আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সরকারকে উপেক্ষা করে শেষ পর্যন্ত রোহিঙ্গাদের পক্ষ নিবে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট? ভারতের সুপ্রিম কোর্টে কেন্দ্রীয় সরকারের হলফনামাকে ভিত্তিহীন বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন সেদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গা শরণার্থীরা। রোহিঙ্গাদের সঙ্গে শ্রীলঙ্কা ও তিব্বতের শরণার্থীদের মতো আচরণ করারও দাবি জানিয়েছেন তারা।
রোহিঙ্গা শরণার্থীদের পক্ষ থেকে গতকাল (শুক্রবার) এক হলফনামা পেশ করে ভারতের সুপ্রিম কোর্টে ওই দাবি জানানো হয়েছে।
গোয়েন্দা সংস্থার বরাতে হলফনামা দিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার এর আগে আদালতে জানায়, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সঙ্গে বিদেশি সন্ত্রাসীদের সঙ্গে যোগ রয়েছে। কিন্তু রোহিঙ্গাদের পক্ষ থেকে দেয়া হলফনামায় সরকারের ওই দাবিকে নাকচ করে দেয়া হয়েছে।
রোহিঙ্গাদের দেয়া হলফনামায় বলা হয়েছে, কেন্দ্রীয় সরকারের দাবির স্বপক্ষে কোনো প্রমাণ পেশ করা হয়নি। রোহিঙ্গা আবেদনকারী সলিমুল্লাহ ও অন্য একজন আদালতে দেয়া হলফনামায় বলেছেন, আইএস বা অন্য কোনো সন্ত্রাসী সংগঠনের সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই। রোহিঙ্গারা শান্তিপ্রিয় মানুষ। সন্ত্রাসী সংগঠন তো দূরের কথা অপরাধমূলক কাজকর্মের সঙ্গেও তারা জড়িত নন।
হলফনামায় বলা হয়েছে, কেন্দ্রীয় সরকার তাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়ায় তাদের জীবন ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে, কারণ মিয়ানমারে তাদের উপরে নির্যাতন, এমনকি হত্যাও করা হবে।
রোহিঙ্গারা বলেছেন, শ্রীলংকার নাগরিকদের ঘটনায় তামিলনাড়ুতে রীতিমত কমিটি আছে যারা তদন্ত করে কাদের সঙ্গে এলটিটিই’র সম্পর্ক আছে বা অপরাধমূলক কাজকর্মের রেকর্ড আছে। এ ধরণের লোকদের বিশেষ শিবিরে রাখা হয়।
তারা বলেন, ভারতের নাগরিকরা রোহিঙ্গাদের প্রতি সমবেদনার দৃষ্টিতে দেখে থাকেন। কিন্তু মিয়ানমারের সেনারা নিপীড়ন চালিয়ে থাকে এজন্য প্রাণ বাঁচাতে তারা ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন। মিয়ানমারে তাদের হত্যা করা হচ্ছে এবং বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয়া হচ্ছে।
রোহিঙ্গারা বলছেন, আন্তর্জাতিক চুক্তি অনুসারে ভারতের উচিত রোহিঙ্গাদের রক্ষা করা এবং তাদের ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া বন্ধ করা।
আগামী ৩ অক্টোবর সুপ্রিম কোর্টে ওই ইস্যুতে পরবর্তী শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। জম্মু-কাশ্মিরের মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি ইতোপূর্বে বিধানসভায় এক বিবৃতিতে উল্লেখ করেন, রোহিঙ্গারা সন্ত্রাসবাদ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে জড়িত নন।
রোহিঙ্গারা তাদের স্বপক্ষে মিয়ানমার থেকে তাদের বহিষ্কার সম্পর্কে স্পষ্টীকরণ দিয়ে শরণার্থী ও অভিবাসীদের মধ্যে পার্থক্যের কথা তুলে ধরেছেন। আদালতে দেয়া হলফনামায় বলা হয়েছে, শরণার্থী তারা, যারা অত্যাচার ও নিহত হওয়ার ভয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছে এবং যারা স্বেচ্ছায় দেশের বাইরে রোজগারের সুযোগ পাওয়ার জন্য গেছে তারা অভিবাসী। এভাবেই শরণার্থী ও অভিবাসীদের মধ্যে পার্থক্য টানার চেষ্টা করেছেন রোহিঙ্গারা।
এমটিনিউজ২৪.কম/টিটি/পিএস