আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ১৯৯০ সালে কুয়েতে ইরাকি অভিযানকে উপসাগরীয় দেশে অস্ত্র বিক্রির ‘দারুণ সুযোগ’ হিসেবে বিবেচনা করেছিল ব্রিটিশ সরকার। যুক্তরাজ্য সরকারের আর্কাইভ (ন্যাশনাল আর্কাইভস) থেকে সম্প্রতি প্রকাশিত কিছু গোপন নথি জনসম্মুখে আসার পর এ কথা জানা গেছে।
ন্যাশনাল আর্কাইভের জনসম্মুখে আসা নথিগুলোতে দেখা যায় ১৯৯০-এর দশকে উপসাগরীয় যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছিল যে দেশগুলো, সেসব দেশের মন্ত্রী আর সরকারি চাকরিজীবীরা ব্রিটেনের অস্ত্র প্রস্তুতকারকদের জন্য বাজার নিশ্চিত করতে চাচ্ছিলেন। সে কারণে তারা চেয়েছিলেন, এ যুদ্ধকে কেন্দ্র করে সামরিক সরঞ্জামের জন্য সৃষ্ট চাহিদার সুযোগ যেন ব্রিটিশ অস্ত্র প্রস্তুতকারকরা নিতে পারেন।
ওই নথিতে সেই সময়ের ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী মার্গারেট থ্যাচারের প্রতিরক্ষা সরঞ্জামাদি ক্রয়-বিক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রী অ্যালান ক্লার্কের গোপন ব্রিফিং রয়েছে। যুদ্ধের প্রাক্কালে উপসাগরীয় দেশগুলো সফর করে এসে সেই ব্রিফিং করেছিলেন তিনি। সরকারের ওই সব প্রচেষ্টার কারণে লভ্যাংশ অর্জিত হয়েছিল। ওই যুদ্ধ যুক্তরাজ্য সরকারকে উপসাগরীয় অঞ্চলে অস্ত্র বিক্রির সুযোগ তৈরি করে দিয়েছিল এবং আজ পর্যন্ত ওই অঞ্চলের সাথে দৃঢ় সম্পর্ক বজায় রাখতে সহায়তা করেছিল।
১৯৯০ সালের ১৯ আগস্ট ‘সিক্রেট’ নামে লেখা একটি চিঠি জমা দিয়েছিলেন ক্লার্ক। ইরাকের স্বৈরশাসক সাদ্দাম হোসেনের বাহিনী কুয়েতে আক্রমণ করার কয়েক দিন পর মার্গারেট থ্যাচারের কাছে ওই ব্যক্তিগত চিঠিটি জমা দিয়েছিলেন তিনি।
সেখানে ক্লার্ক লিখেছেন, এ যুদ্ধ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্রদের কাছ থেকে যে প্রতিক্রিয়া আসবে তা ডিফেন্স এক্সপোর্ট সার্ভিসেস অর্গানাইজেশন (এখন ডিএসও নামে পরিচিত) এর জন্য ‘দারুণ সুযোগ’ তৈরি করবে বলে আশা প্রকাশ করেছিলেন তিনি।
অন্য নথিগুলোতে দেখা গেছে, সে সময়কার কাতারের আমির ও বাহরাইনের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর সাথে বৈঠক করে অস্ত্র রফতানি নিয়ে আলাপ করেছিলেন ক্লার্ক। আরো কিছু ব্রিফিংয়ে তিনি সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব, মিসর এবং জর্দানকে সম্ভাব্য ব্রিটিশ অস্ত্রের ক্রেতা হিসেবে শনাক্ত করেছিলেন।
ক্যাম্পেইন এগেইন্সট আর্মস ট্রেডের গবেষক জো লো বলেছেন, প্রতিরক্ষা সরঞ্জামাদি রফতানির জন্য এখনো এ দেশগুলোকে টার্গেট করে থাকে যুক্তরাজ্য।
এমটিনিউজ২৪ডটকম/টিটি/পিএস