প্যারিসে জঙ্গি হামলা, শরণার্থীদের আশ্রয় নিয়ে আশঙ্কা!
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : শার্লি এবদোর পর ফের আইএস জঙ্গিদের হামলায় রক্তাক্ত ফ্রান্স। জানুয়ারি মাসে শার্লি এবদোর অফিসে সন্ত্রাসবাদী হামলায় হতের সংখ্যা ছিল ১২। শুক্রবারের হামলা সেই নৃশংসতাকে কয়েক মাইল পিছনে ফেলে দিল।
জানুয়ারির ওই ঘটনার পর থেকেই চূড়ান্ত সতর্কতা জারি ছিল ফ্রান্সে। জঙ্গিরা ঘোষণা করেছিল, ফের আক্রমণের নিশানায় রাখা হবে এই দেশকে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন কনসার্ট হলে হত্যালীলা চালানোর সময় জঙ্গিরা বার বার বলছিল, ‘‘তোমরা আমাদের সিরিয়ায় যে ভাবে হামলা চালাচ্ছ, তার জন্য তো এ মূল্য দিতেই হবে!’’ আইএস এই হামলার দায় স্বীকার করে নেওয়ার পর পরিষ্কার হয়ে যায়, মধ্য প্রাচ্যের গৃহযুদ্ধে প্রথম বিশ্বের সক্রিয় অংশগ্রহণে খেপে উঠেছে জঙ্গিরা। আরও বেপোরায়া নৃশংস হামলার পথ বেছে নিয়েছে তারা।
এত নিরাপত্তার কড়াকড়ি থাকা সত্ত্বেও ফ্রান্স কেন বার বার জঙ্গি হামলার নিশানায়? এমনকী আগাম হুমকি দিয়েই?
তথ্য বলছে, দিনে দিনে গোটা বিশ্বেই আইএস-এ যোগ দেওয়ার প্রবণতা বাড়ছে। পশ্চিম এশিয়া, মূলত আরব থেকে প্রায় ২০ থেকে ৩০ হাজার যুবক যোগ দিয়েছে এই জঙ্গি গোষ্ঠীতে। ইউরোপেও বাড়ছে তাদের প্রভাব। ৫ থেকে ৬ হাজার যুবক ইতিমধ্যেই আইএস-এ নাম লিখিয়েছে। ফরাসি পার্লামেন্টের অন্তর্তদন্তের রিপোর্ট বলছে, এর মধ্যে অর্ধেকের বেশিই ফ্রান্সের বাসিন্দা।
সংবাদ সংস্থা এএফপি জানাচ্ছে, ফ্রেঞ্চ ইন্টেলিজেন্স-এর দাবি প্রায় দেড় হাজার ফরাসি নাগরিক এই সিরিয়ান জঙ্গি গোষ্ঠীর সঙ্গে প্রত্যক্ষ ভাবে জড়িয়ে। আরও প্রায় ৭ হাজার জন কিছু দিনের মধ্যেই যোগ দিতে পারে ওই সংগঠনে। তবে, ইউরোপের অন্যান্য বৃহৎ শক্তিগুলির তুলনায় ফ্রান্সে আইএস-এর প্রভাব বাড়ছে তা স্পষ্ট হয়ে উঠছে।
পুলিস সূত্রে খবর, মৃত এক জঙ্গির দেহের পাশ থেকে একটি সিরিয়ার পাসপোর্ট উদ্ধার হয়েছে। গ্রিস থেকে গত অক্টোবরে সে শরণার্থী হিসেবে প্যারিসে ঢুকেছিল বলে ওই সূত্রের দাবি। অন্য জঙ্গিরা আদতে বহিরাগত নাকি ফরাসি নাগরিক, সে বিষয়ে এখনও পর্যন্ত স্পষ্ট ভাবে কিছুই জানা যায়নি। তবে, জঙ্গি হামলার ঘটনায় শরণার্থী প্রসঙ্গ এসে পড়ায় অনেকেই আশঙ্কা প্রকাশ করছেন। যে সমস্ত দেশ শরণার্থীদের আশ্রয় দিতে আপত্তি করেছিল, তারা এই জঙ্গি হামলার ঘটনাকে ভবিষ্যতে আশ্রয় দিতে না চাওয়ার অজুহাত হিসেবে তুলে ধরবে না তো! প্রশ্নটা উঠছে।
এ দিনের নারকীয় হামলার পর ফরাসি প্রেসিডেন্ট ওঁলা ঘোষণা করেছেন, আইএস দমনে প্রয়োজনীয় সব রকম ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অন্য দিকে, আইএস-এর তরফে পাল্টা হুঙ্কার দিয়ে বলা হয়েছে, ‘‘ফ্রান্সের মতো যে সমস্ত দেশ আমাদের প্রফেটকে অপমান করেছ, তোমাদের জন্য আরও অনেক মৃত্যুর গন্ধ অপেক্ষা করছে।’’
১৫ নভেম্বর,২০১৫/এমটি নিউজ২৪/এসবি/এসএস