আন্তর্জাতিক ডেস্ক : প্রতিটি দেশেই পর্যটকদের ভীর প্রতিদিন বাড়ছে। কিন্তু ভারতে বিদেশি নারী পর্যটকের সংখ্যা দিনকে দিন কমছে। এমনটাই দাবি বণিকসভা অ্যাসোচেম-এর।
কিন্তু কেন? ভারতের আকর্ষণ কি তাঁদের কাছে কমছে? নাকি বিদেশি নারীরা দেশটিতে আর নিজেদের নিরাপদ মনে করছেন না? বণিকসভার তথ্য বলছে, দ্বিতীয়টাই সত্যি।
২০১২ সালে নির্ভয়া-কাণ্ডের পরই কমতে শুরু করেছে নারী পর্যটকদের সংখ্যা। তার পর দেশের রাজধানী-সহ বেশ কিছু বড় শহরে বিদেশি নারীদের সঙ্গে ঘটেছে একের পর এক ধর্ষণ আর খুনের মতো ঘটনা। এই সব ঘটনার পর বিদেশি নারী পর্যটকরা ভারতে নিজেদের সুরক্ষিত মনে করছেন না।
অ্যাসোচেম-এর পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ভারতে পর্যটকের সংখ্যা বাড়লেও কমছে বিদেশি নারী পর্যটকের সংখ্যা, যা ভারতের ভাবমূর্তির জন্য অত্যন্ত লজ্জাজনক।
২০১২ সালে মোট বিদেশি পর্যটকের সংখ্যা ছিল ৬৬ লক্ষ ৫০ হাজার। এর মধ্যে ৫৮.৭ শতাংশ পুরুষ এবং ৪১.৩ শতাংশ নারী। এর পরের বছর মোট পর্যটকের সংখ্যা বেড়ে হয় ৬৮ লক্ষ ৫০ হাজার। এর মধ্যে ৫৮.৮ শতাংশ পুরুষ এবং ৪১.২ শতাংশ নারী।
২০১৪ সালে মোট বিদেশি পর্যটকের সংখ্যা বেড়ে ৭৪ লক্ষ ৬০ হাজারে পৌঁছলেও নারী পর্যটকের সংখ্যা কমে হয় ৪১ শতাংশ।
কেন্দ্রীয় পর্যটন মন্ত্রকের দাবি, বিদেশি নারীদের নিরাপত্তার জন্য সব রকম ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাঁদের জন্য দেশের সব বিমানবন্দরে বিশেষ পুস্তিকা রাখা হয়েছে। থাকার ব্যবস্থা, গাড়ির ব্যবস্থা, পুলিশ হেল্পলাইনের নম্বর, খাওয়ার ব্যবস্থা এমনকী কেমন পোশাক পরা উচিত, তারও নির্দেশিকা রয়েছে এই পুস্তিকায়।
পর্যটনমন্ত্রী মহেশ শর্মার বক্তব্য, একটি ট্যুরিস্ট হেল্পলাইন চালু করা হয়েছে। দেশের প্রতিটি রাজ্যকে পর্যটন পুলিশ নিয়োগ করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ২০১২ সালে নির্ভয়া-কাণ্ড এবং তার পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন স্থানে বিদেশি নারীদের সঙ্গে ঘটা বিভিন্ন অপ্রিয় ঘটনায় বিদেশে ভারতের ভাবমূর্তি ধাক্কা খেয়েছে। এই ধরনের অপরাধ নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন।
অল ইন্ডিয়া ট্যুর অ্যান্ড ট্রাভেলস-এর সভাপতি কমল গোয়েল অবশ্য পর্যটন মন্ত্রককেই দোষ দিচ্ছেন। দেশের কোনও বিমানবন্দরেই মহিলা পর্যটকদের জন্য আলাদা ব্যবস্থা নেই। জনসংযোগও সে ভাবে নেই। বিদেশিদের প্রতি পুলিশও বিশেষ সংবেদনশীল নয় বলে তাঁর অভিযোগ। জনসংযোগ ব্যবস্থার পাশাপাশি বাড়াতে হবে নিরাপত্তা ব্যবস্থাও।
বিদেশি পর্যটকদের জন্য পৃথক পুলিশি ব্যবস্থা চালু করতে হবে। শুধুমাত্র বলিউড স্টারদের নিয়ে বিজ্ঞাপন দিলেই দেশের ভাবমূর্তি ভাল করা যাবে না বলে মত তাঁর। সূত্র: আনন্দবাজার
১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএস