আন্তর্জাতিক ডেস্ক : নারীদের জীবনযাপনে নানা বিধি-নিষেধ আরোপের দিক থেকে সবার চেয়ে এগিয়ে সৌদি আরব। এ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার শেষ নেই।
তবে কিছুটা শিথিল হতে শুরু করেছে তাদের নিয়ম-কানুন।
সৌদি আরব এই পৃথিবীর একমাত্র দেশ যেখানে নারীদের গাড়ি চালানো নিষিদ্ধ। তবে এখন এ নিয়ম বেশ ঢিলেঢালা করা হয়েছে। মজার বিষয় হলো, সৌদির কোনো আইন বা ইসলামিক নিয়মে নেই নিষেধাজ্ঞা নেই। তাদের কেবল লাইসেন্স দেওয়া হয় না। গাড়ি চালাতে দেখলেও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
অবশ্য সম্প্রতি বেশ কিছু কাজের অনুমতি মিলেছে সৌদি নারীদের। যেমন-
১. গত সপ্তাহেই দারুণ এক অনুমতি মিলেছে তাদের। তারা এখন থেকে রিয়াদের একটি স্টেডিয়ামে প্রবেশ করতে পারবেন।
সৌদি ন্যাশনাল ডে-তে পরিবারের সঙ্গে তারা যেতে পারবেন সেখানে।
২. কাজের জন্য এখন থেকে তাদের আর কোনো অভিভাবকের অনুমতি নিতে হবে না।
৩. এ বছরই সৌদি সরকার মেয়েদের পাবলিক স্কুলে যেকোনো ক্রীড়ায় অংশ নেওয়ার অধিকার দিয়েছে। তারা শারীরিক শিক্ষাও নিতে পারবেন।
৪. এর আগে পরিবারের কোনো অভিভাবকের লিখিত অনুমতি না পেলে কোথাও চাকরি করতে পারতেন না। কিন্তু এ বছরের মে মাস থেকে সেই নিয়মটি রদ করা হয়েছে।
৫. আগে নারীরা বোরকার সঙ্গে ঘোমটা না পরলে রীতিমতো নির্বাসিত করা হতো। কিন্তু এখন কেবল 'আবইয়া' পরেই বাইরে বেরোতে পারবেন।
তবুও অনেক কিছুই এখনো করতে পারেন না তারা। এসব অধরাই রয়ে গেছে। যেমন-
১. পুরুষ অভিভাবকের অনুমতি ব্যতিরেকে নারী এখনো বিয়ে, বিবাহ বিচ্ছেদ, পাসপোর্ট, ভ্রমণ কিংবা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতে পারেন না।
২. পরিবার ছাড়া বাইরের কোনো পুরুষের সঙ্গে সামাজিকভাবে মিশতে পারেন না তারা। এর জন্যে জেলও হতে পারে তাদের।
৩. যেসব রেস্টুরেন্ট পরিবারের জন্য আলাদা বসার ব্যবস্থা নেই, সেখানে কোনো নারী গিয়ে খেতে পারেন না।
৪. শুধু আবইয়া পরার অনুমতি মিলেছে। তবুও তাদের জনসমক্ষে আবইয়ার সঙ্গে ঘোমটা দিতেই হয়। তবে রিয়াদে অনেক নারী তাদের মুখটা দেখাতে শুরু করেছেন।
৫. ইসলামিক নিয়মে সৌদির মুসলমান নারীরা অমুসলিমকে বিয়ে করতে পারেন না। আবার সুন্নি নারীরা কিন্তু শিয়া পুরুষ অথবা নাস্তিককেও বিয়ে করতে পারেন না।
৬. বিশেষ কিছু কাজের অনুমতি সহসা মেলে না। যেমন ঋণ বা লাইসেন্স পাওয়ার আগে অন্তত দুজন পুরুষ তার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে প্রতিষ্ঠানকে অবহিত করবেন।
৭. বিবাহ বিচ্ছেদের ক্ষেত্রে নারীরা তাদের সন্তানের নির্দিষ্ট বয়সের পর আর নিজের কাছে রাখার অনুমতি পান না। ছেলে সন্তান ৭ বছর আর কন্যা সন্তান ৯ বছরে উপনীত হলে তাদের বাবা নিজের কাছে রাখতে পারবেন।
৮. আদালতে শুনানীর ক্ষেত্রেও পুরুষের সম-অধিকার তাদের মেলে না। সেখানে একজন পুরুষের সাক্ষ্য দুজন নারীর সাক্ষ্যের সমান বলে বিবেচনা করা হয়। -- টাইমস অব ইন্ডিয়া
এমটিনিউজ২৪/এম.জে