আন্তর্জাতিক ডেস্ক : গুয়াতেমালায় ভূমিকম্পের পর ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িঘরে লুটপাটের অভিযোগে পাঁচজনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। পুলিশের মুখপাত্র সিজার মাতেও শুক্রবার রাতে এএফপি সংবাদ সংস্থাকে জানান, ভূমিকম্পের পর ক্ষতিগ্রস্ত লোকজন আশ্রয়কেন্দ্রে বা আত্মীয়দের বাড়িতে আশ্রয় নেন। এ সময় অনেক এলাকা বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন ছিল। রাতের অন্ধকারের সুযোগ নিয়ে অভিযুক্তরা লুটপাট করেছেন বলে অভিযোগ তোলা হয়।
পরে বাসিন্দারা সংঘবদ্ধ হয়ে অভিযুক্তদের পিটিয়ে হত্যা করে। সিজার মাতেও বলেন, ‘যদিও এটা সত্য যে ডাকাতি অবৈধ, তেমনি গণপিটুনিও একটি অপরাধ।’
গুয়াতেমালার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, সান্তা মারিয়া দে জেসুস পৌরসভার বাসিন্দারা বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ওই ব্যক্তিদের খুঁজে বের করেন। এর আগে ডাকাতি ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে।
তিনি আরও বলেন, অভিযুক্তদের মারধরের শিকার হওয়ার খবর শুনে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ সেখানে যায়। তারা তাদের আটক করে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টাও করে। কিন্তু কর্তৃপক্ষকে অবরুদ্ধ করে ফেলে বাসিন্দারা। এরপর রাজধানীর দক্ষিণ-পশ্চিমে সাকাতেপেকেজ বিভাগে অবস্থিত সম্প্রদায়ের বাসিন্দারা লাঠি ও পাথর দিয়ে অভিযুক্তদের পিটিয়ে এবং পুড়িয়ে হত্যা করে।
৫.৭ মাত্রার ভূমিকম্পের ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ছিল সান্তা মারিয়া দে জেসুস। মঙ্গলবারের ভূমিকম্পের পর গুয়াতেমালাজুড়ে কমপক্ষে সাতজন নিহত হয়েছেন।
গুয়াতেমালায় অপরাধীদের বিচার বিলম্ব করার অভিযোগ রয়েছে। এর ফলে সহিংসতা, গণপিটুনি বারবার ঘটছে।
স্থানীয় একটি নাগরিক সমাজ সংস্থার মতে, ২০০৮ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে দেশে গণপিটুনিতে ৩৬১ জন নিহত এবং ১,৩৯৬ জন আহত হয়েছেন।
এদিকে ভূমিকম্পের ফলে আদিবাসী মায়ান সম্প্রদায়ের আবাসস্থল সান্তা মারিয়া ডি জেসাস এখনো বিদ্যুৎবিহীন। অন্যদিকে ভূমিধসের কারণে রাস্তাঘাটও ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় শহরটি একপ্রকারের বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। পরিস্থিতি উত্তরণে বাসিন্দাদের সাহায্য করার জন্য সরকার সান্তা মারিয়া ডি জেসাসে মানবিক সহায়তা পাঠিয়েছে বলে জানা গেছে।