বুধবার, ১৫ নভেম্বর, ২০১৭, ১০:৩৪:১১

নেলসন ম্যান্ডেলার পরই সম্মানিত ছিলেন রবার্ট মুগাবে

নেলসন ম্যান্ডেলার পরই সম্মানিত ছিলেন রবার্ট মুগাবে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : জিম্বাবুয়ের স্বাধীনতার পর ১৯৮০ সালে ক্ষমতায় আসেন রবার্ট মুগাবে। তারপর থেকে ৩৭ বছর ধরে দেশটির প্রেসিডেন্ট তিনি। ফলে আফ্রিকায় সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্টের তকমা লেগেছে তার নামের সঙ্গে।

আফ্রিকার অবিসংবাদিক নেতা নেলসন ম্যান্ডেলার মতোই স্বাধীনতার একজন সক্রিয় শক্তি হিসেবে প্রথম দিকে তাকে সম্মান করা হতো। কিন্তু তার সেই জনপ্রিয়তা আস্তে আস্তে ম্লান হতে থাকে।

সিএনএনের সাংবাদিক রবিন কারনাউ বলেন, তিনি ক্রমশ ক্ষমতা কুক্ষিগত করা শুরু করেন এবং এক পর্যায়ে তা দ্রুততার সঙ্গে করতে থাকেন।  নৃশংসতা ও ঘুষ গ্রহণের মাধ্যমে তিনি ক্ষমতাকে নিজের হাতে রাখেন।

তার এই কৌশল কাজে দিয়েছে। তিনি হয়েছেন প্রায় চার দশক ধরে দেশটির ক্ষমতায় আসীন। এর মধ্য দিয়ে বিশ্বের অনেক দেশের দীর্ঘ মেয়াদি প্রেসিডেন্টদের মধ্যে তিনি হয়ে ওঠেন এক নম্বর।

রবিন কারনাউ বলেন, জিম্বাবুয়েতে কখনো সামরিক অভ্যুত্থান ঘটেনি। অভ্যুত্থান ঘটার মতো কোনো আলামতও দেখা যায়নি। তাকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয়ার যদি কোনো হুমকি থাকে তাহলে তা ছিল গণতান্ত্রিক বিরোধিতা।

বহু বিশ্লেষক এখন বলছেন, তিনি প্রেসিডেন্ট পদে নিজের স্ত্রী গ্রেসি মুগাবের পথ পরিষ্কার করার জন্য বরখাস্ত করেছেন ভাইস প্রেসিডেন্ট এমারসন মনাঙ্গাগওয়াকে। এটা তার জন্য সবচেয়ে ঝুঁকির কারণ হয়ে উঠেছে।

গ্রেসি মুগাবে তার স্বামীর চেয়ে বয়সে অনেক ছোট (প্রায় ৪২ বছরের ছোট)। তার কোনো জনপ্রিয় সমর্থন নেই। এমন কি স্বাধীনতা যুগের নেতাদের যে সমর্থন থাকার কথা তাও নেই। কিন্তু তা সত্ত্বেও তিনি অস্থির হয়ে পড়েছিলেন।

তিনি জানেন, তার স্বামী মুগাবে মারা যাওয়ার পর তাকে জিম্বাবুয়ের রাজনীতি থেকে ছুড়ে ফেলা হতে পারে। তাই মুগাবে মারা যাওয়ার আগেই তিনি নিজের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক একটি ভিত্তি নিশ্চিত করতে চাইছিলেন।

এমন একটি ভিত্তি চাইছিলেন যাতে তিনি ক্ষমতা দখল করতে পারেন। এ লক্ষ্যেই ভাইস প্রেসিডেন্ট এমারসন মনাঙ্গাগওয়াকে বরখাস্ত করেন রবার্ট মুগাবে। এর পরিণাম খারাপ হবে বলে সাবধান করেছিলেন সেনাপ্রধান চিয়েঙ্গা।

তিনি সোমবার সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন, পরিস্থিতির উন্নতি না হলে তারা ক্ষমতায় হস্তক্ষেপ করতে বাধ্য হবেন। তার এ হুমকির জবাবে সরাসরি কোনো কথা বলেন নি রবার্ট মুগাবে ও ফার্স্টলেডি গ্রেসি মুগাবে।

কিন্তু গ্রেসি মুগাবের ঘনিষ্ঠ একটি মিত্র ক্ষমতাসীন জানু-পিএফ ইয়ুথ লিগ সেনাপ্রধানের বক্তব্যে কড়া সমালোচনা করে। তারা বলে, দেশের রাজনৈতিক ইস্যুতে অন্যায়ভাবে কথা বলছে সেনাবাহিনী।

এ দলটির সেক্রেটারি কুদজাই চিপাঙ্গা মঙ্গলবার বলেন, এমন বিদ্রোহ হলে আমরা তার বিপক্ষে দাঁড়াবো। আমাদের নেতা ও আমাদের প্রেসিডেন্ট আমাদের কাছে একটি আদর্শ। তার জন্য আমরা বেঁচে আছি। এমন কি আমরা মৃত্যুকে মেনে নিতেও রাজি আছি।
এমটিনিউজ/এসএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে