আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে ‘চলমান সহিংসতা এখনই বন্ধ' করার ব্যাপারে সম্মত হয়েছে আঞ্চলিক ও আসিয়ানভুক্ত দেশগুলো। ক্ষতিগ্রস্ত সকল সম্প্রদায়ের মানুষের কাছেই মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়া প্রয়োজন বলেও মতৈক্য হয়েছে।
জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে অংশ নেওয়ার পর মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সিঙ্গাপুরের একটি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সেদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভিভিয়ান বালাক্রিশনান এসব কথা জানান। উল্লেখ্য, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে চলমান সহিংসতা নিয়ে দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশগুলোর জোট আসিয়ানের দেওয়া বক্তব্য থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নিয়েছে মালয়েশিয়া।
ভিভিয়ান বালাক্রিশনান বলেছেন, জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের ফাঁকে আঞ্চলিক ও আসিয়ানভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে আলোচনায় একটি বিষয়ে পরিষ্কার ঐকমত্য হয়েছে। সাক্ষাৎকারে বালাক্রিশনান বলেন, ‘প্রথমত, সহিংসতা বন্ধ করতে হবে এবং তা এখনই বন্ধ করতে হবে। জীবন ও সম্পদের অনেক ক্ষতিসাধন হয়েছে, বাড়ি-ঘর ধ্বংস হয়েছে, শরণার্থীরা বাস্তুচ্যুত হয়েছে।’
বালাক্রিশনান জানান, রাখাইনে নিপীড়নের শিকার হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে যাওয়া এবং রাখাইনে থেকে যাওয়া সব সম্প্রদায়ের ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য সহায়তা প্রয়োজন বলেও দেশগুলো একমত হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আসিয়ানের দিক থেকে, আমরা আমরা আসিয়ান হিউম্যানিটারিয়ান এসিসটেন্স সেন্টার কার্যকর করেছি। এবং এটি ক্ষতিগ্রস্ত সম্প্রদায়ের কাছে, সব ক্ষতিগ্রস্ত সম্প্রদায়ের কাছে সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে ভূমিকা পালনের জন্য আসিয়ানকে সক্ষম করে তুলবে। এখানে আমি একটি বিষয়ে জোর দিতে চাই, বৈষম্য না করে-সহায়তার অপেক্ষায় থাকা মানুষদের সবারই ত্রাণ পাওয়া উচিত।’
সিঙ্গাপুরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও জানান, ‘আঞ্চলিক ও আসিয়ানভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে আরেকটি বিষয়ে মতৈক্য হয়েছে। আর তাহল রাখাইন প্রশ্নে দীর্ঘ মেয়াদী রাজনৈতিক সমাধান। গঠনমূলক ও ইতিবাচক আলোচনার পাশাপাশি সমন্বয়সাধনের মধ্য দিয়ে এ সমাধান আনা সম্ভব। রাখাইনের পরিস্থিতি যদি আরও জটিল ও বাজে হয়ে ওঠে তবে তা উদ্বেগের। কারণ এলাকাটি তখন জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদের উৎপত্তি ও আশ্রয়স্থলে পরিণত হবে।’
সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী দাতুক সেরি আনিফা আমান বলেন, আসিয়ানের বক্তব্যের সঙ্গে বাস্তবতার মিল নেই। তিনি বলেন, ‘মালয়েশিয়া এই বিষয়ে নিজেদের অবস্থান ও উদ্বেগের কথা জানিয়েছে। কিন্তু আসিয়ান চেয়ারম্যানের বক্তব্যে সেটার প্রতিফলন ঘটেনি। ক্ষতিগ্রস্ত রোহিঙ্গাদের বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে এখানে।’ তার দাবি, বাস্তব পরিস্থিতিকে ভুলভাবে তুলে ধরা হয়েছে বিবৃতিতে। এতে আক্রান্তদের মধ্যে রোহিঙ্গাদের শনাক্ত করে কোনও কথা বলা হয়নি।
এমটিনিউজ২৪.কম/টিটি/পিএস