আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বাবার আক্রমণের হাত থেকে মাকে বাঁচাতে গিয়ে খুন হতে হল নবম শ্রেণির এক ছাত্রীকে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত কিশোরীর নাম পলি দাস (১৪)।
মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার দুপুরে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ থানার গৌরী গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। মেয়েকে খুন করার পরেই প্রদীপ দাস নামে ওই ব্যক্তি বাড়ি থেকে পালিয়েছে।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে তদন্ত শুরু করেছে। গোটা ঘটনায় এলাকায় তুমুল চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। মৃত কিশোরী স্থানীয় মাড়াইকুড়া ইন্দ্রমোহন হাই স্কুলে নবম শ্রেণিতে পড়ে।
এলাকা সূত্রে জানা গিয়েছে, পেশায় ঠিকাশ্রমিক প্রদীপ দাস রায়গঞ্জ ব্লকের গৌরী গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দা। এদিন প্রদীপ দাসের শ্বশুরের শ্রাদ্ধানুষ্ঠান ছিল ওই বাড়িতে। কাজের জন্য প্রদীপ দাস এদিন সকালে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়।
তার স্ত্রী সুচিত্রা দাস ও মেয়ে পলি দাস দু'জনে মিলে বাড়িতে শ্রাদ্ধানুষ্ঠানের আয়োজন করতে শুরু করে। দুপুরে হঠাত্ করেই প্রদীপ দাস বাড়িতে এসে তার স্ত্রীর উপরে চড়াও হয়। ঘরের ভেতরে হাতের কাছে যা পায় তা দিয়েই সে তার স্ত্রীকে পেটাতে শুরু করে।
মায়ের চিত্কার শুনে পলি ছুটে ঘরের ভেতরে আসে। মাকে বাবার হাতে নির্মম ভাবে মার খেতে দেখে সে বাবাকে আটকানোর চেষ্টা করে। বাধা পেয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে স্ত্রীকে ছেড়ে প্রদীপ তার মেয়েকেই পেটাতে শুরু করে।
এই ফাঁকে তার স্ত্রী ঘর থেকে দৌড়ে বাইরে যায় প্রতিবেশীদের ডাকতে। ৫ মিনিটের মধ্যেই এলাকার বাসিন্দারা সাহায্য করতে ছুটে এসে দেখে তার মেয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে পড়ে রয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে।
মৃত কিশোরীর মা সুচিত্রা দাস জানিয়েছেন, "আমার বাবার শ্রাদ্ধ উপলক্ষে এদিন রাতে বাড়িতে হরিনাম কীর্তনের আয়োজন করা হয়েছিল। কীর্তনের দলের সদস্যদের রাতের খাবারের ব্যবস্থা করছিলাম আমি ও আমার মেয়ে মিলে। আমার মেয়ে স্থানীয় মাড়াইকুড়া ইন্দ্রমোহন হাই স্কুলে নবম শ্রেণিতে পড়ে।
দুপুরে ঢুকেই আচমকা আমাকে পেটাতে শুরু করে। তার মার থেকে বাঁচতে আমি ঘরে ঢুকে পড়ি। সে ঘরে ঢুকেও আমাকে লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারতে শুরু করে। আমার চিত্কার শুনে মেয়ে ছুটে এসে আমাকে বাচানোর চেষ্টা করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে ছেড়ে আমার স্বামী মেয়েকে পেটাতে শুরু করে।
আশপাশের লোকজনের সাহায্য নেবার জন্য আমি দৌড়ে ঘর থেকে বেড়িয়ে প্রতিবেশীদের ডেকে অল্প সময়ের ভেতরেই ফিরে এসে দেখি মেয়েকে খুন করে আমার স্বামী পালিয়েছে। আমি পুলিশের কাছে পুরো ঘটনা জানিয়ে অভিযোগ জানিয়েছি। আমার স্বামীর ফাঁসি চাই।''
পুলিশ জানিয়েছে, "মশলা বাটার নোড়া দিয়ে মাথায় আঘাত করেই ওই কিশোরীকে খুন করা হয়েছে। অভিযুক্তর খোঁজে তল্লাশি শুরু করা হয়েছে।''
এমটিনিউজ/এসএস