আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বর্তমানে ইরান সফরে আছেন তুরস্কের সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল হুলুসি অকার। শিগগিরই প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোগানেরও ইরান সফরের কথা রয়েছে।
তুরস্কের সেনাপ্রধান জেনারেল হুলুসি অকার এবং ইরানের সেনাবাহিনীর প্রধান মেজর জেনারেল মোহাম্মদ বাকেরি তেহরানে এক বৈঠকে দু'দেশের সীমান্তের নিরাপত্তা পরিস্থিতি ও আঞ্চলিক নানা বিষয়ে মতবিনিময় করেছেন।
ইরানের সামরিক ও নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করাই তুর্কি সেনাপ্রধানের তেহরান সফরের প্রধান উদ্দেশ্য। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোগানও সেদেশের সংসদে দেয়া ভাষণে বলেছেন, তিনি আগামী চার অক্টোবর ইরান সফরে আসবেন। প্রেসিডেন্ট এরদোগান কুর্দিস্তানে অনুষ্ঠিত গণভোট এবং কাজাখস্তানে অনুষ্ঠিত সিরিয়া বিষয়ক ত্রিদেশীয় আলোচনা প্রক্রিয়া নিয়ে ইরানের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, দ্বিপক্ষীয় ও আঞ্চলিক নানা ঘটনাবলীতে ইরান ও তুরস্ক আলাদা দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করলেও গুরুত্বপূর্ণ দুটি প্রতিবেশী দেশ হওয়ায় বিভিন্ন জটিল বিষয়ে আঙ্কারা ও তেহরানের মধ্যে সংলাপের কোনো বিকল্প নেই। ইরানের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক গবেষক সিয়ামাক কাকাউ মনে করেন, ‘ইরান ও তুরস্কের সম্পর্ক ঐতিহাসিক এবং মধ্যপ্রাচ্যে এ দেশ দু'টির বিশেষ মর্যাদা রয়েছে। পররাষ্ট্র ক্ষেত্রে ও আঞ্চলিক নানা ইস্যুতে ইরান ও তুরস্ক আলাদা দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করলেও এ দু'দেশের অভিন্ন ঐতিহ্য ও সাংস্কৃতিক বন্ধন এবং অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের কারণে পারস্পরিক সম্পর্ক ও সহযোগিতাকে তারা উপেক্ষা করতে পারে না।’
বিশ্লেষকরা বলছেন, মধ্যপ্রাচ্যের বর্তমান স্পর্শকাতর পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক ও সামরিক পর্যায়ে ইরান ও তুরস্কের সংলাপ প্রক্রিয়া দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নয়নে আরো ভূমিকা রাখবে। ইরানের শহীদ বেহেশতি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আলী বিগদেলি কুর্দিস্তানে অনুষ্ঠিত গণভোটের ব্যাপারে ইরান ও তুরস্কের মধ্যকার বৈঠককে খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি মেহের নিউজকে দেয়া সাক্ষাতকারে বলেছেন, কুর্দিস্তান ইরাক থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলে সেখানে আমেরিকা ঘাঁটি গাড়বে এবং এর ফলে মধ্যপ্রাচ্যের অত্যন্ত স্পর্শকাতর ওই এলাকায় অস্থিতিশীলতা তৈরি হবে।
তুরস্কের রাজনৈতিক বিশ্লেষক আলী কায়েম মাকামিও ইরানের তাসনিম বার্তা সংস্থাকে দেয়া সাক্ষাতকারে বলেছেন, তুরস্কের নিজের জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষার স্বার্থেই ইরানের সহযোগিতার প্রয়োজন হবে। তিনি মধ্যপ্রাচ্যের প্রতিরোধ যোদ্ধাদের সঙ্গে তুরস্কের সমন্বয় বাড়ানোর আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, আঙ্কারার উচিত ইরান, সিরিয়া, হিজবুল্লাহ ও রাশিয়ার সহযোগিতায় ইরাক ও সিরিয়ার খণ্ড-বিখণ্ড হয়ে যাওয়া ঠেকানো। এর অন্যথায় তুরস্কের জাতীয় নিরাপত্তাসহ যাবতীয় স্বার্থ হুমকির মুখে পড়বে।
এমটিনিউজ২৪.কম/টিটি/পিএস