বৃহস্পতিবার, ১০ নভেম্বর, ২০১৬, ০১:৪০:৫৭

যে কারণে হিলারি এখনও প্রেসিডেন্ট হতে পারেন!

যে কারণে হিলারি এখনও প্রেসিডেন্ট হতে পারেন!

মাহবুবুল আলম : সব জল্পনা-কল্পনা ও জনমত জরিপকে পেছনে ফেলে যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট হওয়ার দ্বারপ্রান্তে রিপাবলিকান ডোনাল্ড ট্রাম্প। তারপরও এখনও নিবু নিবু করে জ্বলছে হিলারি ক্লিনটনের প্রেসিডেন্ট হওয়ার সম্ভাবনা। আর এমনটা হলে পৃথিবীর সবচেয়ে বিষ্ময়কর ঘটনা হবে সেটি। তবে ট্রাম্প বলেই জল্পনাটা মাথাচড়া দিয়ে উঠছে বেশি।

আগে আলোচনা করে নেওয়া ভালো মার্কিন নির্বাচন পদ্ধতি। মার্কিন নির্বাচনে জনগণ ভোট দিলেও প্রার্থীর জয় পরাজয় নির্ভর করে ইলেক্টোরাল ভোটের ওপর। কোনো রাজ্যে যে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী বেশি ভোট পান সেই রাজ্যের সব ইলেক্টোরাল ভোট সেই প্রার্থীর মনোনীত ইলেক্টোরাল কলেজের পকেটেই জমা হয়। আমেরিকার ৫০ রাজ্যে ৪৩৫টি ইলেক্টোরাল ভোটের পাশাপাশি ডিস্ট্রিক্ট অব কলম্বিয়ার থেকে ৩টি ইলেক্টোরাল ভোট নিয়ে মোট ৪৩৮টি। এর বাইরে ১০০ জন সিনেটরের ভোট। সব মিলিয়ে ৫৩৮ ইলেক্টোরাল ভোট। তবে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় সিনেটের এক-তৃতীয়াংশ আসনেরও নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। কারণ প্রতি দুই বছর অন্তর সিনেটের এক-তৃতীয়াংশ আসন খালি হয়। এবার যেমন ৩৪টি আসনে সিনেটের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাকি ৬৬টি সিনেটর আগে থেকে নির্বাচিত ছিল। আর এই সব মিলিয়েই কিন্তু ২৭০টি ভোট পেলেই তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। যেভাবে এখন ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচিত হয়েছেন।

সমস্যা থেকে গেছে আবার এখানেই। কারণ ট্রাম্প নির্বাচিত হয়েছেন বেসরকারিভাবে, সরকারিভাবে নয়। সরকারি ফল ঘোষণার আগে সারা দেশের সব ইলেক্টোরাল কলেজ এক জায়গায় জমায়েত হয়ে তাদের প্রার্থীদের পক্ষে-বিপক্ষে ভোট দিতে পারবেন। সেটা গণনা করা হয়, সার্টিফাই করা হয়, তারপর সরকারি ফল ঘোষিত হয়। এখন প্রশ্ন হলো, একজন প্রার্থীর মনোনীত ইলেক্টোরাল কলেজ কি আনুষ্ঠানিক সরকারি ভোটের সময় তার বিরুদ্ধে ভোট দিতে পারে? বাস্তবে হয় না, তবে সাংবিধানিকভাবে এটা সম্ভব। এক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কাউকে ভোট দেয়ার জন্য তারা বাধ্য নন। অর্থাৎ ট্রাম্পের ইলেক্টোরাল কলেজ ভোট দিয়ে হিলারি ক্লিনটনকে জিতিয়ে দিতে পারে! আর সেই ভোটটা তারা দেবেন আগামী ১৯ ডিসেম্বর। এরপরই ট্রাম্প যে প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন সেটা নিশ্চিত হওয়া যাবে।

অবশ্য ইতিহাসে এমন ঘটনা ঘটেছে কি না এ ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যায়নি, তবে অতীতে কোনো সময় হলে হয়েও থাকতে পারে! কিন্তু বিষয়টা এখন আলোচনায় আসছে, কারণ নির্বাচনের প্রার্থীতা ঘোষণার পর থেকে বিভিন্ন ইস্যুতে বক্তব্য দিয়ে তিনি সমালোচিত হয়েছেন। এ কারণে তার ধর্ম বিশ্বাস নিয়েও প্রশ্ন তোলেন খোদ পোপ ফ্রান্সিস। তার দলের অনেক নেতাই আগেই মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন তার দিক থেকে। ভোট না দিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুলেছেনও কেউ কেউ। তাই চূড়ান্ত নির্বাচনে তার দলের নেতারা (ইলেক্টোরাল কলেজ) তাকে (ট্রাম্প) যে ভোট দেবেন তার কি নিশ্চয়তা আছে!

তাছাড়া, ট্রাম্প বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হওয়ার পরপরই যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন রাজ্যে ট্রাম্পবিরোধী আন্দোলন করতে দেখা গেছে আমেরিকানদের। এর মধ্যে আবার এক ধাপ এগিয়ে ক্যালিফোর্নিয়া। ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র থেকে ক্যালিফোর্নিয়ার আলাদা হওয়ার দাবি তুলেছেন স্টেটের বাসিন্দারা। তাই কোনো কিছু নিশ্চিত করে বলা কি আদৌও সম্ভব।

আর যদি কোনো অঘটনের জন্ম না দিয়ে ট্রাম্পই প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন, তাহলে আগামী ২০ জানুয়ারি ৪৫তম মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতায় বসবেন নিউইয়র্কের এই ব্যবসায়ী। -বিডিপ্রতিদিন।
১০ নভেম্বর, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে