বুধবার, ২৩ নভেম্বর, ২০১৬, ০৬:৪১:০৯

রোহিঙ্গা ইস্যু: বিজিবি-বিজিপির বৈঠক আজ

রোহিঙ্গা ইস্যু: বিজিবি-বিজিপির বৈঠক আজ

জামাল উদ্দিন ও শেখ শাহরিয়ার জামান: পুলিশের (বিজিপি) আঞ্চলিক কমান্ডার পর্যায়ে কক্সবাজারে বৈঠক হচ্ছে আজ। দুই দেশের সীমান্ত স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে এ বৈঠকে আলোচনা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশের বর্তমান রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হবে কিনা, এখনই বলতে চাননি বিজিবির কর্মকর্তারা। তারা বলছেন, এটি একটি পরিচিতিমূলক বৈঠক।রোহিঙ্গা ইস্যুতে আলোচনার বিষয়টি মিয়ানমারের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ওপর নির্ভর করবে। 

বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চলের (চট্টগ্রাম) কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল খন্দকার ফরিদ হাসানের আমন্ত্রণে মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) আঞ্চলিক কমান্ডার সন লুইন আজ (বুধবার) সকালে টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করবেন।

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফরিদ হাসান বলেন, ‘সন লুইন গত মাসে মিয়ানমারের ওই অঞ্চলের দায়িত্ব নিয়েছেন। এজন্য গত মাসেই তার সঙ্গে পরিচিত হওয়ার জন্য একটি চিঠি দেই। চিঠি পাওয়ার পর তিনি আমার আমন্ত্রণ গ্রহণ করে প্রথমে স্থানীয় সীমান্তের গুন্দুং ব্রিজের কাছে দেখা করতে চান।’

গত সপ্তাহে সন লুইন বিজিবির রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফরিদ হাসানকে জানান, তিনি বাংলাদেশের টেকনাফ এবং কক্সবাজার পরিদর্শন করতে চান।

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফরিদ হাসান বলেন,‘তার প্রস্তাবে আমরা সম্মতি দিয়েছি।  বুধবার সকালে তিনি টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করবেন এবং কক্সবাজারে তার সৌজন্যে দেওয়া মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেবেন।’

মিয়ানমারের রোহিঙ্গা ইস্যুতে দুপক্ষের মধ্যে কোনও আলোচনা হবে কিনা জানতে চাইলে ব্রিগেডিয়ার ফরিদ বলেন, ‘এটি একটি সৌজন্য সাক্ষাত। এ সাক্ষাতে কোন বিষয়ে আলোচনা হবে, আগে থেকে তা নির্ধারিত করা হয়নি। পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে হয়তো বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হতে পারে। তবে এটি নির্ভর করবে মিয়ানমার পক্ষের ইচ্ছার ওপর।’

এ ধরনের বৈঠক দুপক্ষের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক তৈরিতে প্রভাব ফেলে কিনা জানতে চাইলে রিজিয়ন কমান্ডার ফরিদ বলেন, ‘অবশ্যই এর একটি ইতিবাচক প্রভাব রয়েছে।’ সীমান্তের বর্তমান পরিস্থিতি জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশের আশঙ্কা অনেক বেশি। এর জন্য আমরা বাড়তি সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি।’

গত মাসে মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে সীমান্তের একটি পুলিশ চৌকিতে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের আক্রমণে বিজিপির চার সদস্য মারা যাওয়ার পর, সেদেশের সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের ওপর প্রতিশোধমূলক দমন পীড়ন শুরু করে।  সেনা  অভিযানে এ পর্যন্ত প্রায় একশো রোহিঙ্গা নিহত হয়েছেন। এছাড়া, সহস্রাধিক ঘরবাড়ি ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে বলে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক কমিশনার এ তথ্য জানিয়েছেন।

গত ১৭ নভেম্বর জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের এক বৈঠকে সদস্যরা মিয়ানমার পরিস্থিতির চরম নিন্দা জানিয়েছেন। বৈঠকে মিয়ানমারে সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘন, হত্যা, ও  নির্যাতনের প্রতিবাদ জানায় যুক্তরাষ্ট্র । যুক্তরাজ্য, রাশিয়া, জাপান, সেনেগাল ও মিশরসহ কয়েকটি দেশ মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে মানবিক সাহায্য দেওয়ার ইচ্ছার কথা জানিয়েছে।

মিয়ানমারের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে আসিয়ানের সদস্য মালেয়েশিয়া চরম উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। রোহিঙ্গা নির্যাতন বিষয়ে জানতে চাইলে মিয়ানমারে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত অনুপ চাকমা বলেন,‘রাখাইন সীমান্ত সবসময় অস্থিতিশীল হয়ে থাকুক, সেটাই চায় একটি স্বার্থান্বেষী মহল।

সীমান্ত দিয়ে মিয়ানমার থেকে অস্ত্র ও মাদক চোরাচালান এবং মানব পাচারসহ বিভিন্ন অপরাধ কর্মকাণ্ড হয়ে থাকে। সীমান্ত অস্থিতিশীল থাকলে এসব অপরাধ করতে ওই মহলটির সুবিধা হয়।’ তিনি আশা করেন,‘দুদেশের সরকার এ ধরনের অপকর্ম বন্ধে উদ্যোগ নিতে পারে।’-বাংলাট্রিবিউন

২৩ নভেম্বর, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সবুজ/এসএ

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে