আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে গত ৯ অক্টোবর থেকে অভিযান চালাচ্ছে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী। এই অভিযানে ব্যাপক সংখ্যক রোহিঙ্গা মুসলিম নিহত হয়েছে। যার মধ্যে ৬৯ জন নিহত হওয়ার খবর স্বীকার করেছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী।
তবে এই অভিযানকালে অনেক রোহিঙ্গা নারী ও কিশোরীদেরকে মিয়ানামারের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা নির্যাতন করেছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
নিরাপত্তা বাহিনী বাংলাদেশ সীমান্ত সংলগ্ন মংগডু এলাকা অবরুদ্ধ করে গানশিপ, সাঁজোয়া যানসহ চিরুনি অভযান চালাচ্ছে। সেখানে সংবাদমাধ্যম ও মানবাধিকার কর্মীদের রোহিঙ্গা নিপীড়নের অভিযোগ স্বাধীনভাবে তদন্ত করতে যেতে দিচ্ছে না। ফলে ব্যাপকহারে নারী নির্যাতনের ঘটনাগুলো অনেকটাই ধামাচাপা পড়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
তবে নিরাপত্তা বাহিনীর ব্যাপক নিয়ন্ত্রণের মধ্যেও রোহিঙ্গা নারীদের উপর পরিচালিত ভয়াবহ নির্যাতনের কিছু কিছু চিত্র পাবলিক ডোমেইনে প্রকাশ পাচ্ছে।
এরমধ্যে অডিও শেয়ারের জনপ্রিয় সামাজিক মাধ্যম সাউন্ডক্লাউডে ৪০ সেকেন্ডের একটি ক্লিপে একজন নির্যাতিত রোহিঙ্গা নারী নিপীড়নের বিভীষিকার কথা তুলে ধরেছেন।
ওই নির্যাতিতা রোহিঙ্গা নারী মংগডুর উত্তরাঞ্চলীয় গ্রাম কিয়েত ইয়োয়ি পিন গ্রাম নিবাসী। অডিওতে তিনি স্থানীয় ভাষায় নির্যাতনের বর্ণনা দেন।
তিনি বলেন, হে আমার ভাইয়েরা তোমাদের উপর শান্তি বর্ষিত হোক। আমি আমাদের গ্রামের বাড়ি থেকে আমার ভাইদের উদ্দেশ্যে বলছি। তারা (মিয়ানমার সেনা) আমাদের ধরে একটি ভবনে নিয়ে যায়। সেখানে তারা আমাদের কাপড়ের ভেতরে হাত ঢুকিয়ে দিয়ে আমাদের নিপীড়ন করে। তারা আমাদের ঘরটির ভেতরে নিয়ে গিয়ে নির্যাতন করে।
তিনি আরও বলেন, মিয়ানমার সেনারা রোহিঙ্গা তরুণীদের ঘরের ভেতরে ধরে নিয়ে নির্যাতন করে। তারপর সেনারা একে একে ঘরটি থেকে বেরিয়ে আসে।
নিপীড়নের এমন বর্ণনা দিয়ে ওই নারী বলেন, 'এমন পরিস্থিতিতে আমরা এই দেশে কিভাবে থাকব?'
প্রসঙ্গত, শুক্রবার জাতিসংঘ জানিয়েছে, রাখাইনে সেনা অভিযানে অনেকে রোহিঙ্গা মুসলমান নিহত হয়েছেন এবং মাত্র এক সপ্তাহে ৩০ হাজারের বেশি মানুষ তাদের ঘরবাড়ি ছাড়তে বাধ্য হয়েছে।
এরমধ্যে সেনা অভিযানে শুধুমাত্র ১২ ও ১৩ নভেম্বর ১৫ হাজার রোহিঙ্গা তাদের বাড়ি থেকে পালাতে বাধ্য হয়েছেন।-কালেরকন্ঠ
এ প্রেক্ষাপটে শুক্রবার বাংলাদেশসগ পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর কাছে জাতিসংঘ তাদের সীমান্ত খুলে দিয়ে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
১৯ অক্টোবর ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/হাবিব/এইচআর