আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতের কারাগারগুলিতেও ঘুষের ছড়াছড়ি। টাকা দিলে যে সংশোধানাগারে বসেও নানা সুযোগ-সুবিধা ভোগ করা যায়, তার নজির ভুরিভুরি। প্রায় শোনা যায় সেই কেচ্ছা।
দিন কয়েক আগে ২ কোটি টাকা ঘুষ নিয়ে বেঙ্গালুরুর কেন্দ্রীয় সংশোধানাগারে এআইডিএমকে প্রধান শশীকলার এক ঝাঁ চকচকে রান্নাঘর তৈরির খবরে শোরগোল পড়ে গিয়েছিল। কিন্তু, মুম্বাইয়ের পুলিশকর্মীরা যা করেছেন, তা শুনলে তাজ্জব হয়ে যাবেন অনেকেই।
অর্থের বিনিময়ে কুখ্যাত এক দুষ্কৃতীকে হোটেলে গিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে একান্তে সময় কাটানোর সুযোগ করে দিলেন তারা। পরে সেই হোটেলের জানালা ভেঙে পালিয়ে গিয়েছিল হুনুমান পাতিল নামে ওই দুষ্কৃতী। উত্তরপ্রদেশ থেকে ফের তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
২০১৩ সালে খুন ও অপহরণের অভিযোগে হনুমান পাতিলকে গ্রেপ্তার করে মুম্বাইয়ের জেজে মার্গ থানার পুলিশ। গত ফ্রেরুয়ারি মাসে শারীরিক পরীক্ষার জন্য তাকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ওষুধ কিনতে যাওয়ার অছিলায় সেখান থেকেই পালিয়ে যায় হনুমান।
ঘটনায় জেজে মার্গ থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ওই দুষ্কৃতীকে পাহারার দায়িত্বে থাকা পুলিশকর্মীরা। অভিযোগ পাওয়ার পর সক্রিয় হয় জেজে মার্গ থানার পুলিশকর্মীরা। হনুমান পাতিলের বিরুদ্ধে নভি মুম্বাইয়ের অপরাধ দমন শাখায় অভিযোগ দায়ের হয়। গত মাসেই উত্তরপ্রদেশ থেকে ধরাও পড়ে যায় ওই কুখ্যাত দুষ্কৃতী।
কিন্তু, কড়া পুলিশি প্রহরা থাকা সত্ত্বেও কীভাবে পালিয়ে গিয়েছিল হনুমান? তদন্তে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। সূত্রের খবর, ঘটনার দিন হাসপাতালে হনুমান পাতিলের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিল তার স্ত্রী। এরপর স্থানীয় একটি দোকানে ওষুধ কিনতে যাওয়ার জন্য সাব ইন্সপেক্টর অরবিন্দ হাদালের কাছে অনুমতি চায় হনুমান।
দুজন কনস্টবলের প্রহরায় তাকে ওষুধের দোকানে যাওয়ার অনুমতি দেন ওই পুলিশ কর্মকর্তা। নভি মুম্বাইয়ের অপরাধ দমন শাখার এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, হনুমান ও তার স্ত্রীকে ট্যাক্সিতে চাপিয়ে একটি হোটেলে নিয়ে যায় ওই দুই কনস্টেবল। সেখানে হনুমান ও তার স্ত্রী তিন ঘণ্টায় জন্য একটি ঘর ভাড়া নেয়।
দুজনে ঘরে ঢুকে যাওয়ার পর, বাইরেই অপেক্ষা করছিল কনস্টেবলরা। কিন্তু ঘণ্টা দুয়েক পর যখন দরজায় ধাক্কা দেন ওই দুই কনস্টেবল, তখন হনুমানের স্ত্রী দরজা খোলে। দেখা যায়, হোটেলের জানলা দিয়ে পালিয়ে গিয়েছে কুখ্যাত দুষ্কৃতী হনুমান পাতিল।
এরপরই ওই দুই কনস্টেবল হাসপাতালে ফিরে আসে এবং জানায়, পালিয়ে গিয়েছে হনুমান। তদন্তে জানা গিয়েছে, ওষুধ কিনতে যাওয়ার ঘটনাটি পুরোটা সাজানো। স্ত্রীর সঙ্গে হোটেলে একান্তে সময় কাটানোর জন্য জেজে মার্গ থানার পুলিশকর্মীদের এক লক্ষ টাকা ঘুষ দিয়েছিল হনুমান।
নবি মুম্বইয়ে অপরাধ দমন শাখার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিষয়টি অত্যন্ত গুরুতর। দোষী পুলিশ কর্মকর্তাদের কাউকেই ছাড়া হবে না। বরং দোষীরা যাতে কঠিন শাস্তি পায়, তা নিশ্চিত করবেন তারা।
এমটিনিউজ/এসএস