আন্তর্জাতিক ডেস্ক: কানাডার কুইবেকে মসজিদে হামলা চালিয়ে ছয়জনকে হত্যা ও পাঁচজনকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ আনা হয়েছে ২৭ বছর বয়সী এক বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রের বিরুদ্ধে। তার নাম আলেক্সান্ডার বিসনেট ফরাসি বংশোদ্ভুত। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ফ্রান্সের কট্টোর জাতীয়তাবাদী নেত্রী ম্যারিন লি পেনের সমর্থক। তার ছবিও প্রকাশ করেছে মিডিয়া। সে নিয়মিত অভিবাসীদের তিরস্কার করত।
পুলিশের কাছে আলেক্সান্ডার বিসনেট ডানপন্থী কট্টোর রাজনীতির সমর্থক ও ট্রাম্প এবং লি পেনের সমর্থক বলে দাবি করে। একটি নারীবাদি অনলাইনে সে নিয়মিত উগ্র রাজনৈতিক মতবাদ প্রচার করত। এবং ফ্রান্সের উগ্রাবাদি জাতীয়তাবাদী নেত্রী ম্যারিন লি পেনের দ্বারা সে উদ্বুদ্ধ হয়েছিল। আলেক্সান্ডার পড়াশুনা করত ফ্রেঞ্চ-কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটিতে। রোববার রাতে সে বন্দুক নিয়ে কানাডার কুইবেকে সেইন্টি-ফয় এলাকায় ইসলামিক কালচারাল সেন্টার ও মসজিদে হামলা চালায়।
তার বিরুদ্ধে আদালত ‘ফার্স্ট ডিগ্রি মার্ডার’ বা হত্যা ও ‘ফাইভ কাউন্টস অব এ্যাটেমটেড মার্ডার’ বা হত্যা চেষ্টার অভিযোগ এনেছে। তার সঙ্গে হামলাকারী অপর তিনজনের পরিচয় এখনো পাওয়া যায়নি। কুইবেকের মসজিদে যখন মুসল্লিরা নামাজ পড়ছিল তখন বন্দুকধারীরা তাদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়।
নিহত ৬ ব্যক্তির মধ্যে তিনজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। এরা হলেন, আজেদিন সুফিয়ান, খালেদ বেলকাচেমি ও বোউবেকার থাবতি। মেইল অনলাইন জানায়, সুফিয়ান একজন হালাল মাংস ব্যবসায়ী ও তিন সন্তানের জনক, থাবতি তিউনিশিয়া বংশদ্ভুত ও দুই সন্তানের জনক এবং খালেদের প্রতিবেশি।
নিহত ৬ ব্যক্তির মধ্যে তিনজন হচ্ছেন, আজেদিন সুফিয়ান, খালেদ বেলকাচেমি ও বোউবেকার থাবতি। মেইল অনলাইন জানায়, সুফিয়ান একজন হালাল মাংস ব্যবসায়ী ও তিন সন্তানের জনক, থাবতি তিউনিশিয়া বংশদ্ভুত ও দুই সন্তানের জনক এবং খালেদের প্রতিবেশি।
ঘটনার পর আলেক্সজান্ডার বিসোনেটকে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ১৫ মাইল দূরে গ্রেফতার করে। সে কুইবেক শহরে বাস করত বলে রেডিও কানাডা জানায়।
পুলিশ বিসোনেটের কাছ থেকে দুটি একে-৪৭ রাইফেল ও একটি হ্যান্ডগান উদ্ধার করেছে। হামলার পর পুলিশ মসজিদ থেকে ৩৯ জনকে উদ্ধার করে। তাদের মধ্যে শিশুও ছিল। মসজিদের সভাপতি মোহাম্মদ ইয়ানগুই ঘটনার সময় সেখানে ছিলেন না।
মসজিদের সভাপতি মোহামদ ইয়াংগুই জানান, হামলার সময় তিনি মসজিদের ভেতর ছিলেন না। সন্ধ্যার নামাজের সময় তিনি গুলির শব্দ ও লোকজনের আর্তনাদ শোনেন। কতজন আহত হয়েছেন তা তিনি জানেন না। তাঁদের কুইবেক সিটির বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সম্প্রতি কুইবেক সিটিতে ইসলাম-আতঙ্ক বেড়েছে। ২০১৩ সালে কুইবেকের স্যাগুয়েন অঞ্চলের মসজিদে পুলিশ তদন্ত করে। মসজিদটিতে শূকরের রক্ত ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল বলে ধারণা করা হয়। ২০১৫ সালে অন্টারিও প্রদেশে একটি মসজিদে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এর আগের দিনই প্যারিসে বন্দুকধারীরা আত্মঘাতী হামলা চালায়।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর দেশে মুসলিম শরণার্থী প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। যদিও আদালত তাঁর আদেশের আংশিক স্থগিত করেন। নিষেধাজ্ঞার পর যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঞ্চলে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। পশ্চিমা বিভিন্ন দেশের নেতারা ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞার সমালোচনা করেন।
কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকতে না পারা শরণার্থীদের তাঁর দেশে আশ্রয় দেওয়া হবে বলে জানান। গত শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের একটি মসজিদ অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে যায়। তবে এর কারণ জানা যায়নি।
৩১ জানুয়ারি,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এআর