বুধবার, ২৫ অক্টোবর, ২০১৭, ০৯:০১:৪৮

কট্টরপন্থাকে উপড়ে ফেলে উদারনীতির সৌদি আরব চান যুবরাজ

কট্টরপন্থাকে উপড়ে ফেলে উদারনীতির সৌদি আরব চান যুবরাজ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 'কট্টরপন্থা' নয়, বরং ইসলাম ধর্মের প্রশ্নে 'মধ্যপন্থা'য় ফিরতে চায় সৌদি আরব। আরব দুনিয়ায় তো বটেই, গোটা বিশ্বের কাছেও কট্টরপন্থী বলে পরিচিতি সৌদির।

কিন্তু, এ বার সে ছবিটা বদলাতে চাইছে সে দেশের ক্ষমতাসীন আল সৌদ পরিবার। দেশের অর্থনীতির পাশাপাশি সামাজিক ক্ষেত্রেও খোলনলচে বদলাতে চায় তারা।

মঙ্গলবার রাজধানী রিয়াধে একটি বাণিজ্যিক সম্মেলনে বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে চেয়েছিলেন যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমনা। বিনিয়োগকারীদের তো বটেই, সেই সঙ্গে গোটা বিশ্বেরও নজর কাড়লেন তিনি। ওই মঞ্চেই দেশের নয়া 'উদারনীতি'র ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।

যুবরাজের কথায়: "আমরা যেমনটা ছিলাম কেবলমাত্র তা-ই ফিরিয়ে আনছি দেশে। অর্থাত্‍ মধ্যপন্থী ইসলাম ধর্মে। বিশ্বের সমস্ত ধর্মের মানুষের জন্য আমাদের দরজা খোলা।"

যুবরাজের এই ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই স্বতঃস্ফূর্ত করতালিতে ফেটে পড়ে গোটা হল। তিনি আরও বলেন, "কট্টরবাদী ভাবধারায় মেতে নিজেদের জীবনের ৩০টা বছর নষ্ট করব না। বরং দেশ থেকে কট্টরপন্থাকেই উপড়ে ফেলব।"

গত ২০১৫-তে ক্ষমতায় আসেন যুবরাজ সালমান। এর পর থেকেই বিশ্বের দরবারে সৌদির ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারে উদ্যোগী হয়েছেন তিনি। দেশের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে 'ভিশন ২০৩০' নামে একটি নীল-নক্শার সূচনাও করেছেন যুবরাজ।

তারই অঙ্গ হিসেবে লোহিত সমুদ্রের উপকূলবর্তী এলাকায় একটি নতুন শহর গড়ে তোলা হবে। এ ছাড়া, ভারতীয় মুদ্রায় ৩২ লক্ষ ৪৫ হাজার কোটি টাকা বা ৫০ হাজার কোটিরও বেশি ডলার বিনিয়োগ করা হবে। তবে শুধু আর্থিক সংস্কারই নয়, দেশের সামগ্রিক উন্নতির দিকেও জোর দিয়েছেন ৩২ বছরের যুবরাজ।

তবে অনেকেরই মতে, বাণিজ্যিক খাতে সংস্কার হলেও আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্র আমূল পাল্টানো সম্ভব নয়। প্রথমত, কট্টরপন্থীদের প্রবল সমর্থন রয়েছে দেশের রাজ পরিবার আল সৌদের পক্ষে। তার পরিবর্তে কট্টরপন্থীদের বাড়বাড়ন্ত হলেও তা নিয়ে উচ্চবাচ্য করেনি আল সৌদ পরিবার। সেই বৃত্ত ভেঙে বেরিয়ে আসা সম্ভব হবে কি না তা নিয়ে সন্দিহান কামরান বুখারির মতো বহু বিশেষজ্ঞ।

সেন্টার অব গ্লোবাল পলিসি-র সিনিয়র ফেলো তথা অ্যানালিস্ট কামরান বুখারি বলেন, "সামাজিক খোলনলচে বদলানোর মধ্যে ঝুঁকি রয়েছে। সমস্যাটা হল, কট্টরপন্থীদের সমর্থন এ ভাবে ফেরানো যায় না। খানিকটা চলন্ত ট্রেন থেকে অন্য একটা ট্রেনে চড়ার মতোই তা ঝুঁকির। কারণ, এখানকার রাজনৈতিক ভাবে ক্ষমতাধারীরাই ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলির উপর অতিমাত্রায় নির্ভরশীল।"

অনেক সমালোচক আবার যুবরাজের সংস্কারগুলিকে চমক বলেই আখ্যা দিয়েছেন। বেরুটের আমেরিকান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক তথা ফেলো রামি খৌরির দাবি, "সৌদি আরবের এই সংস্কার আসলে পশ্চিমী দেশগুলির মুখ চেয়ে করা হচ্ছে।"
এমটিনিউজ/এসএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে