আন্তর্জাতিক ডেস্ক: সম্প্রতি ‘নিপীড়ক’ রাষ্ট্র মিয়ানমার কোন ধরনের প্রমাণ ছাড়াই একটি গণকবরের সন্ধান দিয়ে দাবি করেছে নিহত মরদেহগুলো হিন্দুদের। তবে নিহত ব্যক্তিরা হিন্দু কিনা এ বিষয়ে তারা কোন প্রমাণ হাজির করেনি। কিংবা তারা কিভাবে সনাক্ত করেছে যে, ওই গণকবরের মানুষগুলো হিন্দু ধর্মাবলম্বী ছিল তার সপক্ষেও তারা কোন যুক্তি দেয়নি।
মংডুর বিভিন্ন গ্রামের গণকবর থেকে ৪৫টি মরদেহ উদ্ধার করে মিয়ানমার দাবি করে এসব হিন্দুকে হত্যা করেছে দ্য আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা)। তবে রোহিঙ্গা মুসলিম যোদ্ধাদের স্বাধীনতাকামী সংগঠন আরসা মিয়ানমার সরকারের এই দাবিকে প্রত্যাখ্যান করেছে। অন্যদিকে রোহিঙ্গা নিপীড়ন নিয়ে কোন উদ্বেগ প্রকাশ না করলেও মিয়ানমার সরকার প্রশ্নবিদ্ধ হিন্দু গণকবর পাওয়ার দাবি করার পরপরই ওই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিজেপি শাসিত ভারত।
এমন পরিস্থিতিতে গত ২৫ সেপ্টেম্বর আরসা’র এক মুখপাত্র বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছে, ‘আমাদের বিরুদ্ধে গ্রামবাসীকে হত্যায় মিয়ানমারের দাবি মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন।’
এছাড়া গত ২৭ সেপ্টেম্বর গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে আরসা মংডুর হিন্দু গণকবর ছাড়াও রাখাইনের সার্বিক পরিস্থিতির বর্ণনা দিয়েছে।
আরসা কমান্ডার ইন চিফ আতা উল্লাহ স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে অবিলম্বে রাখাইনে সংখ্যালঘু মুসলিম রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার সেনাবাহিনীর হত্যা, নির্যাতন এবং অত্যাচারিতদের বিরুদ্ধে পাল্টা দোষারোপ বন্ধ করে ওই এলাকায় শান্তি ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানানো হয়েছে। পাশাপাশি রাখাইনের প্রকৃত ঘটনা বিশ্বমহলকে জানাতে সেখানে মানবাধিকার সংস্থাগুলোকে তদন্তের জন্য পাঠানোর আহ্বান জানিয়েছে আরসা।
রাখাইন থেকে বিতাড়িত, খুন, যুদ্ধাপরাধ, গণহত্যা, জাতিগত নিধন ছাড়াও আরও যারা মানবতাবিরোধী অপরাধ এবং জাতিগত ও ধর্মীয় কারণে মিয়ানমার সেনাবাহিনী অথবা অন্য কোনো গোষ্ঠীর সংঘাতের শিকার হয়েছেন, তাদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছে আরসা। মিয়ানমার সরকারের অমানবিক আচরণের সকল তথ্য পর্যাক্রমে বিবৃতির মাধ্যমে বিস্তারিত প্রকাশ করবে বলেও জানিয়েছে আরসা।
চ্যানেল নিউজ এশিয়ার সাংবাদিক জ্যাক বোর্ডকে আরসা’র ডেপুটি কমান্ডার পরিচয়ে সাক্ষাৎকার দেন মুহাম্মদ রফিক। এটিকে উদাহরণ হিসেবে টেনে আরসা জানিয়েছে, যিনি এই সাক্ষাৎকার দিয়েছেন তিনি ভুয়া ব্যক্তি। ২৯ সেপ্টেম্বর আরসা- দ্য আর্মি নামক টুইটার পেজে দেওয়া বিবৃতিতে জানায়, বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংগঠনের মুখপাত্রের বরাত দিয়ে যেসব খবর প্রকাশ করা হয়েছে, তা সঠিক নয়। যিনি আরসার মুখপাত্র বক্তব্য দিয়েছেন তিনি সাজানো ব্যক্তি বলেও দাবি করা হয়।
বিভিন্ন নামে-বেনামে দেয়া এসব বক্তব্য আরসা’র সদস্যদের নয় বলে দাবি করে, আরসার দেয়া বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এসব বক্তব্যের দায় কোনভাবেই আরসা নিবে না। আরসা কমান্ডার ইন চিফ আতা উল্লাহ ছাড়া বা তার স্বাক্ষর ছাড়া অন্য কোন বিবৃতির দায়ভার আরসা নিবে না বলে জানানো হয়।
এছাড়া আরাকানের বিভিন্ন গ্রামে হত্যা, নির্যাতন ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পেছনে আরসা’র কোনো সদস্য জড়িত নয় বলেও স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে আরসা।
এমটিনিউজ২৪ডটকম/আ শি/এএস