আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভয়াবহ ভূমিকম্পে মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে ইরাক ও ইরানের সীমান্ত অঞ্চল। রোববার রিখটার স্কেলে ৭.৩ মাত্রার ভূমিকম্পে সেখানে মাটির সঙ্গে মিশে গেছে অনেক ভবন।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাড়িয়েছে কমপক্ষে ৩৩৬। ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও চাপা পড়ে আছেন বহু মানুষ। আহত হয়েছেন এক হাজারের বেশি। তাদের অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
ফলে নিহতের সংখ্যা আরো অনেক বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচেছ। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় আফটার-শক বা ভূমিকম্প পরবর্তী কম্পনের আশঙ্কায় লোকজনকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। ভবনের আশেপাশে যেতে বারণ করা হয়েছে।
ইরানে ৩ দিনের জাতীয় শোক ঘোষণা করা হয়েছে। এ দেশটির বেশ কতগুলো প্রদেশে তীব্রভাবে অনুভূত হয় কম্পন। তবে সবচেয়ে বেশি আঘাত হানে কারমানশাহ প্রদেশে। ইরাক সীমান্ত থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে কারমানশাহ প্রদেশের শারপোলে জাহাব শহরটি সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এখানেই নিহতের সংখ্যা ৯৭ ছাড়িয়ে গেছে। এ শহরের প্রধান হাসপাতালটিও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে আহত শত শত মানুষকে চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে কর্তৃপক্ষকে।
ওদিকে ইরাকের এক কুর্দি স্বাস্থ্য বিষয়ক কর্মকর্তা বলেছেন, কমপক্ষে চারজন নিহত হয়েছে সেখানে। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৫০ জন। যুক্তরাষ্ট্রের জিওলজিক্যাল সার্ভে বলেছে, তারা ভূমিকম্পের মাত্রা নিরীক্ষণ করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের এ সংস্থা রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ৭.৩ বললেও ইরাক সরকারের আবহাওয়া বিশারদরা বলছেন, কুর্দিস্তানের সুলায়মানিয়া প্রদেশের পেনঞ্জুইন অঞ্চলে এর মাত্রা ছিল ৬.৫। ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৩৪ কিলোমিটার গভীর এ ভূমিকম্পের উৎস।
কম্পনের তীব্রতায় ইরানের ও ইরাকের বহু শহরের বিদ্যুত সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে। দু’দেশেই আফটার-শকের আশঙ্কা রয়েছে। এর ফলে তীব্র ঠান্ডা আবহাওয়ার মধ্যে হাজার হাজার মানুষ ঘর থেকে বেরিয়ে আশ্রয় নিয়েছে রাস্তায়। বিভিন্ন পার্কে।
রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনকে দেয়া সাক্ষাতকারে ইরানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল রেজা রহমানি ফজলি বলেছেন, ভূমিকম্প রাতে আঘাত করায় আক্রান্ত এলাকাগুলোতে হেলিকপ্টার পাঠানো কঠিন হয়ে পড়েছে। অনেক সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে। ফলে প্রত্যন্ত গ্রামগুলোর কি অবস্থা তা নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন।
প্রত্যন্ত অঞ্চলের অনেক বাড়িঘর তৈরি মাটির কাঁটা ইটে। ফলে ভূমিকম্প প্রবণ ইরানে খুব সহজেই এসব বাড়িঘর বিধ্বস্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। ওদিকে জরুরি সেবা ও উদ্ধার তৎপরতায় নামানো হয়েছে ইরানের সেনাবাহিনী।
এমটিনিউজ/এসএস