সোমবার, ০৬ ফেব্রুয়ারী, ২০১৭, ০৯:২৯:৩০

তিন তালাক নিষিদ্ধ করছে মোদি সরকার, বিরোধিতায় মমতার তৃণমূল!

তিন তালাক নিষিদ্ধ করছে মোদি সরকার, বিরোধিতায় মমতার তৃণমূল!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : অনেক বিরোধিতা যে আসবে, সেটা জানে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। জানেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও। ইতিমধ্যেই মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ডের নেতারা এর বিরোধিতা করেছেন। তালাক প্রথা তুলে দেওয়ার বিপক্ষে রাজনৈতিক দল তৃণমূল কংগ্রেসও।

তবু ‘তিন তালাক’ প্রথা নিষিদ্ধ করে মুসলমান সমাজের মহিলাদের সমানাধিকার দিতে চাইছে ভারত। পাঁচ রাজ্যের নির্বাচন পর্ব মিটে গেলেই এই বড় সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে মোদি সরকার। রোববার সেই সম্ভাবনার কথা স্পষ্ট করে দিয়েছেন ভারতের কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ।

রোববার ভারতের উত্তর প্রদেশের গাজিয়াবাদে এই ঘোষণা করার পাশাপাশি এই ইস্যুতে কংগ্রেস, সমাজবাদী পার্টি এবং বহুজন সমাজ পার্টির অবস্থানও জানতে চেয়েছেন রবিশঙ্কর প্রসাদ। আগামী ১১ মার্চ উত্তরপ্রদেশ-সহ পাঁচ রাজ্যের নির্বাচনের ফল ঘোষণা। এর পরেই ‘তিন তালাক’ নিষিদ্ধ করার ঘোষণা করতে পারে মোদি সরকার, এমনই ইঙ্গিত দিয়েছেন রবিশঙ্কর প্রসাদ।

কিছু দিন আগেই সুপ্রিম কোর্ট ইসলাম ধর্মের ‘তিন তালাক’ প্রথার বিরোধিতা করেছে। আদালত বলেছে, এই প্রথা কোনও ধর্মের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হতে পারে না। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ পেয়েই ভারতের ধর্ম-মত নির্বিশেষ নাগরিকদের জন্য এক ও অভিন্ন দেওয়ানি বিধি (Uniform Civil Code) চালু করতে উদ্যোগী হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।

এ ব্যাপারে ভারতের আইনমন্ত্রী ডি ভি সদানন্দ গৌড়াকে বিষয়টি খতিয়ে দেখার দায়িত্ব দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী ‘ইউনিফর্ম সিভিল কোড’-এর বিষয়ে কেন্দ্রীয় আইন কমিশনকে রিপোর্ট জমা দিতে বলেন। এর পরেই বিভিন্ন পার্সোনাল ল বোর্ডের কাছে প্রশ্নপত্র পাঠায় কেন্দ্রীয় আইন কমিশন।

স্বাধীনতার আগে থেকেই দেশে এই বিতর্ক চলে আসছে। স্বাধীনতার পরে কোনও সরকারই আর এই ব্যাপারে উদ্যোগ নেয়নি। এই প্রথম দেশের কোনও সরকার অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালুর বিষয়ে উদ্যোগী হয়েছে। কিন্তু শুরুতেই যা আভাস, তাতে দেশজুড়ে বিতর্কের ঝড় বইবে। ইতিমধ্যেই নিজেদের বিরোধিতার কথা জানিয়ে দিয়েছে মুসলমি পার্সোনাল ল’ বোর্ড।

রোববার তিন তালাক বন্ধ করতে কেন্দ্রের উদ্যোগের কথা জানানোর সময়ে ভারতের আইনমন্ত্রী এ নিয়ে রাহুল গাঁন্ধী, অখিলেশ যাদব, মায়বতীদের অবস্থান জানতে চান। এখনও তারা নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট না করলেও পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল কংগ্রেস জানিয়ে দিয়েছে, দল মুসলমান পুরুষদের দাবি মতো তালাকের পক্ষে। তালাক প্রথা বিলোপের বিরোধিতায় কলকাতাতেও সমাবেশ করে জমিয়তে উলেমায়ে হিন্দ।

গত নভেম্বর মাসে সেই মঞ্চে হাজির ছিলেন রাজ্যের দুই গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও ফিরহাদ হাকিম। বাংলায় জমিয়তের সভাপতি সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীও এখন রাজ্য মন্ত্রিসভার সদস্য। তিনিও ছিলেন মঞ্চে। সেই মঞ্চে দাঁড়িয়েই পার্থবাবু বলেন, ‘আমার স্ত্রী আমার সঙ্গে থাকবেন কি না, তা আমাকেই ঠিক করতে দিন। এর বিচার করার জন্য সংবিধান আর উপরওয়ালা রয়েছে।’ মমতা ব্যানার্জীর মন্ত্রীসভার গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী তথা তৃণমূল কংগ্রেসের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের এই বক্তব্যেই পরিষ্কার যে, শাসকদল তিন তালাক প্রথার পক্ষে।

নোট বাতিল থেকে ডিজিটাল অর্থনীতি, ইদানীং কেন্দ্রের সব নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলনে সব থেকে বেশি সরব হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। দেশে মোদী-বিরোধিতার মুখ হয়ে উঠেছেন মমতা ব্যানার্জী। এ বার তিন তালাক রোধে কেন্দ্র পদক্ষেপ করলেও কি আন্দোলনে নামবে তৃণমূল কংগ্রেস?
৬ ফেব্রুয়ারি,২০১৭/এমটিনিউজ২৪/এসএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে