আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয় নিশ্চিত হয়ে যাওয়ার পর থেকেই ভারতে তার সমর্থকরা উল্লাসে ফেটে পড়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে হাত মিলিয়ে তিনি সারা দুনিয়ায় সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেবেন বলেই বহু ভারতীয় আশা করছেন - পাশাপাশি ট্রাম্প জমানায় ভারত লোকবল, সফটওয়্যার ও অন্যান্য পণ্যসামগ্রী আমেরিকায় রফতানি করতে সমস্যায় পড়বে বলেও অনেকে আশঙ্কা করছেন।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নিজে টুইটারে তার অভিনন্দন বার্তায় বলেছেন, প্রচারণার সময় যেভাবে ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের প্রতি বন্ধুত্বের কথা বারবার বলেছেন তার জন্য বিশেষ ধন্যবাদ।
আমেরিকায় এ বছরের তিক্ত নির্বাচনী প্রচারণার সময় রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প যেভাবে সরাসরি নাম করে ভারতীয় হিন্দুদের সমর্থন চেয়েছিলেন এবং তাদের দিকে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন তা ছিল নজিরবিহীন।
বহু ভারতীয় বংশোদ্ভূত আমেরিকান তাতে সাড়া দিয়েছেন, এবং ভারতেও বেশ কয়েকটি হিন্দু সংগঠন ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থনে পথে নেমেছিল। এমন কি তার জয় কামনা করে রাজধানী দিল্লির রাস্তায় পুজো এবং যজ্ঞ পর্যন্ত হয়েছিল।
ডোনাল্ড ট্রাম্পই যে 'বিশ্ব মানবতার একমাত্র রক্ষক', আজ ভারতে তার সমর্থকরা সে কথা বলতেও দ্বিধা করছেন না। আসলে ডোনাল্ড ট্রাম্প যেভাবে প্রকাশ্যে নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে হাত মিলিয়ে কাজ করার কথা বলেছেন, ইসলামী সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন ভারতে সেটাই তার অসংখ্য ভক্ত তৈরি করেছে।
দিল্লির অভিজাত খান মার্কেটে দোকানি শ্যাম আহুজার যেমন বলতে কোনও দ্বিধা নেই, "মি ট্রাম্পের জয়ে আমি খুশি - কারণ আমি মনে করছি উগ্রপন্থার বিরুদ্ধে লড়াই এখন একটা নতুন মাত্রা নেবে। ডোনাল্ড ট্রাম্প, মোদি আর রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন এই তিনজন মিলে উগ্রপন্থাকে এবার ঠাণ্ডা করে দেবেন বলেই আমার আশা।"
দিল্লির তরুণ-তরুণীরাও মি ট্রাম্পের জয়ে খুশি - আর কারণ একটাই, তিনি মোদির প্রশংসা করেছিলেন।
হিলারি ক্লিনটনের পরাজয়েও অনেকের হেলদোল নেই, তবে বারাক ওবামা-র শাসন যে ফুরোল এটা ভারতে অনেককে বিষণ্ণ করছে।
তবে শিল্প ও বাণিজ্যের খাতে ভাবী মার্কিন প্রেসিডেন্ট যেভাবে মার্কিন স্বার্থ রক্ষার কথা বলেছেন সেটা ভারতে অনেককেই দুশ্চিন্তায় রেখেছে।
ভারত থেকে যারা অমেরিকায় পণ্য রফতানি করেন বা নানা সামগ্রী বেচেন, রাজেন্দ্র সাক্সেনা তাদেরই একজন।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের 'প্রোটেকশনিজম' নীতি নিয়ে তিনি চিন্তিত - এবং ভারতের রফতানি ও শেয়ার বাজারের জন্য এটা সুখবর নয় বলেই তার ধারণা।
গবেষক আমন মালিকও বলছিলেন, "এখন ভারতের জন্য দেখার বিষয় হল অভিবাসন নিয়ে মি ট্রাম্প কি অবস্থান নেন। তবে গত তিরিশ বছরের পরিসংখ্যান দেখলে দেখা যাবে বাণিজ্যের জন্য বারাক ওবামার জমানাই ভারতের জন্য সবচেয়ে খারাপ ছিল - ফলে ডেমোক্রেটরা ভারতের জন্য ভাল বা রিপাবলিকানরা খারাপ এভাবে সাদা-কালোয় কিছু বলা যায় না।"
তবে সেটা আরও পরের কথা - ডোনাল্ড ট্রাম্প যেভাবে হিন্দুদের ভালবাসার কথা বলেছেন, ভারতকে ভালবাসার কথা বলেছেন এ দেশ এখন সেটাই সেলিব্রেট করতে ব্যস্ত।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও বলছেন - মি ট্রাম্পের শাসনে ভারত-মার্কিন সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দেওয়ার দিকেই তিনি তাকিয়ে আছেন। বিবিসি
৯ নভেম্বর ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এসএস/এসবি