মঙ্গলবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০১৬, ০৯:০০:০৬

পাকিস্তানি ‘লাল গোলাপের’ আঘাতে লণ্ডভণ্ড ভারত, নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১০, ঘরছাড়া ১০ হাজার

পাকিস্তানি ‘লাল গোলাপের’ আঘাতে লণ্ডভণ্ড ভারত, নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১০, ঘরছাড়া ১০ হাজার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ১২০ কিলোমিটার বেগে ভারতের চেন্নাইয়ে আছড়ে পড়ল ঘূর্ণিঝড় ‘ভরদা’। বঙ্গোপসাগর থেকে প্রবল শক্তি সঞ্চয় করে ঘূর্ণিঝড় ‘ভরদা’ ভারতের উত্তর তামিলনাড়ু ও দক্ষিণ অন্ধ্রপ্রদেশের ওপর দিয়ে বয়ে যায়। এখনও পর্যন্ত ঝড়ের দাপটে দশজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।  ঘরছাড়া প্রায় দশ হাজার মানুষ।

রবিবার তামিলনাড়ুর উপকূলীয় অঞ্চল ও চেন্নাইয়ে প্রবল বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়া শুরু হয়। চেন্নাইয়ের পাশাপাশি এর প্রভাব পড়েছে অন্ধ্রপ্রদেশ ও পুডুচেরিতে। ঝড়ের গতি ও শক্তির দিকে খেয়াল রেখে রাজ্য প্রশাসন আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিল। ঝড়ের দাপটে উপড়ে পড়ে গাছপালা, বিদ্যুতের খুঁটি। ভেঙে পড়ে বেশ কয়েকটি বাড়ি। আগেই উপকূলবর্তী এলাকা থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল মানুষজনকে। আগে থেকেই তত্পর ছিল প্রশাসন।

অন্ধ্রপ্রদেশ ও তামিলনাড়ু উপকূলে নৌ বাহিনীর দুটি জাহাজ প্রস্তুত রাখা হয়। ব্যবস্থা করা হয় চিকিৎসক, ওষুধ, কম্বল, খাবারের। বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে চেন্নাইয়ে। শহরের বিস্তীর্ণ এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়।

চেন্নাইয়ে সকল বিমান যাত্রা বাতিল করা হয়েছে। এছাড়া অভ্যন্তরীণ রুটে চলাচলকারী ট্রেনের যাত্রাও বাতিল করা হয়েছে। এর আগে তামিলনাড়ু ও অন্ধ্রপ্রদেশে জারি করা হয় হাই অ্যালার্ট।

জানা গেছে, উপকূলবর্তী এলাকা থেকে রোববারই ১৬ হাজার লোককে নিরাপদে উদ্ধার করে আনার জন্য শিবালিক ও কদমত নামে নৌবাহিনীর দুটি জাহাজকে পাঠানো হয়েছে। জাহাজে রয়েছে পানি, খাবার ও কম্বল। রয়েছে চিকিৎসক ও ডুবুরি দল।

টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ঝড়ে চেন্নাইয়ে সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে এক শিশু ও চার নারী রয়েছে। সোমবার চেন্নাইয়ে ১০ সেন্টিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। তামিলনাড়ু সরকার সমস্ত জেলা প্রশাসন ও স্থানীয় প্রশাসনকে সতর্ক থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়।

অপরদিকে, চেন্নাইবাসীদের ঘরে থাকার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। চেন্নাই, কাঞ্চিপুরম এবং উপকূলীয় জেলা ভিল্লুপুরমের সব স্কুল ও কলেজ এ দিন বন্ধ রাখা হয়েছে। বিকেলের দিকে ঝড়ের গতি আস্তে আস্তে কমতে শুরু করে।

পরিস্থিতির মোকাবিলায় তামিলনাড়ু ও পুডুচেরিতে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর ৮টি দল এবং অন্ধ্রপ্রদেশে ৬টি দল মোতায়েন করা হয়। অন্ধ্রপ্রদেশ সরকার নেল্লোর ও প্রকাশম জেলায় চূড়ান্ত সতর্কতা জারি করেছে। কিন্তু ঝড় ভারতে আছড়ে পড়লেও তার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে পাকিস্তানের নাম।

আন্তর্জাতিক আবহাওয়া সংস্থার নিয়ম অনুযায়ী, ভারত মহাসাগর অঞ্চলে কোনো ঘূর্ণিঝড়ের সৃষ্টি হলে তার নামকরণ করে ভারত, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান, তাইল্যান্ড, মলদ্বীপ, মায়ানমার এবং ওমান। এই দেশগুলির দেয়া নামের তালিকা থেকেই একটি করে নাম বেছে নেওয়া হয়।

যেমন গতবার ভারতের চেন্নাইতে যে ঘূর্ণিঝড় এসেছিল ওমান তার নাম দিয়েছিল ‘নাদা’। আর এবারের ঝড়ের নাম ‘ভরদা’ দিয়েছে পাকিস্তান। ‘ভরদা’-র অর্থ হলো ‘লাল গোলাপ’।

এর আগেও পাকিস্তান ঘূর্ণিঝড়ের নাম দিয়েছে। যেমন— ফানুস, নীলম, লায়লা, তিতলি, বুলবুল।
১৩ ডিসেম্বর, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে