আন্তর্জাতিক ডেস্ক: এক বছরেরও কম সময় আগে মিয়ানমারের নির্বাচনে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার জয়ী অং সান সুচির দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) ঐতিহাসিক জয় পায়। ধারণা করা হচ্ছিল, এ জয়ে পূর্ণাঙ্গ গণতন্ত্রের দিকে ধাবিত হবে দেশ। তবু এখনও সেখানে মানবাধিকারের সমতায় কোনো অগ্রগতি হয়নি। দেশটিতে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে নিপীড়িত সংখ্যালঘু গোষ্ঠী রোহিঙ্গারা। জাতীয় নিরাপত্তার নামে তাদের ওপর অকথ্য নির্যাতন চালানো হচ্ছে।
শুক্রবার লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমসের ‘রোহিঙ্গা নির্যাতন কবে বন্ধ হবে’ শিরোনামে এক সম্পাদকীয়তে এসব মন্তব্য করা হয়েছে।
গত মাসে রাখাইন রাজ্যের মংডু শহরের তিনটি সীমান্ত ফাঁড়িতে দুর্বৃত্ত হামলায় ৯ পুলিশ সদস্য নিহত হওয়াকে কেন্দ্র করে ফের রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন শুরু হয়। মিয়ানমারের তথ্য মন্ত্রণালয়ের বিবৃতি ও দুই হামলাকারীকে জিজ্ঞাসাবাদের পর জানা গেছে, রাখাইন রাজ্যের দখল নিতে জঙ্গিগোষ্ঠীরা এ হামলার ছক তৈরি করে। তবে মানবাধিকার সংস্থা ও সংবাদমাধ্যমগুলো এ খবরের সত্যতা নিশ্চিত করতে পারেনি।
মিয়ানমার সরকারের পুলিশ সদস্যের ওপর হামলার জবাব দেয়ার অধিকার রয়েছে। তবে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নিপীড়নের পদক্ষেপের নিন্দা জানাচ্ছে মানবাধিকার গোষ্ঠী ও জাতিসংঘের বর্তমান এবং সাবেক কর্মকর্তারা।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের মতে, সেখানে প্রায় শতাধিক মানুষ নিহত ও ১ হাজার ২৫০ ঘরবাড়ি ও অন্যান্য স্থাপনা জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে। লুণ্ঠন, হত্যা করা হচ্ছে। কোনো গোষ্ঠী বলছে, সেনাবাহিনী তাদের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দিচ্ছে। জীবন বাঁচাতে তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সমুদ্র পাড়ি দিয়ে মালয়েশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে পাড়ি জমাচ্ছে।
তবে অধিকাংশই সীমান্ত পার হয়ে বাংলাদেশে ঢুকে পড়ছে। কেউ আশ্রয় নিচ্ছে শরণার্থী শিবিরে। কেউ আবার পাহাড়ের গহীনে ঘর বানিয়ে বসবাস করছে। আবার এ জনগোষ্ঠী সুযোগ পেলেই চট্টগ্রাম শহরে ঢুকে পড়ছে।
রাখাইন রাজ্যের এ সংঘাত-সহিংসতা পরিস্থিতি নিরসনের লক্ষ্যে সাবেক জাতিসংঘের মহাসচিব কফি আনানের নেতৃত্বে কমিশন গঠন করেন সুচি। তাতেও কোনো ফল পায়নি রোহিঙ্গারা। ওই কমিশন সম্প্রতি ঘটনায় এক বিবৃতিতে জানায়, সাম্প্রতিক এ ঘটনার কারণে জরুরি এ চ্যালেঞ্জটি সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন। তবে এখন পর্যন্ত এ কথার মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে কমিশন।
২৬ নভেম্বর,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এআর