বুধবার, ১৯ এপ্রিল, ২০১৭, ০১:০৬:২৩

এরদোগানকে সংযত হতে বললেন ইইউ নেতারা

এরদোগানকে সংযত হতে বললেন ইইউ নেতারা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : তুরস্কের গণভোটের ফল আসার পর দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যিপ এরদোগানকে সংযত থাকার বার্তা দিয়েছেন ইউ নেতারা। বার্লিন, প্যারিস ও ব্রাসেলস থেকে আসা বার্তায় উদ্বেগ উঠে এসেছে। তবে, ভোটে কারচুপির অভিয্গে থাকলেও ইইউ নেতারা সরাসরি নিন্দা করেননি।

কয়েকজন সিনিয়র ইইউ নেতা সাফ বলে দিয়েছেন, এই গণভোটের মাধ্যমে তুরস্কের ইইউতে যোগ দেয়ার সম্ভাবনার ইতি ঘটেছে। সব থেকে কড়া বার্তা দিয়েছেন অস্ট্রিয়ান চ্যান্সেলর ক্রিস্টিয়ান কার্ন। তিনি বলেছেন, ‘গতকাল যা ঘটেছে তাতে তুরস্কের ইইউ সসদ্যপদের সম্ভাবনার কবর হয়েছে। আমরা নতুন যুগে প্রবেশ করছি।’

তুরস্কের রাষ্ট্র পরিচালিত সংবাদ সংস্থা আনাদুলুর তথ্যমতে, ৫১.৪ শতাংশ ভোটার প্রেসিডেন্সির ক্ষমতা বৃদ্ধির সমর্থনে ভোট দিয়েছেন। পক্ষান্তরে না ভোট দিয়েছেন ৪৮.৬ শতাংশ। তবে, তুরস্কের বিভিন্ন বিরোধী গ্রুপ ভোটিং প্রক্রিয়ায় অসঙ্গতির অভিযোগ তুলেছে। অর্গানাইজেশন ফর সিকিউরিটি অ্যান্ড কো-অপারেশন ইন ইউরোপ (ওএসসিই) সোমবার বলেছে যে, গণভোটটি আন্তর্জাতিক মানদণ্ড সম্মত হয় নি। অস্ট্রিয়ান এক পর্যবেক্ষক অভিযোগ করেন, ‘পুলিশ দু’বার আমাদের পর্যবেক্ষণে বাধা দিয়েছে।’

জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিগমার গ্যাব্রিয়েল বলেছেন, আঙ্কারা যদি মৃত্যুদণ্ডের বিধান ফিরিয়ে আনে যেমনটা এরদোগান রোববার ইঙ্গিত দিয়েছেন, সেটা হবে ‘ইউরোপিয়ান স্বপ্ন সমাপ্তির শামিল’।

জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মার্কেলের সঙ্গে যৌথভাবে পৃথক আরেকটি বিবৃতিতে গ্যাব্রিয়েল এরদোগানকে সংযত থাকার বার্তা দিয়েছেন। মার্কেল ও গ্যাব্রিয়েল বলেন, ‘ভোটের সামান্য পার্থক্যে উঠে এসেছে তুর্কী সমাজ কতটা গভীরভাগে বিভক্ত। এটা তুর্কী সরকার ও প্রেসিডেন্ট এরদোগানের ওপর ব্যক্তিগতভাবে বড় দায়িত্ব চাপিয়ে দেয়।’

ওদিকে, আঙ্কারায় প্রেসিডেন্সিয়াল প্যালেসের সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে সমর্থকদের উদ্দেশে দেয়া বক্তব্যে এরদোগান আন্তর্জাতিক নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের ‘নিজেদের অবস্থান নিয়ে সচেতন’ থাকার আহ্বান জানান। তিনি দাবি করেন, ইইউ যদি তাদের জোটে তুরস্কের যোগদানের আলোচনা ভেস্তেও দেয় সেটা তুরস্কের জন্য অতটা গুরুত্বপূর্ণ নয়।

ওদিকে, তুর্কী পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যবেক্ষকদের পর্যবেক্ষণকে ‘পক্ষপাতদুষ্ট ও পূর্বধারণাপ্রসূত’ বলে আখ্যা দিয়েছে। মার্কেল ও গ্যাব্রিয়েল বলেছেন, ওএসসিই সদস্য এবং ইইউ পদপ্রার্থী রাষ্ট্র হিসেবে তুরস্ককে তাদের উদ্বেগ আমলে নেয়া প্রয়োজন।  

ফরাসি প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওঁলাদে বলেছেন, তুরস্ক যদি মৃত্যুদণ্ডের বিধান ফিরিয়ে আনে তাহলে সেটা হবে ইইউতে যোগদানের প্রচেষ্টায় মানবাধিকারের প্রতি সম্মান প্রদর্শনে তুরস্কের প্রতিশ্রুতির লঙ্ঘন।

ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট জ্যঁ ক্লদ-জাঙ্কার বলেছেন, তিনি ওএসসিই’র ফল খতিয়ে দেখবেন। তিনি সংবিধানে পরিবর্তন আনার ক্ষেত্রে তুর্কী কর্তৃপক্ষকে সম্ভাব্য বৃহত্তর জাতীয় ঐকমত্য অর্জনের চেষ্টা করার আহ্বান জানান।  

ওদিকে, ওয়াশিংটন গণভোটের ফল নিয়ে কোনো দ্বিমত পোষণ করেনি। তবে, ওএসসিই পর্যবেক্ষকদের উদ্বেগ গুরুত্বের সঙ্গে আমলে নিয়েছে। একইসঙ্গে তুরস্ক সরকারকে দেশের সকল নাগরিকের অধিকারের প্রতি সম্মান জানানোর আহ্বান জানিয়েছে। এমজমিন
১৯ এপ্রিল ২০১৭/এমটি নিউজ২৪/এসবি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে