আন্তর্জাতিক ডেস্ক : হাওয়ার দ্বীপপুঞ্জ ও জুবারা শহর নিয়ে ঊনবিংশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে কাতারের সাথে বাহরাইনের সীমান্ত বিরোধের সূচনা হয়। উপসাগরীয় দেশ দু’টির মধ্যে উত্তেজনা ও রাজনৈতিক অচলাবস্থা তুঙ্গে ওঠার মধ্যে বাহরাইন দাবি করে যে, কাতারি ভূখণ্ড দখল করার অধিকার তার রয়েছে।
গত শনিবার বাহরাইনের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা পরিবেশিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘বাহরাইনের ভূখণ্ডকে জোর করে তার থেকে বিচ্ছিন্ন করা এ ভূখণ্ডের দাবি করার ও কাতারি শাসনের বিরোধিতা করার সব-অধিকার মানামার রয়েছে।’
এ ঐতিহাসিক সীমান্ত বিরোধ নিষ্পত্তির ২০০১ সালে আন্তর্জাতিক আদালতের রায়ের কথা উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, বাহরাইন কোনো ব্যবস্থা নিতে চায় কি না তাতে সে ব্যাপারে স্পষ্ট করে কিছু বলা হয়নি। কাতারের সাথে বাহরাইন, সৌদি আরব, মিসর ও সংযুক্ত আরব আমিরাত কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন ও স্থল, নৌ ও আকাশপথ অবরোধ আরোপ করার পর সৃষ্ট বড় ধরনের সঙ্কটের প্রেক্ষাপটে মানামা এ পদক্ষেপ গ্রহণ করল।
অবরোধ আরোপকারী দেশগুলো অভিযোগ করছে, কাতার ‘সন্ত্রাসী’ গ্রুপগুলোকে সমর্থন করছে, যা কাতার দ্যর্থহীন ভাষায় অস্বীকার করেছে এবং আল-জাজিরা নেটওয়ার্ক বন্ধ করাসহ তাদের অন্যান্য দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে। সম্প্রতি সপ্তাহগুলোতে বাহরাইন কাতারের বিরুদ্ধে হুমকি জোরদার করেছে।
গত সপ্তাহে দেশটি বলে, কাতার অংশ নিলে তারা আসন্ন উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদের (জিসিসি) শীর্ষ বৈঠকে যোগ দেবে না। সাধারণত ডিসেম্বর মাসে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। গত সপ্তাহে বাহরাইন কাতারের নাগরিক ও সেখানে বসবাসকারী কাতারিদের জন্য ভিসার ব্যবস্থা আরোপ করে। কাতার এ পদক্ষেপকে ‘নজিরবিহীন’ বলে অভিহিত করেছে।
সীমান্তবিরোধকাতার ও বাহরাইনের মধ্যে সীমান্ত বিরোধের সূচনা গত শতাব্দীর নব্বইয়ের দশকে। হাওয়ার দ্বীপপুঞ্জ ও জুবারা শহর নিয়ে দেশ দুইটির মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। সৌদি আরবে মধ্যস্থতায় দীর্ঘদিনের সমঝোতা উদ্যোগ ব্যর্থ হওয়ার পর সামরিক সঙ্ঘাত এড়াতে ১৯৯১ সালে কাতার বিষয়টি নিয়ে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) যায়।
২০০১ সালে আইসিজে এ মামলার রায়ে হাওয়ার দ্বীপপুঞ্জ বাহরাইনকে এবং জুবারা ও জানান দ্বীপপুঞ্জ কাতারকে দেয়। ১৬ বছর আগে নিষ্পত্তি হওয়া বিষয়টি নিয়ে গত শনিবার বাহরাইন সরকার এক বিবৃতিতে বলেছে, উপসারগরীয় দেশগুলোর স্বার্থে এতদিন তারা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত অনেক রাষ্ট্রীয় অধিকারের ব্যত্যয় মেনে নিয়েছে।
কাতারের নর্থওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটির রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক জ্যাকিলিন সাগে মিশেল আলজাজিরাকে বলেন, বাহরাইন যদি এ ভূখণ্ডের ওপর তার দাবি আবার জানাতে চায় তাহলে তা হবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সিদ্ধান্তের পরিপন্থী। এটি বাহরাইনের তরফ থেকে এক বিস্ময়কর ও অশুভ পদক্ষেপ।-আল-জাজিরা
এমটিনিউজ২৪.কম/এইচএস/কেএস