আন্তর্জাতিক ডেস্ক : হানিপ্রীত সিংকে খুঁজে বেড়াচ্ছে হরিয়ানা পুলিশ। জারি করেছে লুক আউট নোটিস। সমস্ত বিমানবন্দরকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে, যেন তিনি পালাতে না পারেন। পাতানো ‘বাবা’ গুরমিত সিংকে পালাতে দেওয়ার ষড়যন্ত্র কষার অভিযোগ আনা হয়েছে হানিপ্রীতের বিরুদ্ধে।
পাঁচকুলায় গুরমিতের রায়দানকে কেন্দ্র করে হিংসায় প্ররোচনা দেওয়ার জন্য রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগও আছে হানিপ্রীতের বিরুদ্ধে। এই হানিপ্রীতই একটি সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, বিজেপি নেতাদের সঙ্গে ‘বাবা’র রফা হয়েছিল, ভোটে ডেরার সমর্থন পাবে তারা, জিতলে তুলে নেওয়া হবে মামলা। বিজেপির জাতীয় সভাপতি অমিত শাহের সঙ্গেও নাকি কথা বলেছিলেন গুরমিত।
বলাই বাহুল্য, এসব খবরে বিজেপির অস্বস্তি আরও বেড়েছে, মুখ খুললেই সর্বনাশ। হরিয়ানা পুলিশ হঠাৎ তেড়েফুঁড়ে উঠে হন্যে হয়ে খুঁজছে হানিপ্রীতকে। গুরমিতের অন্য অনুগামীদের কাছেও এটা একটা বার্তা। পুলিশ লুকআউট নোটিস জারি করেছে গুরমিতের আরেক অনুগামী, ডেরার মুখপাত্র আদিত্য ইনসানের নামেও। পাঁচকুলার পুলিশ কমিশনার এ এস চাওলা জানান, নতুন তথ্য বেরিয়ে আসছে, তার জন্য এদের জিজ্ঞাসাবাদ করা জরুরি।
১৫ বছর পুরনো সম্ভ্রমহানী মামলায় ২৫ আগস্ট ডেরা সাচ্চা সওদা প্রধান গুরমিত রাম রহিম সিং ইনসানকে দোষী সাব্যস্ত করেছে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালত। অভিযোগ, রায়দানের পরেই গুরমিতকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার ছক ছিল প্রিয়াঙ্কা তানেজা ওরফে হানিপ্রীতের। তার নির্দেশে প্রস্তুত ছিল ডেরার নিরাপত্তারক্ষীরা। তবে পুলিশি ও সেনার তৎপরতায় সেই ছক ভেস্তে যায়।
এরপর রোহতকের সুনারিয়া জেলে ৮টি স্যুটকেস গুছিয়ে ‘বাবাকে’ সঙ্গ দিতে এসেছিলেন হানিপ্রীত। ‘বাবা’ গুরমিতের একান্ত ইচ্ছে ছিল, জেলে যেন হানিপ্রীতকে তার সঙ্গে রাখার অনুমতি মেলে। হানিপ্রীত তাই নিয়ে জেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বিবাদেও জড়ান। নিজেকে ‘আক্যুপ্রেসার’ বিশেষজ্ঞ দাবি করে বলেন, ‘বাবার’ পিঠে ব্যথা।
সুতরাং সেবাশুশ্রুষার জন্য তাকে খুবই দরকার! লাভ হয়নি। দুই শিষ্যাকে বারবার সম্ভ্রমহানী অভিযুক্ত গুরমিত সিংয়ের ২০ বছর কারাবাসের সাজা ঘোষণার পর থেকেই গা ঢাকা দিয়েছেন হানিপ্রীত। লুক আউট নোটিস জারির পর দেশের সমস্ত বিমানবন্দরে সতর্কতা জারি হয়েছে। রেল স্টেশন, বাসস্ট্যান্ড সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সজাগ থাকতে বলা হয়েছে। হরিয়ানাতেই এক ডেরা সমর্থকের বাড়িতেই আছেন হানিপ্রীত বলে শোনা যাচ্ছে।
২০১১–এ পাঞ্জাব, হরিয়ানায় ‘খবর’ হয়েছিলেন হানিপ্রীত। তখন তিনি প্রিয়াঙ্কা তানেজা। রাম রহিম তার স্ত্রীকে শারিরীক হেনস্থা করেছেন, এমন অভিযোগে পাঞ্জাব হরিয়ানা হাইকোর্টে গিয়েছিলেন হানিপ্রীতের স্বামী বিবেক গুপ্তা। পরে আদালতের বাইরে মামলার নিষ্পত্তি হয়। এবং তারপর গুরমিত রাম রহিমের অত্যন্ত কাছের মানুষ হয়ে যান হানিপ্রীত, নিজেকে যিনি বলে থাকেন ‘পাপা’জ এঞ্জেল’।
‘গুরু পাপা’-র একনিষ্ঠ সহযোগী। হানিপ্রীতের পাশাপাশি ডেরা সাচ্চা সওদার এক মুখপাত্র আদিত্য ইনসানের নামেও লুক আউট নোটিস জারি হয়েছে। গুরমিতকে বাঁচাতে হানিপ্রীতের আগাগোড়া সঙ্গ দিয়েছিলেন আদিত্য বলে অভিযোগ।
এমটিনিউজ/এসএস