আন্তর্জাতিক ডেস্ক : হাত কামড়াচ্ছেন ৪৪% মার্কিনি, যাঁরা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রথম ৫ দিনের রকমসকম দেখে প্রমাদ গুনছেন। আর ১৯% মার্কিনি এখন বিভ্রান্ত। বুঝে উঠতে পারছেন না, যা হচ্ছে ঠিক হচ্ছে, নাকি ভুল। অন্য দিকে ৩৬% মনে করছেন, ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর যা যা করেছেন, ঠিকই করেছেন।
গত সপ্তাহে একই রকম একটি জনমত সমীক্ষায় ধরা পড়েছিল, আমেরিকার ইতিহাসে সবচেয়ে কম জনসমর্থন নিয়ে প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ভোটের ফলেও অবশ্য সেটা বোঝা গিয়েছিল যে জনতার রায়ে নয়, মার্কিন ভোট–পদ্ধতির সৌজন্যে ট্রাম্প জিতেছেন। কিন্তু প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়েই আমেরিকার শরণার্থী নীতিতে যে–সব বদল তিনি আনতে চাইছেন বা মেক্সিকো সীমান্তে পাঁচিল তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তাতে আর ভরসা রাখতে পারছেন না প্রায় অর্ধেক মার্কিন নাগরিক।
মেক্সিকো সীমান্তে শুধু পাঁচিল তোলাই নয়, ট্রাম্প বলেছিলেন, সেই পাঁচিল তোলার খরচ মেক্সিকোকেই দিতে হবে। শুনে সঙ্গত কারণেই বেঁকে বসেন মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট এনরিকে পেনা নিয়েতো। জানিয়ে দেন, কানাকড়িও দেবেন না এবং সঙ্গে সঙ্গেই বাতিল করেন নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাৎ আর বৈঠকের পূর্বনির্ধারিত সূচি। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অবশ্য তাতেও নির্বিকার। বৃহস্পতিবার তিনি জানিয়েছেন, মেক্সিকো যদি খরচ না দেয়, তা হলে যে–সব দেশের সঙ্গে আমেরিকার বাণিজ্য–ঘাটতি আছে, সেই সব দেশের পণ্যের ওপর বাড়তি ২০% আমদানি কর বসানো হবে। ট্রাম্প আসলে ঘুরিয়ে একই কথা বললেন, যে, এ–ক্ষেত্রেও ভুক্তভোগী হবে সেই মেক্সিকো।
এদিকে ট্রাম্প–জমানার সবে এক সপ্তাহ হল, এর মধ্যেই বিদ্রোহ মাথা চাড়া দিচ্ছে। যে সোশ্যাল মিডিয়া তঁার প্রচারের পালে হাওয়া জুগিয়েছিল, সেখানেই। প্রেসিডেন্ট হয়েই সরকারি কর্মচারীদের ‘মুখ বন্ধ’ রাখার ফতোয়া জারি করেছেন ট্রাম্প। হোয়াইট হাউসের অনুমতি ছাড়া কোনও কর্মী সংবাদমাধ্যমে মুখ খুলতে পারবেন না, এমনকী নিজস্ব মতামতও জানাতে পারবেন না সোশ্যাল মিডিয়ায়।
মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ‘নাসা’, পরিবেশ সুরক্ষা সংস্থা ‘ইপিএ’ এবং জাতীয় অভয়ারণ্য সংস্থা ‘এনপিএস’–এর একাধিক ক্ষুব্ধ কর্মী বেনামে বিকল্প টুইটার অ্যাকাউন্ট খুলে ট্রাম্প–বিরোধী প্রচার শুরু করেছেন। এবং এঁরা নিজেদের সেই দ্বিতীয় অ্যাকাউন্টের এমন নামকরণ করছেন, যাতে বোঝা যায় যে, প্রতিবাদ হিসেবেই ওঁরা এ কাজ করছেন। ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট থাকলে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে আমেরিকা বিশ্বসেরা থাকতে পারবে কি না, তা নিয়েও ক্রমশ সন্দিগ্ধ হয়ে পড়ছেন বিজ্ঞানীদের একাংশ। ৪১% মনে করছেন, পারবে। কোনও ফারাক হবে না। কিন্তু ৪০% বেশ সংশয়ী। এ–ক্ষেত্রেও ১৯% বুঝে উঠতে পারছেন না, ঠিক কী হতে যাচ্ছে। বিজ্ঞানচর্চা কতটা গুরুত্বহীন হয়ে পড়তে পারে ট্রাম্প–জমানায়।
অন্য দিকে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পও নানা মন্তব্যে সংবাদমাধ্যমকে মজার খোরাক জুগিয়ে যাচ্ছেন রোজ। প্রেসিডেন্টের বিশেষ বিমান ‘এয়ারফোর্স ওয়ান’ মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তরের অত্যন্ত গর্বের সম্পত্তি, যাকে ‘উড়ন্ত দুর্গ’ বলেও চিহ্নিত করা হয়। ট্রাম্প সদ্য সেই এয়ারফোর্স ওয়ানে প্রথম চড়লেন। সফরসঙ্গী সাংবাদিকদের নিজেই বললেন, চমৎকার বিমান, কী বলেন? প্রেসিডেন্টের আসনের পেছনে ঝোলানো এয়ারফোর্স ওয়ানের নীল রঙের বিশেষ জ্যাকেটটি দেখিয়ে তাঁর মন্তব্য, ‘কুল জ্যাকেট, অ্যাঁ?’ আজকাল
২৮ জানুয়ারি ২০১৭/এমটিনিউজ২৪/এসএস