স্পোর্টস ডেস্ক: সম্ভাব্য ৯৮ ওভার খেলা হওয়ার কথা ছিল। বাংলাদেশের হাতে ৭ উইকেট। ম্যাচ বাঁচানোর পথটা কঠিন। সেটা জেনেও এমন অসহায় আত্মসমর্পণের কোনও ব্যাখ্যা খুঁজে পাওয়া যাবে না। যার শেষ হয়েছে ৩৩৩ রানের লজ্জার হারে।
পচেফস্ট্রমের আকাশে ঝকঝকে রোদের দেখা মিলল সকাল থেকেই। ঠিক উল্টোটা বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ে। নিকষকালো আঁধারে ঢেকে যেতে থাকা স্কোরবোর্ডের মাঝে টিমটিমিয়ে জ্বলছে ৯০ রানে গুটিয়ে যাওয়ার বিষণ্ণ সংবাদ।
রোববার চতুর্থ দিনে চা বিরতির আগেই দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করেছিল সাউথ আফ্রিকা। ৭ উইকেটে ২৪৭ রান তুলে। ৩ উইকেটে ৪৯৬ রানে প্রথম ইনিংস ঘোষণা ছিল তাদের। শনিবার গুটিয়ে যাওয়ার সময় ৩২০ রানে পৌঁছায় বাংলাদেশ। বড় ইনিংস গড়তে না পারার মাশুলে গোনার শুরু তখন থেকেই।
পঞ্চম দিনে ৭ উইকেট নিয়ে ৩৭৫ রান তোলার আশা হয়ত চরম স্বপ্নভূক ক্রিকেটপ্রেমীটিও করেনি। তবে ম্যাচ ড্র করার আশাটি অবান্তর ছিল না। সেই আশাটি বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের মাঝে বসত গড়েছিল ছিল কিনা সেটাই এখন কোটি টাকার প্রশ্ন!
নিরাশার এমন দিনে লজ্জায় ডোবার পিঠে একটি বড় লজ্জাও এড়ানো গেছে। নিজেদের সর্বনিম্ন টেস্ট ইনিংস দেখতে হয়নি। ২০০৭ সালে কলম্বো টেস্টে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে নিজেদের সর্বনিম্ন টেস্ট ইনিংসটি খেলেছিল বাংলাদেশ, ৬২ রানের। সোমবার সেটি পেরোনো গেছে। শেষ পর্যন্ত এটাই হয়ত অসহায় আত্মসমর্পণের পিঠে একমাত্র সান্ত্বনা!
সর্বনিম্নের লজ্জা এড়ানো গেলেও সেরা পাঁচ থেকে বেরোনো যায়নি। প্রোটিয়াদের বিপক্ষে করা ৯০ রান এখন বাংলাদেশের পঞ্চম সর্বনিম্ন টেস্ট সংগ্রহ। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৬২, ৮৬ ও ৮৯ ছাড়া ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ঢাকায় ৮৭ রানের লজ্জায় ডোবার ইনিংসগুলো সামনে থাকছে।
সঙ্গী হয়েছে দ্বিতীয় বড় হারের ধাক্কাও। চট্টগ্রাম টেস্টে ২০০৯ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৪৬৫ রানে হেরেছিল বাংলাদেশ। সেটাই দ্বিতীয় সঙ্গী খুঁজে পেল পচেফস্ট্রমের ৩৩৩ রানের হারের পর।
অথচ মরনে মরকেলের চোটে ছিটকে যাওয়ার স্বস্তির সুবাতাস নিয়েই মাঠে নেমেছিল সফরকারীরা। আগেরদিনে আগুন ঝরানো মরকেল নেই। সেটা বুঝতেই দিলেন না কাগিসো রাবাদা। তোপ দাগলেন একের পর এক। ধ্বংসস্তূপে পরিণত হল মুশফিকবাহিনী।
মধ্যাহ্ন বিরতির আগেই গুটিয়ে যাওয়ার পথটা উদ্বোধন করে যান মুশফিকুর রহিম। রাবাদার অফস্টাম্পের বাইরের লাফিয়ে ওঠা বলে খোঁচা দিয়ে ১৬ রানে সাজঘরে অধিনায়ক।
প্রথম ইনিংসে বিপর্যয়ের মুহূর্তে ফিফটি করা মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ পরের আত্মসমর্পণকারী। শর্ট বলে অস্বস্তির সকালে ৯ রানে স্টাম্পে টেনে এনেছেন রাবাদার করা বল।
দ্রুত সিনিয়রদের অনুসরণ করেছেন লিটন দাস, সাব্বির রহমান ও তাসকিন আহমেদ। রাবাদার স্টাম্প বরাবর ছোড়া বলে শট না খেলে এলবিডব্লিউ লিটন (৪)। কেশব মহারাজের সোজা বলে এলবিডব্লিউ সাব্বির (৪)। সেখান থেকে একপ্রান্তে অপরাজিত থাকা মিরাজের ১৫ রানে কেবল সর্বনিমনের লজ্জাই ছাড়ানো গেছে।
এমটিনিউজ২৪ডটকম/আ শি/এএস