শনিবার, ১৪ অক্টোবর, ২০১৭, ০৯:৪৪:২১

সেলফি তুলতে গিয়ে মৃত্যু: এমন ভয়ংকর জায়গায়ও কী সেলফি তুলতে যায়?

সেলফি তুলতে গিয়ে মৃত্যু:  এমন ভয়ংকর জায়গায়ও কী সেলফি তুলতে যায়?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: সম্প্রতি সেলফি তুলতে গিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ আচরণ বেড়েই চলেছে। আর এর কারণে দিন দিন মৃতের সংখ্যা বাড়ছে বিশ্বে। যুক্তরাজ্যের পূর্ব সাসেক্সের একটি দর্শনীয় স্থান কুকমিয়ের হ্যাভেন। সেখানে বেশ খাড়া ঢাল রয়েছে।

দক্ষিণ কোরিয়ার ২৩ বছর বয়সী এক পর্যটক সেখানে ঢালের খুব কিনারে ছবি তুলতে গিয়ে পা পিছলে পড়ে যান প্রায় দুইশ ফুট নিচে। বেশ কয়েকটি মারাত্মক আঘাতের কারণে তিনি মারা যান।

তিনি যেখান থেকে নিচে পড়ে যান, সে স্থানটি যে বিপজ্জনক, তা সবাই জানে। পর্যাপ্ত পরিমাণে সাইনবোর্ড সেখানে লাগানো রয়েছে বিষয়টি জানিয়ে যে, কিনারে যাওয়া যাবে না। তার পরেও পর্যকরা এ স্থানে ঝুঁকিপূর্ণভাবে খাদের একেবারে কিনারে গিয়ে ছবি তোলে। এ অবস্থায় ঠিক কিভাবে পর্যটকদের অতি আগ্রহে রাশ টেনে ধরা যায়, তা নিয়েই চলছে আলোচনা।

শুধু এই স্থান নয়, আরও বহু স্থানেই পর্যটকরা বিপজ্জনক আচরণ করতে গিয়ে মৃত্যুমুখে পড়ছেন।
সমীক্ষা অনুযায়ী, ২০১৪ সালের মার্চ থেকে শুরু করে সেপ্টেম্বর ২০১৬ সাল পর্যন্ত সেলফি তুলতে গিয়ে ১২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। তার মধ্যে ৭৬টি ঘটনা ভারতে ঘটেছে।

সেলফি তুলতে গিয়ে মৃত্যুর ঘটনার মধ্যে ৬০ শতাংশ ঘটেছে ভারতে। কয়েক বছর আগে, মুম্বাইয়ে আরব সাগরের ধারে দাঁড়িয়ে সেলফি তুলতে গিয়ে পা পিছলে জলে পড়ে যায় তিন যুবতী। তিন যুবতীকে বাঁচাতে গিয়ে প্রাণ দেয় এক যুবক।

২০১৬ সালের জানুয়ারি মাসে চলন্ত ট্রেনের সামনে দাঁড়িয়ে সেলফি তুলতে গিয়ে উত্তরপ্রদেশে মারা গিয়েছিল তিন কলেজ পড়ুয়া। ওই ঘটনায় বেঁচে যাওয়া চতুর্থ সঙ্গী পুলিশকে জানিয়েছিল, চলন্ত ট্রেনের সামনে গিয়ে সেলফি তোলার শখ হয়েছিল তাদের। এছাড়া চলতি বছরের গোড়ার দিকেই বিষাক্ত সাপ নিয়ে সেলফি তুলতে গিয়ে এক ছোবলেই প্রাণ হারান এক ব্যক্তি।

সাম্প্রতিক এক গবেষণা জানাচ্ছে, সেলফির প্রতি অত্যধিক আসক্তিই এই বিপদ ডেকে আনছে। কিন্তু প্রশ্ন উঠতেই পারে, সামান্য ফ্রন্ট ক্যামেরায় ছবি তোলাকে কেন্দ্র করে কেন এত আসক্ত হয়ে পড়ছে মানুষ?

গবেষকরা জানাচ্ছেন, মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি হল, তারা নিজের ক্যামেরায় তোলা ছবির চেয়ে আয়নায় প্রতিফলিত রূপকেই বেশি পছন্দ করে। আমরা আয়নায় যে ছবি দেখি, ফ্রন্ট ক্যামেরাও হুবহু সেই ছবিই তুলে ধরে। সেই জায়গা থেকেই ফ্রন্ট ক্যামেরার প্রতি বেশি আসক্ত মানুষ।

এর সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়া আসার পর যোগ হয়েছে বিভিন্ন মুহূর্তের ছবি সকলের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়ার ট্রেন্ড। তরুণ সমাজের একাংশ বন্ধুবান্ধবদের মন্তব্য এবং প্রশংসা কুড়ানোর জন্য নাওয়াখাওয়া ভুলে বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে সেলফি তোলা নিয়ে মেতে উঠছেন। আর এখন সেলফি তোলার ফলে মৃত্যুর ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় পরিস্থিতি সামলানোর কার্যকর উপায় উদ্ভাবনের দাবি করছেন অনেকেই। সূত্র : ডেইলি মেইল।
এমটিনিউজ২৪ডটকম/আ শি/এএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে