আন্তর্জাতিক ডেস্ক : একদিকে যখন রোহিঙ্গা মুসলিমদের নিয়ে তোলপাড় হচ্ছে, তখন পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে যাওয়া চাকমা- হাজং শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলো ভারত। বুধবার ভারত সরকারের তরফে এই ঘোষণা করা হয়েছে।
পাঁচ দশক আগে এরা ভারতে আসে ও উত্তর-পূর্ব ভারতে বসবাস শুরু করে। বর্তমানে তারা ওই উত্তর-পূর্বের শরণার্থী ক্যাম্পে থাকে।
এদিন এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে এই চাকমা-হাজং শরণার্থীদের নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং, অরুণাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী প্রেমা কুণ্ডু, ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রনালয়ে প্রতিমন্ত্রী কিরণ রিজিজু, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল প্রমুখ।
২০১৫ সালে এই শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দিতে কেন্দ্রকে নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। এদের বেশির ভাগ অংশই অরুণাচলে বসবাস করছে। সুপ্রিম কোর্টের সেই নির্দেশের বিষয়ে এদিন আলোচনা হয়। যদিও অনেক সংগঠন এই শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়ার বিরোধিতা করেছে।
নয়া দিল্লী এই সমস্যার একটা কার্যকরী সমাধান চায়। তাই চাকমা-হাজংদের নাগরিকত্ব দেওয়া হলেও তারা জমি কিনতে পারবে না বলেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত। তবে অরুণাচল প্রদেশে কাজ করার জন্য তাদের এক বিশেষ পারমিট দেওয়া হবে।
চট্টগ্রামের পাহাড়ি এলাকার বাসিন্দা এরা। ১৯৬০ সালে যখন তাদের ওই অঞ্চল ‘কাপ্তাই’ বাঁধ প্রকল্পের সঙ্গে জুড়ে যায় তখন তাদের ঘর ছাড়তে হয়। চাকমারা হল বৌদ্ধ আর হাজং-রা হিন্দু। তৎকালীন আসামের লুসাই পাহাড় দিয়ে ভারতে ঢোকে তারা। বর্তমানে এই লুসাই পাহাড় মায়ানমারের অংশ। পরে ভারত সরকার তাদের অরুণাচলে সরিয়ে দেয়।
জানা গিয়েছে, ভারতে এসেছিল ৫০০০০ চাকমা-হাজং। বর্তমানে তাদের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক লক্ষাধিক। বর্তমানে তাদের নিজেদের কোনও জমি নেই, তবে তাদের প্রাথমিক চাহিদা পূরণ করে রাজ্য সরকার।
এদিকে, ভারতে আশ্রয় নেওয়া ৪০ হাজার রোহিঙ্গাদের বিতাড়নের উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার। ফরেনার্স অ্যাক্টে তাদের বিতাড়ন করা হবে বলে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেন, রোহিঙ্গা দেশের জন্য একটি ভয়ঙ্কর দিক হয়ে দাঁড়াচ্ছে। গোটা বিষয়টিকে কড়া হাতে দমন করতে হবে। অবৈধভাবে যারা ভারতে ঢুকছে তাদের নিয়ে সমস্যা কড়া হাতে দমন করা হবে।
ভারতে ঢুকে বিভিন্ন জায়গার পাশাপাশি জম্মু ও কাশ্মীরেও ঢুকে পড়েছেন বহু রোহিঙ্গা। গতমাসেই গোয়েন্দা তরফে বলা হয়েছে, ধীরে ধীরে ভারতে আসা উদ্বাস্তু রোহিঙ্গারা বারতের নিরাপত্তার দিক দিয়ে একটি বড় সমস্যা হয়ে উঠছেন। এদের অনেকের সঙ্গে জঙ্গি গোষ্ঠীর যোগ রয়েছে বলেও ইঙ্গিত মিলেছে তাদের রিপোর্টে।
এমটিনিউজ/এসএস