আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতের জম্মু ও কাশ্মীর বিধানসভায় একজন স্বতন্ত্র সদস্য ইঞ্জিনিয়ার রশিদকে সভার ভেতরেই তুমুল মারধর ও হেনস্থা করেছেন রাজ্যে ক্ষমতাসীন দল বিজেপির বিধায়করা। তার অপরাধ, তিনি বুধবার শ্রীনগরের এমএলএ হোস্টেলের লনে একটি বিফ পার্টি বা গরুর মাংস পার্টির আয়োজন করেছিলেন।
মুসলিম-প্রধান ওই রাজ্যে বিফ বা গোমাংস নিষিদ্ধ করার আইন বলবৎ করা উচিত কি না, তা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে এখন শুনানি চলছে। এরই মধ্যে বিধায়ককে প্রকাশ্যে হেনস্থার ঘটনা ঘটল – যার জন্য বিজেপি এখনও দু:খ প্রকাশ পর্যন্ত করেনি। তবে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও বিরোধী নেতা দুজনেই অবশ্য এই মারধরের তীব্র নিন্দা করেছেন।
শ্রীনগরের বিধানসভার সদস্য ইঞ্জিনিয়ার রশিদকে মারধরের যে ঘটনা নিয়ে বৃহস্পতিবার সারা ভারতে তোলপাড় পড়ে গেছে, হাজার হাজার মানুষ ইউটিউবে ওই মারধরের ভিডিও দেখে ফেলেছেন – তার সূত্রপাত আসলে বুধবার বিকেলে।
বিফ বা গরুর মাংসের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রতিবাদে এমএলএ হোস্টেলের লনে সেদিন একটি বিফ পার্টির আয়োজন করেছিলেন বিধায়ক রশিদ। পার্টিতে বিলি করা হয়েছিল গরুর মাংসের তৈরি শিককাবাব আর বিফ প্যাটি।
রশিদ ওই পার্টিতে ঘোষণা করেন, ‘রাজ্য বিধানসভা গোল্লায় যাক - তারা গোমাংস নিষিদ্ধ করার বিরুদ্ধে বিল পাস করাক বা না-করাক তাতে আমার কিচ্ছু যায় আসে না। এই পার্টি থেকে আমি একটাই বার্তা দিতে চাই – আমার ধর্ম আমাকে যে অধিকার দিয়েছে সেখানে আমি বিধানসভা বা আদালতের হুকুম শুনতে রাজি নই!’
এর মাত্র দুদিন আগেই সুপ্রিম কোর্ট জম্মু ও কাশ্মীরে বিফ-নিষেধাজ্ঞার ওপর দুমাসের জন্য স্থগিতাদেশ জারি করেছিল। এই নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে আনা একটি বিল নিয়ে বিধানসভায় এদিন আলোচনারও কথা ছিল।
তবে বৃহস্পতিবার অধিবেশন শুরু হতে না হতেই দেখা যায়, বিজেপি-র চার পাঁচজন বিধায়ক ইঞ্জিনিয়ার রশিদের সাথে বাক-যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েন। কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে তা রুপ নেই হাতাহাতিতে।
বিব্রত মুখ্যমন্ত্রী মুফতি মোহাম্মদ সাঈদ বলেন, এভাবে কোনও বিধায়ককে হেনস্থা করা যায় না। তিনি শরিক বিজেপি-কে তাদের ভুল স্বীকার করতেও আহ্বান জানান।
বিজেপি নেতা ও উপ-মুখ্যমন্ত্রী নির্মল সিং যদিও বলেছেন সভায় যা ঘটেছে তা তিনি সমর্থন করেন না – তবে পাশাপাশি বিফ পার্টি আয়োজন করার জন্য তিনি রশিদের সমালোচনা করতেও ছাড়েননি।
৯ অক্টোবর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এসএস/এসবি