বুধবার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১০:০৮:২৬

ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের বিশ্ব তৎপরতা শুরু, আতঙ্কে ভীত ইসরায়েল

ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের বিশ্ব তৎপরতা শুরু, আতঙ্কে ভীত ইসরায়েল

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু আরও আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপের আশঙ্কা করছেন বলে জানিয়েছেন। এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এই কথা জানিয়েছে ইসরায়েলি প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম হারেৎজ।  তারা জানিয়েছে, বসতি স্থাপনবিরোধী প্রস্তাব পাশের পর এবার স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের আন্তর্জাতিক তৎপরতা শুরু করতে পারে যুক্তরাষ্ট্র, এই আশঙ্কায় ভীত ইসরায়েল।

গত শুক্রবার ১৫ সদস্যবিশিষ্ট জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ফিলিস্তিনে ইসরায়েলুই বসতি নির্মাণ বন্ধে একটি প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়। ওই প্রস্তাবে বলা হয়, ‘১৯৬৭ সাল থেকে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েল যে বসতি স্থাপন করে যাচ্ছে, তার কোনও আইনি ভিত্তি নেই।’ নিরাপত্তা পরিষদের ১৪টি দেশ এই প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিলে তা পাশ হয়। ভোট দান থেকে বিরত থাকে যুক্তরাষ্ট্র, যেখানে অতীতে তারা ইসরায়েলবিরোধী প্রস্তাবগুলোতে ভেটো দিতো।

জাতিসংঘে পাশ হওয়া ওই প্রস্তাবকে উদ্ধৃত করে নেতানিয়াহু রবিবার মন্ত্রী পরিষদের এক সভায় বলেন, ‘তারা আমাদের মুখের গ্রাস কেড়ে নিতে চায়।’ তিনি আরও আশঙ্কা প্রকাশ করেন, মার্কিন বিদায়ী প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা হয়ত ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতিও নিরাপত্তা পরিষদে পাশ করিয়ে নিতে পারেন। আর এর বিরুদ্ধে ‘বল প্রয়োগের’ হুমকিও দেন নেতানিয়াহু। ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েল-এর এক প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে আসে।

সোমবার হারেৎজ-কে এক জ্যেষ্ঠ ইসরায়েলি কর্মকর্তা জানান, মন্ত্রী পরিষদ আশঙ্কা করছে, জানুয়ারির ১৫ তারিখ প্যারিসে শুরু হতে যাওয়া শীর্ষ সম্মেলনে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের প্রশ্নে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন নিতে পারেন।

প্যারিস শীর্ষ সম্মেলনে কেরির অংশগ্রহণে শঙ্কিত নেতানিয়াহু। কেরির প্রস্তাব গ্রহণ হলে ওবামা প্রশাসন ক্ষমতায় থাকা অবস্থায়ই মধ্যপ্রাচ্যে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের প্রশ্নে আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপ আসতে পারে। আর তা সমন্বয় করা হতে পারে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে।

জাতিসংঘে প্রস্তাব পাশের জন্য প্রথম থেকে ওবামা প্রশাসনের বিরুদ্ধে সরাসরি দোষারোপ করছেন নেতানিয়াহু। যুক্তরাষ্ট্রের এই ভূমিকার নেপথ্যে এবং ইসরায়েলবিরোধী ওই প্রস্তাব পাসে ওবামা প্রশাসন কলকাঠি নেড়েছে, এমন স্পষ্ট প্রমাণ হাজির থাকার কথাও বলছে ইসরায়েল।

২০১৬ সালের মার্চ থেকে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু’র আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বিষয়ক মুখপাত্রের দায়িত্ব পালন করছেন ডেভিড কেয়িস। রবিবার ফক্স নিউজকে তিনি বলেন, অন্যদের মতো আরব সূত্রগুলো ইসরায়েলকে জাতিসংঘের প্রস্তাবের ব্যাপারে ওবামার সংশ্লিষ্টতার কথা জানিয়েছে। নেতানিয়াহু’র মুখপাত্র ডেভিড কেয়িস বলেন, ‘আরব দুনিয়া এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়; উভয় দিক থেকেই আমরা অকাট্য তথ্য পেয়েছি যে, এটা ছিল যুক্তরাষ্ট্রের ইচ্ছাকৃত আক্রমণ। প্রকৃতপক্ষে তারা এই প্রস্তাব তৈরিতে সহায়তা করেছিল।’

ওয়াশিংটনে নিযুক্ত ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূত রন ডারমার মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন-কে বলেন, ‘নতুন প্রশাসনের (ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন) কাছে আমরা যথাযথ মাধ্যমে এ প্রমাণ তুলে ধরবো। তারা যদি যুক্তরাষ্ট্রের জনগণকে এটি জানাতে চায়; তাকে আমরা স্বাগত জানাবো।’ রন ডারমার দাবি করেন, জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের ভোটাটভুটিতে যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের পাশে দাঁড়ায়নি; শুধু এটাই নয়। তারা জাতিসংঘে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে দলবাজির নেপথ্যে ছিল।’  সূত্র: মিডল ইস্ট মনিটর।
২৮ ডিসেম্বর, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে