারিকে প্রেসিডেন্ট হওয়া রুখতে উঠেপড়ে লেগেছে। গত মাসে ডেমোক্রেটিক ন্যাশনাল কমিটির ই-মেইল হ্যাক হওয়ার মাত্র কয়েক ঘণ্টা পরেই রাশিয়ার হ্যাকারদের ফিঙ্গার প্রিন্ট পেয়েছে মার্কিন ইন্টারনেট নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা।

এর পরই হিলারির ক্যাম্পেইন চেয়ারম্যান জন পোডেস্তার নথি হ্যাক করে রাশিয়া। মার্কিন নির্বাচনে রুশ হস্তক্ষেপের একটাই লক্ষ্য- হিলারির ডেমোক্রেটিক দলকে ক্ষতিগ্রস্ত করা।

তবে আসলেই কি হিলারিকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দেখতে চান না পুতিন? সিএনএনের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, হিলারিকে থামানো পুতিনের শুধু কৌশলগত লক্ষ্য নয়, বরং ব্যক্তিগত লক্ষ্য।

ফিরে যাওয়া যাক ২০১১ সালে। এরই মধ্যে ২০০০ ও ২০০৪ সালের নির্বাচনে দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেছেন পুতিন। ২০০৮ সালের নির্বাচনে তার উত্তরসূরি হিসেবে দিমিত্রি মেদভেদেভের শপথ নেয়ার মাত্র দুই ঘণ্টার মাথায় মেদভেদেভ রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পুতিনকে মনোনীত করেন। ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে পুতিন আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দেন, তিনি তৃতীয় মেয়াদের জন্য ২০১২ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।

ফলে ২০১১ সালে যখন পুতিনের দল সংসদ নির্বাচনে জয়লাভ করে, তখন রাজপথে ব্যাপক বিক্ষোভ দেখা দেয়। তৎকালীন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে হিলারি বিক্ষোভকারীদের পক্ষাবলম্বন করেন। তিনি বলেন, রাশিয়ার জনগণ নিরপেক্ষ, স্বাধীন ও স্বচ্ছ নির্বাচন চায়।

পররাষ্ট্রনীতির প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রেও হিলারিকে ভয় পান পুতিন। সাম্প্রতিক কয়েক মাসে যুক্তরাষ্ট্র, ন্যাটো ও ইউরোপীয় ইউনিয়নকে (ইইউ) শাসিয়ে আসছেন তিনি।

পশ্চিমা বিশ্লেষকদের মতে, রাশিয়া এখন পশ্চিমা লিবারেল ডেমোক্রেটিক মডেলকে হেয় করে এবং ট্রান্স-আটলান্টিক সম্পর্কের পতন দেখতে চায়। দেশটি চায় ক্ল্যাসিকাল আন্তর্জাতিক আইনে ফিরে যেতে। এ পথে পুতিনের বাধা হিলারি। কারণ যুক্তরাষ্ট্র, ন্যাটো ও ইউরোপকে দমন করে রাশিয়া চায় সাবেক সোভিয়েত অঞ্চলগুলোতে প্রভাব বিস্তার করতে।

রাশিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্টের দেনদরবারের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ইস্যু হতে পারে ক্রিমিয়ার আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি। কিন্তু আদর্শিক কারণেই হিলারি চাইবেন ক্রিমিয়া একদিন না একদিন ইউক্রেনেই প্রত্যাবর্তন করুক। এ ক্ষেত্রে ট্রাম্পের পররাষ্ট্রনীতির সঙ্গে মিত্রতা রয়েছে পুতিনের।

এদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিসেবে হিলারি আবারও মস্কোর ঘুম হারাম করে দিয়েছেন। কারণ তিনি মধ্যপ্রাচ্যের সিরিয়ায় মানবিক নো-ফ্লাই জোন চালুর দাবি তুলেছেন। রাশিয়ার বিশ্লেষকদের বিশ্বাস, সিরিয়ায় সরকার পরিবর্তনে এটা আরেকটি অজুহাত মাত্র। অথচ পুতিন সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদকে রক্ষায় দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। -সিএনএন, যুগান্তর।
১৮ অক্টোবর, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে