আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সৌদি আরবের পরবর্তী বাদশাহ উত্তরাধীকারী যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসকে বলেছেন, তাকে অবশ্যই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রস্তাবিত নতুন ইসরাইল-ফিলিস্তিন শান্তি চুক্তি মেনে নিতে হবে আর নয়তো পদত্যাগ করতে হবে।
গত সপ্তাহে মাহমুদ আব্বাসকে সৌদি আরবে ডেকে নিয়ে গিয়ে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান এই কথাগুলো বলেছেন বলে জানা যায়। এ খবর জানিয়েছে মিডল ইস্ট মনিটর।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের মেয়ে জামাতা ও মার্কিন প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা জেয়ার্ড কুশনার সৌদি আরব সফরে আসার ঘোষণা দেওয়ার কয়েকদিনের মধ্যেই আব্বাসকে এই হুঁশিয়ারি দিলেন মোহাম্মদ বিন সালমান।
কুশনার ও সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান মিলে একটি পরিকল্পনা তৈরি করেছেন যাতে আব্বাসের কিছুই বলার নেই। ২০০২ সালে সৌদি আরব সম্পর্ক স্বাভাবিক করার প্রস্তাব দিয়েছিল ইসরায়েলকে।
তবে শর্ত ছিল ইসরায়েলকে দুই রাষ্ট্রের প্রস্তাব মেনে নিতে হবে এবং আলাদা ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠন করতে দিতে হবে। কিন্তু ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনজামিন নেতানিয়াহু সহ ইসরায়েলের অনেক ইহুদিবাদী নেতা তা প্রত্যাখ্যান করেন।
এবার আব্বাসকে কী ধরনের শান্তি চুক্তির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে তা এখনো পরিষ্কার নয়। তবে বিন সালমান যেভাবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে জোট বেধেছেন তাতে ফিলিস্তিনিরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। কারণ ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ইতিহাসের সবচেয়ে বেশি ইসরাইলঘেষা মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলা হচ্ছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্প তার মেয়ে জামাই কুশনারকে দিয়ে ওই চুক্তিটি তৈরি করছেন বলে জানা গেছে।
অথচ এই কুশনারই ইহুদী বসতি বাড়াতে অর্থ সহায়তা দিয়েছেন। আর তার পরিবারও বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর ঘনিষ্ঠ বন্ধু।
এছাড়া আব্বাসকে হামাসের সঙ্গেও কোনো ধরনের সমঝোতা না করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এর ফলে ফিলিস্তিনের প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক পক্ষের মধ্যে যে সমঝোতার প্রক্রিয়া চলছিল তাও ভেঙে পড়তে পারে।
সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইসরায়েল এবং যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্যের জন্য একটি নতুন রাজনৈতিক পরিকল্পনা করেছে। ওই পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই এই নতুন ইসরায়েল-ফিলিস্তিন শান্তি চুক্তির প্রস্তাব করা হচ্ছে।
ওই পরিকল্পনায় সৌদি আরব সহ উপসাগরীয় দেশগুলোর রাজতন্ত্রের প্রতি পূর্ণ মার্কিন সমর্থন, ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি পুনরায় পর্যালোচনা করার কথাও বলা হয়েছে। এই পরিকল্পনা তৈরি করেছে ট্রাম্পের ইসরাইলঘেষা মার্কিন প্রশাসন। আর সৌদি আরবও এতে পূর্ণ সমর্থন দিচ্ছে।
এর ফলে ফিলিস্তিনিদের মনে এখন ভয় ঢুকে গেছে, তাদের ফিলিস্তিন রাষ্ট্র হয়তো এবার পুরোপুরি বিলুপ্ত করে দেওয়া হতে পারে। আর এটাই চান ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু সহ আরো অনেক ইহুদিবাদীরা।
এমটিনিউজ/এসএস