আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বিজেপি এবং আরএসএসকে নিজেদের এক নম্বর শত্রু বলে মন্তব্য করেছেন অল ইন্ডিয়া মজলিশ-ই-ইত্তেহাদুল মুসলেমিন প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়াইসি। তাদের প্রতিরোধ করা সকলের দায়িত্ব বলেও জানান তিনি।
মঙ্গলবার এক টিভি চ্যানেলে ‘পঞ্চায়েত আজতক’ নামক অনুষ্ঠানে তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের পার্টি মুসলমানদের পার্টি নয়, তবে আমরা চাই মুসলমান এবং দলিতরা এক সঙ্গে লড়াই করুক।’
তাকে প্রশ্ন করা হয় আপনি নাকি বিজেপি’র ডাকে নির্বাচনী মেরুকরণের জন্য বিহারে আসছেন? জবাবে তিনি বলেন, ‘যদি এমন কথা কেউ বলেন, তার বিরুদ্ধে মানহানির মামলা দায়ের করব। অপরাধমূলক মানহানি কি জিনিষ তা তিনি টের পাবেন।’
তিনি বলেন, লালু প্রসাদ তার আত্মীয় (মুলায়ম সিং)কে কেন জিজ্ঞাসা করছেন না মহাজোট ছেড়ে গেলেন কেন? বামপন্থীদের কাছেই বা এসব কথা জিজ্ঞাসা করা হচ্ছে না কেন? শুধু আমাকে দেখলেই পেটে ব্যাথা শুরু হয়ে যাচ্ছে কেন? দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচনে কেন অন্যরা হেরে গেল? সেটাও কি আমার জন্য?’
সাংসদ আসাদউদ্দিন ওয়াইসিকে প্রশ্ন করা হয় আপনি কি মজলিশ ই ইত্তেহাদুল মুসলেমিন ‘মিম’কে প্যান-ইন্ডিয়া মুসলিম পার্টি করতে চাচ্ছেন? জবাবে তিনি বলেন, ‘আমাদের পার্টি মুসলিমদের পার্টি নয়, যদিও আমরা চাই মুসলমান এবং দলিতরা একজোট হয়ে লড়াই করুক। আমরা চাই মুসলমান এবং দলিতরা উন্নয়নে সমান অবদান রাখুক।’
আসাদউদ্দিন ওয়াইসি বলেন, ‘আমরা ওই সমস্ত লোকদের মোকাবিলা করব যারা আমাদের ভোট নিয়ে আমাদের উন্নয়ন করেনি। বিহারে সীমান্ত এলাকাতে ভোট নিয়ে ওরা কোনো কাজ করেননি। এ ব্যাপারে লালুপ্রসাদ, নীতিশ কুমার এবং বিজেপি সব একই।’
তিনি বলেন, ‘যখন ৫০ –এর বেশি মুসলিম এমপি হবে দেশে কোনো গোলমাল হবে না। এ দেশে কোনো একটি বিশেষ ধর্মের মতাদর্শকে চাপিয়ে দেয়া যাবে না।’ তিনি বলেন, ‘স্কুল, বিশ্ববিদ্যালয়, হাসপাতাল ইত্যাদিতে দেশের উন্নয়ন হবে। রাজনৈতিক ক্ষমতায় এসব হতে পারে। রাজনৈতিক ক্ষ্মতায়নে সব কিছু সম্ভব।’
তার সাম্ভাব্য নির্বাচনী সাফল্য নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি প্রচণ্ড ঝড়ের মধ্যেও আলো জ্বালাব।’
প্রসঙ্গত, বিহারের কিসানগঞ্জ, কাটিহার, পূর্ণিয়া এবং অরোরিয়া জেলাতে গড়ে প্রায় ৪০ শতাংশের বেশি মুসলিম বাসিন্দা রয়েছেন। কিষাণগঞ্জে ৬৮ শতাংশ, কাটিহারে ৪৩ শতাংশ, অরোরিয়াতে ৪১ শতাংশ এবং পূর্ণিয়াতে ৩৭ শতাংশ মুসলিম ভোটার যেকোনো রাজনৈতিক দলের জয় পরাজয়ে নির্ণায়ক হবে।
হায়দ্রাবাদের ‘মিম’ নেতা সাংসদ আসাদউদ্দিন ওয়াইসি বিহারে বিধানসভা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করার ঘোষণা দেয়ার পর থেকে রাজ্যের রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে মুসলিমদের এতদিন যারা ভোট ব্যাংক হিসেবে ব্যবহার করে ক্ষমতা দখল করেছে তাদের মধ্যে এরইমধ্যে মুসলিম ভোট ভাগ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় অন্য রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে পরাজয়ের আশঙ্কাও সৃষ্টি হয়েছে। সূত্র: রেডিও তেহরান
১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএস